#শেখ হাসিনার বিচক্ষণতার কারণেই আমরা অনেক দেশের আগেই ভ্যাকসিন পেয়েছি: পঙ্কজ দেবনাথ।
#করোনাকালীন সময়ে প্রত্যাশার চাইতেও বেশি সাফল্য দেখিয়েছে বাংলাদেশ: ড. মোঃ হারুন-উর-রশিদ আসকারী।
#দেশের উন্নয়নের বিরুদ্ধে যারা কথা বলে তাদেরকে কঠোর হস্তে দমন করতে হবে: হুমায়ুন কবির।
আমাদের জননেত্রী শেখ হাসিনা তার স্মার্ট ডিপ্লোম্যাসি দিয়ে, তার বিজ্ঞ দক্ষতা ও বিচক্ষণতা দিয়ে আমাদের দীর্ঘ দিনের প্রতিবেশি ভারত থেকে তিনি টিকা আনতে সক্ষম হয়েছেন। করোনাকালীন সময়ে বিশ্বের যে ২২টি দেশের জিডিপির পজিটিভ গ্রোথ হয়েছে বাংলাদেশ সেখানে অন্যতম। গত এক যুগে শেখ হাসিনার শাসনামলে বাংলাদেশের এ বিস্ময়কর অর্থনৈতিক উত্থানে মূল ভূমিকা পালন করছে। করোনাকালেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার বলিষ্ঠ নেতৃত্বে দেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতি অব্যাহত রেখেছে। তাইতো বিশ্বনেতারা আজ শেখ হাসিনার প্রশংসায় পঞ্চমুখ।
দৈনিক ভোরের পাতার নিয়মিত আয়োজন ভোরের পাতা সংলাপের ২২৬তম পর্বে এসব কথা বলেন আলোচকরা। বৃহস্পতিবার (২১ জানুয়ারি) আলোচক হিসাবে উপস্থিত ছিলেন সংসদ সদস্য এবং বাংলাদেশ আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক পঙ্কজ দেবনাথ, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় কুষ্টিয়া এর সাবেক উপাচার্য এবং লেখক ও গবেষক ড. মোঃ হারুন-উর-রশিদ আসকারী, আওয়ামী লীগের সভাপতি হুমায়ুন কবির ফিনল্যান্ড। দৈনিক ভোরের পাতা সম্পাদক ও প্রকাশক ড. কাজী এরতেজা হাসানের পরিকল্পনা ও নির্দেশনায় অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন সাবেক তথ্য সচিব নাসির উদ্দিন আহমেদ।
পঙ্কজ দেবনাথ বলেন, যতক্ষণ মমতাময়ী শেখ হাসিনার হাতে দেশ ততক্ষণ পথ হারাবে না বাংলাদেশ। আজকে এই করোনা মুহূর্তে যেকোনো দেশের সরকার প্রধানের প্রথম দায়িত্ব হচ্ছে যেকোনো মূল্যে করোনা ভ্যাকসিন তার নিজের দেশে আনা এবং নিজের দেশের নাগরিকদের মাঝে এটা সুষ্ঠ বণ্টন করা। পৃথিবীর তাবৎ দুনিয়ার অনেক শক্তিশালী দেশ কিন্তু এটা এখন পর্যন্ত পারেনি কিন্তু আমাদের জননেত্রী শেখ হাসিনা তার স্মার্ট ডিপ্লোম্যাসি দিয়ে, তার বিজ্ঞ দক্ষতা ও বিচক্ষণতা দিয়ে তার মাধ্যমে আমাদের দীর্ঘ দিনের প্রতিবেশি ভারত থেকে তিনি টিকা আনতে সক্ষম হয়েছেন। আমি এই কথা বলার সুযোগে ভারতের জনগণ, ভারতের প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী, সে দেশের চিকিৎসক, গবেষক, এবং টিকা উৎপাদনের ক্ষেত্রে জড়িত সকলকে অশেষ ধন্যবাদ জানাচ্ছি। ভারত তার ভালোবাসার নিদর্শন দেখিয়েছে। আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার সরকারের উপরে বিশ্বাস আছে বলেই তারা এই সাহায্যটি উপহার স্বরূপ পাঠিয়েছে। আজকে শেখ হাসিনার