প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ২১ জানুয়ারি, ২০২১, ৩:৪৪ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
প্রতিটি মৌ খামারে শতাধিক বক্স। মৌমাছিরা ফুলে ফুলে ঘুরে মধু নিয়ে এ বাক্সেই জমায়। আর সেই মধু সংগ্রহ করে বিক্রি করে মৌচাষিরা।
সিংগাইর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় সরিষা ক্ষেতের পাশে এভাবেই মৌ বক্স বসিয়ে মধু সংগ্রহ করছেন নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলা থেকে আগত মৌ-খামারিরা। প্রতিবছর এ মৌসুমে মৌ-বক্স নিয়ে চলে আসেন তারা।
এ বছর ৭-৮ টি দল উপজেলার বিভিন্ন সরিষা আবাদ এলাকায় মৌ-বক্স বসিয়েছেন। পৌর এলাকার কাশিমনগর চকে গিয়ে দেখা যায়. আদর্শ মৌ খামার নামের মৌচাষি ২০০ বক্স বসিয়েছেন। শাহজাহান, সবুজ, বাবু ও ফারুকসহ অনেক মৌচাষিরা এ এলাকাটি বেছে নিয়ে মৌবক্স বসিয়ে মধু আহরণ করছেন।
মৌচাষিদের সাথে কথা বলে জানা যায়, খামার থেকে ৪০০-৫০০ টাকা কেজি দরে একদম খাঁটি মধু বিক্রি হয়। স্থানীয় লোকজনদের পাশাপাশি বিভিন্ন ছোট খাটো কোম্পানীও এখান থেকে মধু সংগ্রহ করছেন।
আদর্শ মৌ-খামারের মালিক মোঃ নাসির উদ্দিন বলেন, ১৯৮৫ সাল থেকে তারা এ পেশায় জড়িত। তার ওস্তাদ শাহজাহানের কাছ থেকে শিক্ষা নিয়ে এ পেশায় জড়িয়ে পড়েছেন। বছরের ৫-৭ মাস মৌমাছিদের চিনিযুক্ত খাবার দিতে হয়। বাকি মাসগুলো বিভিন্ন স্থানে ঘুরে তারা এ মাছি থেকে আয় করেন। এ অঞ্চলের সরিষা মৌসুম শেষ হলে তার চলে যাবেন অন্য কোথাও। যেখানে ধনিয়া, কালোজিরা, বাইন, গেওয়া, খলিশা কিংবা অন্য ফুলের চাষ হচ্ছে। অনেক সময় তারা সুন্দরবনেও মৌবক্স বসিয়ে থাকেন। গেল ৮ বছর ধরে সোনারগাঁয়ের মৌচাষিরা এ অঞ্চলে আসেন।
তবে এ বছর স্থানীয় কৃষকরা প্রতিনিয়ত তাদের ঝামেলায় ফেলছেন বলে অভিযোগ করেন আদর্শ মৌ-খামারের মালিক মোঃ নাসির উদ্দিন। মৌমাছি ফুল থেকে মধু সংগ্রহ করলে নাকি সরিষার ফলন কম হবে এমন ভূল ধারণা জন্ম নিয়েছে তাদের মধ্যে। বিষয়টি জেলা, উপজেলা পর্যায়ের কৃষি কর্মকর্তাদের দিয়ে বুঝিয়ে লাভ হচ্ছে না। এ কারণে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন মৌচাষিরা।
এ ব্যাপারে সিংগাইর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ টিপু সুলতান সপন বলেন, মৌমাছির পরাগায়নের ফলে সরিষার ১০-১২ ভাগ ফলন বৃদ্ধি পায়। ফুল থেকে অতিরিক্ত একটা মধু আহরিত হয়। এটা দেশের জন্য ভালো। কিছু কিছু কৃষকদের উত্থাপিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে আমরা তাদের পরামর্শ দিয়ে উদ্ধুদ্ধকরনের চেষ্টা করছি।