প্রকাশ: শুক্রবার, ২২ জানুয়ারি, ২০২১, ১২:২৬ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
শ্রীনগরে একটি এলজিইডি রাস্তার সংস্কার কাজে ৪ বছর পেরিয়ে গেলেও কার্পেটিং কাজ এখনও সম্পন্ন হয়নি। উপজেলার কুকুটিয়া ইউনিয়নের বিবন্দী বাজারের পূর্ব পাশে আবুল মেম্বারের বাড়ির পুকুর পাড় থেকে পাঁচলদিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় হয়ে কাজীপাড়া লৌহজং কলেজের উপাধ্যক্ষ শহিদুল সিকদারের বাড়ি পাকা সড়ক পর্যন্ত প্রায় ২ কিলোমিটার কাঁচা রাস্তা পাকা করণের নামে খোড়াখুড়ি করে ফেলে রাখে মের্সাস মিজান এন্ড ব্রাদাস ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের কর্ণধার মিজান শেখ। সংস্কার কাজের নামে খোড়াখুঁড়ি করে বেহাল করে ফেলে রাখা হয়েছে। এতে করে ওই এলাকার ১০টি গ্রামের প্রায় ৪০ হাজার বসবাসকারী মানুষের একমাত্র যোগাযোগ মাধ্যম রাস্তায় চলাচলে চরম ভোগান্তির সৃষ্টি হচ্ছে। বিশেষ করে এই অঞ্চলের আলু, বোরো ধান ও সবজি চাষীরা কৃষি উপকরণ ও উৎপাদীত কৃষি পণ্য নিয়ে বিপাকে পরছেন। রাস্তা সংস্কারের অভাবে কয়েকবছর যাবত তারা দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
সরেজমিনে গিয়ে ওই রাস্তার বেহাল চিত্র লক্ষ্য করা গেছে। পাকাকরণের লক্ষ্যে রাস্তা খোড়াখুঁড়ি করে রাখা হয়েছে। দেখা গেছে কোথাও কোথাও সামান্য ইটের কংকীট ফেলা হয়েছে। আবার কোথাও রাস্তার লেভেল ঠিক নেই। বেশীর ভাগ রাস্তায় বালু উঠে যাতায়াতের অনুপযোগী হয়ে পরেছে। এতে করে মালবাহী পিকআপ, অটোরিক্সা ও কৃষি পণ্যসহ অন্যান্য যানবাহন চলাচল করতে পারছেনা। দেখা গেছে, বালুতে গাড়ীর চাকা দেবে যাচ্ছে।
স্থানীয়রা জানায়, যোগাযোগের বিকল্প কোনও মাধ্যম না থাকায় এখান দিয়েই অনেকটা বাধ্য হয়ে কৃষি উপকরণ, নির্মাণ সামগ্রীসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় সব গাড়ীতে করে আসতে হচ্ছে। এতে করে চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন তারা।
স্থানীয়রা অভিযোগকরে বলেন, মিজান বেজগাঁওয়ের প্রভাব খাঁটিয়ে কাজে গরীমশি করছে। এর আগে মিজানের লোকজন কাজের অনিয়মের বিষয়ে কথা বললে স্থানীয়দের মারপিট করে।
এলাকাবাসী আরো জানায়, উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম কাননের ছোট ভাই মিজান কারও কথা শুনেননা। দুর্ভোগ লাঘবে রাস্তাটি দ্রুত পাকা করণের কাজ সম্পন্ন করার লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সুদৃষ্টি কামনা করেন এলাকাবাসী।
খোঁজ খবর নিয়ে জানা গেছে, গত ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে ঠিকাদার মিজান রাস্তায় কাজ শুরু করে। গত ২৪/০৯/২০১৯ তারিখে কাজের মেয়াদকাল শেষ হলে পুনরায় আগামী ০২/০৯/২০২১ তারিখ পর্যন্ত কাজের মেয়াদ বাড়ান। এর মধ্যে কাজে কোনও অগ্রগতি না থাকায় উপজেলা (এলজিইডি) প্রকৌশলী অফিস ৫ বার ও জেলা এক্সচেঞ্জ থেকে ১ বার তাগিদ দেওয়া হয়েছে। অপরদিকে ঢাকার পিডি অফিস থেকেও কাজের অগ্রগতি সমন্ধে সংশ্লিষ্টগণ পরির্দশন করে গেছেন বলে জানা যায়। একাজের তদারকির দায়িত্বে আছেন সহকারী প্রকৌশলী মো. মমিন। সংশ্লিষ্ট অফিসের কর্মকর্তাদের বারে বার তাগিদের পরেও রহস্যজনক কারণে কাজে কোনও অগ্রগতি নেই! এ বিষয়ে জনমনে প্রশ্ন উঠেছে। ঠিকাদার মিজানের খুঁটির জোড় কোথায়?
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ইউপি সদস্য বলেন, ১ কোটি ৭ লাখ টাকা ব্যয়ে নামে মাত্র রাস্তা কাজ করা হচ্ছে।
এর আগে গত বছর শ্রীনগর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ওয়াহিদুর রহমান জিঠুকে সরেজমিনে কাজে অনিয়মের বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে লাইভে এসে তুলে ধরতে দেখা গেছে।
এ ব্যাপারে শ্রীনগর উপজেলা এলজিইডি প্রকৌশলী মো. রাজিউল্লাহ বলেন, ঠিকাদারের কাজে অগ্রগতি না থাকায় তাকে বার বার তাগিদ দেওয়া হচ্ছে।
এ বিষয়ে জানতে ঠিকাদার মো. মিজান শেখের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিভিন্ন সমস্যার কারণে রাস্তার কাজ করতে পারছিনা। এর মধ্যে অন্যতম কারণ হলো মালবাহী গাড়ী যাওয়ার রাস্তা নেই। আগামী ফেব্রুয়ারিতে রাস্তার কাজ শুরু করতে পারবো।