বিশ্বাসযোগ্য ও যোগ্য নেতৃত্বের কারণে দেশে প্রাণঘাতী ভাইরাসের বিস্তার নিয়ন্ত্রণে রাখতে সরকার সফল হয়েছে। সমগ্র বিশ্বের মতো, কোভিড-১৯ মহামারির বিপর্যয়মূলক প্রভাবের কারণে বাংলাদেশের মানুষও কিছুটা খারাপ সময় অতিবাহিত করছে। আমাদের দেশ কোভিড-১৯ মহামারির প্রথম পর্যায়ে ততটা ধ্বংসের মুখোমুখি হয়নি। আজকে এই করোনা কালীন সময়ে স্বপ্নের পদ্মা সেতু এখন দৃশ্যমান বাস্তবতা। বাংলাদেশ যে অসম্ভবকে সম্ভব করতে পারে তার প্রমাণ পদ্মা সেতু। পদ্মা সেতু বাংলাদেশের আর্থিক সক্ষমতা ও দৃঢ় সংকল্প আমাদেরকে আজ ভাবিয়ে তুলে কেমন বিচক্ষণ ও সাহসী নেতৃত্বের মধ্যে আমরা আছি। দেশের অর্থনীতিতে এ সেতু রাখবে বিরাট ভূমিকা- একই কারণে শেখ হাসিনার জনপ্রিয়তা এবং তার সরকারের ভাবমূর্তি বৃদ্ধি পাবে বহুগুণ। গত দুই দশকের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও সামাজিক উন্নয়নের যেকোনো সূচকের বিচারে বাংলাদেশের অভূতপূর্ব অগ্রগতি হয়েছে। করোনাকালীন সময়ে বিশ্বের যে ২২টি দেশের জিডিপির পজিটিভ গ্রোথ হয়েছে বাংলাদেশ সেখানে অন্যতম। মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গ প্রকাশিত, কোভিড নিয়ন্ত্রণে কার্যকর ভূমিকা রাখা দেশগুলোর তালিকায় 'কোভিড রেজিলিয়েন্স র্যাংকিং', এ বিশ্বে বাংলাদেশ ২০তম এবং দক্ষিণ এশিয়ায় শীর্ষে। বৈশ্বিক মন্দার এই সময়ে শেখ হাসিনার ক্যারিশমাটিক লিডারশীপ বাংলাদেশকে টেকসই অর্থনীতির দেশে পরিণত করতে কার্যকর ভূমিকা রাখছে।
ড. মোঃ হারুন-উর-রশিদ আসকারী বলেন, আমি প্রথমেই ধন্যবাদ জানাই ভোরের পাতাকে এই জন্য যে করোনার এই মহা দুর্যোগে তারা এতো সুন্দর একটি প্রোগ্রাম ধারাবাহিকভাবে এতো সুন্দর করে আজ পর্যন্ত চালিয়ে যাচ্ছে। আজকের বিষয় পথ হারাবে না বাংলাদেশ। আমি এটাকে তিনটা বিষয়ে ভাগ করে আলোচনা করতে চাচ্ছি। প্রথমত বাংলাদেশ পথ হারায়নি আমাদের জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে যে ২৩ বছর পাকিস্তান ঔপনিবেশিক আমলে যিনি বাংলাদেশের সাড়ে ৭ কোটি বাঙালিকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন এবং তারই নেতৃত্বে দীর্ঘ ২৩ বছর সংগ্রামের পরে ১৯৭১ সালে একটি রক্তজয়ী যুদ্ধের পর আমরা স্বাধীনতা অর্জন করি। আমরা আমাদের ঐতিহ্য ছিনিয়ে আনি। ১৭৫৭ সালের যে পলাশীর যুদ্ধের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ যে স্বাধীনতা হারিয়েছিল তার প্রায় ২০০ বছর পরে আমরা আমাদের জাতির পিতার নেতৃত্বে আমরা এই বাংলাদেশের স্বাধীনতার সূর্য পুনরায় ফিরিয়ে আনি। সুতরাং জাতির পিতার নেতৃত্বে আমরা পথ হারায়নি এবং এই রকম একটি নেতৃত্ব তখন আমরা না পেতাম তাহলে সেই দীর্ঘ ২৩ বছরে তাদের যথেষ্ট সুযোগ হয়েছিল আমাদের এই পথ থেকে ছিটকে ফেলার জন্য। কিন্তু জাতির পিতার তার দক্ষ ও বলিষ্ঠ নেতৃত্বে এবং জীবন বাজি রেখে এই পথ ঠিক রেখেছিলেন এবং আমাদের স্বাধীনতা ছিনিয়ে এনেছিলেন। দ্বিতীয়ত, এই পথ আবার হারাতে বসেছিল আমাদের জাতির পিতাকে ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট নির্মমভাবে সপরিবারে হত্যাকাণ্ডের মধ্য দিয়ে। আবার পথ হারানোর জায়গা থেকে দীর্ঘ ২১ বছর পর জাতির পিতার রক্ত ও রাজনীতির সুযোগ্য অধিকারিণী জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সেই পথে আবার পুনরায় ফিরে আসে বাংলাদেশ। এই জন্য আজকে যে বিষয়, পথ হারাবে না বাংলাদেশ যার মূল প্রতিপাদ্য যে যতদিন শেখ হাসিনার হাতে আছে দেশ ততদিন পথ হারাবে না বাংলাদেশ। এই বক্তব্যের সাথে আমি সম্পূর্ণ একমত। আমরা জানি যে এই যে করোনা মহামারী অন্যান্য দেশে যে রকম প্রভাব ফেলেছে, বাংলাদেশেও কিন্তু এর ব্যতিক্রম নয়। করোনার কারণে সারা বিশ্বের অর্থনীতি বিপর্যস্ত, সেই ঢেউ বাংলাদেশেও লেগেছে। বাংলাদেশেও কিন্তু এর প্রভাব পড়েছে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দিক-নির্দেশনায় বাংলাদেশ বেশ ভালোভাবেই করোনাকে সামাল দিতে সক্ষম হয়েছে। তার নেতৃত্বে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা, এমজিডি অর্জন, এসডিজি বাস্তবায়নসহ শিক্ষা, স্বাস্থ্য, লিঙ্গসমতা, কৃষি দারিদ্রসীমা হ্রাস, গড় আয়ু বৃদ্ধি, রফতানিমুখী শিল্পায়ন এবং বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলে পোশাক শিল্প, ঔষধ শিল্প, রফতানি আয় বৃদ্ধিসহ নানান অর্থনৈতিক সূচক বৃদ্ধি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দূরদৃষ্টি ও পরিশ্রমের ফসল। এছাড়া চলমান রয়েছে- পদ্মা সেতু, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র, পায়রা গভীর সমুদ্রবন্দর, ঢাকা মেট্রোরেলসহ দেশের মেগা প্রকল্পগুলো। গত এক যুগে শেখ হাসিনার শাসনামলে বাংলাদেশের এ বিস্ময়কর অর্থনৈতিক উত্থানে মূল ভূমিকা পালন করছে। করোনাকালেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার বলিষ্ঠ নেতৃত্বে দেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতি অব্যাহত রেখেছে।
হুমায়ুন কবির বলেন, ২০২০ সাল জুড়েই সারা পৃথিবীতে মহামারি করোনাভাইরাস তাণ্ডব চালিয়েছে। এর ছোবল থেকে বাদ যায়নি বাংলাদেশও। চীনে করোনাভাইরাস আবির্ভাবের পর থেকেই প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা করোনা মোকাবিলায় কাজ শুরু করেন। আমাদের জননেত্রী শেখ হাসিনা ২১টি প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছেন এই কারণে যে বাংলাদেশের কোন মানুষ যাতে না খেয়ে না কাজ করে কোনভাবেই কোন কষ্ট না পায়। গার্মেন্টসের শ্রমিকরা, দিনমজুররা কোন ভাবেই কষ্ট না পায় সেখানে তিনি খেয়াল রেখেছেন। যার কল্যাণে বাংলাদেশ করোনাভাইরাস মোকাবিলায় দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে প্রথম এবং বিশ্বে ২০তম দেশ হিসেবে সফল হয়েছে। শুধু তাই নয়, এই করোনাভাইরাসের মধ্যেও অর্থনীতি চাকা থেমে থাকেনি। বরং এই খাতে বাংলাদেশ সফল হয়েছে। জনগণের প্রতি আস্থা রেখে তিনি এই সকল কাজ সম্ভব করতে পেরেছেন। আজকে এই যে করোনা ভ্যাকসিন বাংলাদেশে এসেছে এটার পিছনেও কিন্তু সরকারের ব্যাপক ভূমিকা রয়েছে। কিন্তু দেখেন, কিছু কুচক্রী রাজনৈতিক দলেরা আজকেও এই ভ্যাকসিন দেশে আনা নিয়ে সমালোচনা করে যাচ্ছেন। কৃষিপ্রধান বাংলাদেশ কৃষকদের সকল কৃষি উপকরণ সহজলভ্য করা ও ভর্তুকি বাড়ানোয় গুরুত্ব দেওয়ার ক্ষেত্রে শেখ হাসিনা সরকার বাংলাদেশকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করে তুলেছে। বাংলাদেশের গার্মেন্টস শিল্পের অগ্রগতির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র মোকাবেলায় ভূমিকা রেখে আন্তর্জাতিক বাজারে আরও আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছে বাংলাদেশ। শিল্প খাতে সমৃদ্ধি সম্ভাবনা বৃদ্ধি করতে শ্রমিকদের বেতন ভাতা, নিরাপত্তা বৃদ্ধিসহ কাঁচামাল সহজলভ্য করতে কাজ করেছে সরকার। নতুন শিল্প উদ্যোক্তাদের স্বল্প সুদে ঋণের ব্যবস্থা সুবিধা নিশ্চিতকরণের মাধ্যমে বাণিজ্যে ক্ষেত্রে ব্যাপক সফলতা অর্জন করেছে। করোনাকালীন সময়ে চিকিৎসা খাতে প্রয়োজনীয়তার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ করে অধিক চিকিৎসক নিয়োগ, আধুনিক চিকিৎসা ব্যবস্থা সর্বস্তরে সকলের সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করছে। জননেত্রী শেখ হাসিনা নিজেই তার সকল চিকিৎসা দেশে নেওয়ার ব্যাপারে অঙ্গীকারবদ্ধ হয়েছেন ও নিরাপত্তা বোধ করেছেন। করোনার ভয়াল থাবা যখন গোটা জাতিকে ভাবিয়ে তুলেছে ঠিক তখন দেশের বিভিন্ন জেলা ভয়াবহ বন্যায় আক্রান্ত হয়। বন্যা, করোনা ও আম্পানের কারণে অনেকে আশঙ্কা করেছিলেন যে, বাংলাদেশ একটি বড় ধরনের দুর্ভিক্ষের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে এবং এ অবস্থা সরকার হয়তো সামাল দিতে পারবে না। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী সিদ্ধান্তে বাংলাদেশকে সে অবস্থায় উপনীত হতে হয়নি। কিন্তু আজ বিদেশে বসে কিছু অবসরপ্রাপ্ত মেজররা বাংলাদেশের উন্নয়ন নিয়ে নেগেটিভ প্রোপাগান্ডা চালাচ্ছে। তারা সব সময় এই ষড়যন্ত্র করে আসছ এবং করে যাচ্ছে। আমি আজ এই ভোরের পাতা সংলাপের মাধ্যমে সরকারের কাছে আবেদন করব এদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য। বাংলাদেশের উন্নয়নকে এই বিএনপি-জামায়াত নামক রাজনৈতিক দলেরা কখনোই ভালো চোখে দেখে না। বিএনপি দেশের উন্নয়নে কখনোই খুশি ছিল না এবং থাকবেও না বিশেষ করে আওয়ামী লীগের সরকারের অধীনে সৃষ্ট উন্নয়ন গুলোকে।