ই-ভ্যালি প্রতারণা কোনোভাবে নিয়ন্ত্রণে আসছে না। তাদের প্রতারণার সংখ্যা দিনদিন বাড়ছে। প্রতিদিন তাদের প্রতারণার শিকার হচ্ছে দেশের হাজার হাজার সাধারণ মানুষ। এজন্য ই-ভ্যালির বিরুদ্ধে ক্রেতাদের অভিযোগের শেষ নেই। বিশিষজ্ঞরা বলছেন ই-ভ্যালি প্রতারণার মাধ্যমে হাতিয়ে নিচ্ছে শত কোটি টাকা। আসলে ই-ভ্যালি প্রতারণার মাস্টার।
ই-ভ্যালির ওয়েব সাইডে গিয়ে দেখা যায় পণ্য কিনলেই অর্থ ফেরতের অস্বাভাবিক ‘ক্যাশব্যাক’ অফার দিয়ে ব্যবসা করছে বাংলাদেশি ডিজিটাল বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান ই-ভ্যালি। ১০০ থেকে ১৫০ শতাংশ পর্যন্ত ক্যাশব্যাক অফার দেওয়া হচ্ছে। অর্থাৎ ১০০ টাকার পণ্য কিনলে সমপরিমাণ বা তার চেয়েও বেশি অর্থ ফেরত দেওয়ার লোভনীয় এই অফারে হাজার হাজার গ্রাহক আকৃষ্ট হচ্ছেন। লাভবানও হচ্ছেন অল্প কেউ, তবে বেশির ভাগই আছেন লাভবান হওয়ার অপেক্ষায়। এদের মধ্যে অনেকেই তাদের পণ্যই পাচ্ছেনা আবার টাকাও ফেরত পাচ্ছে না। ই-ভ্যালির কার্যক্রম শুরুর দুই বছরের কিছু সময়ের মধ্যে এই প্রতিষ্ঠানটি ১৫০০ কোটি টাকার পণ্য বিক্রি করেছে। অথচ কোম্পানির পরিশোধিত মূলধন মাত্র ৫০ হাজার টাকা। ব্যবসা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে দুই বছর বয়সী প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে সরকারের বিভিন্ন সংস্থার কাছে নানা অভিযোগও জমা হচ্ছে।
প্রতিষ্ঠানটির ব্যবসায়ের ধরন দেখে বিশেষজ্ঞরাও আশঙ্কা করে বলেছেন এতে মানি লন্ডারিংয়ের সুযোগ তৈরি হচ্ছে। অনলাইনে পণ্য কিনলে সময় বাঁচে, ঝুকিও এড়ানো যায়। তাই ঘরের দুয়ারে প্রয়োজনীয় পণ্য পৌঁছে দেওয়ার উদ্দেশ্য নিয়ে নিবন্ধন নেয় ই-ভ্যালি। মোটরসাইকেল, রেফ্রিজারেটর, মোবাইল ফোনসেট, টেলিভিশন ইত্যাদি পণ্য বিক্রি করছে প্রতিষ্ঠানটি। অতি সম্প্রতি ই-ভ্যালি গাড়ি বিক্রিতেও নেমেছে। ই-ভ্যালির তথ্যে দেখা যায় তাদের নিবন্ধিত গ্রাহক ৫০ লাখ ছাড়িয়ে গেছে। মাসে লেনদেন হচ্ছে ৪৫০ কোটি টাকার পণ্য। ১৫০০ কোটি টাকার পণ্য বিক্রির বিপরীতে কর দেওয়া হয়েছে মাত্র ১.৫ কোটি টাকা। গড়ে প্রতি মাসে পণ্য বিক্রির অর্ডার পাচ্ছে তারা ১৫ লাখ করে। তাদের সঙ্গে এরই মধ্যে যুক্ত হয়ে পড়েছে ২৫ হাজার বিক্রেতা প্রতিষ্ঠান এবং তারা ৪ হাজার ধরনের পণ্য বিক্রি করে কমিশন পাচ্ছে। মাত্র ৫০ হাজার টাকা পরিশোধিত মূলধন দিয়ে শুরু করা এই কোম্পানির পরিশোধিত মূলধন এখনো ৫০ হাজার টাকাই। ২০১৮ সালের ১৪ মে যৌথ মূলধন কোম্পানি ও ফার্মগুলোর নিবন্ধকের কার্যালয় (আরজেএসসি) থেকে নিবন্ধন নেয় ই-ভ্যালি ডটকম লিমিটেড। এর অনুমোদিত মূলধন ৫ লাখ টাকা। ১০ টাকা মূল্যমানের এক হাজার শেয়ারের মালিক কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ রাসেল। আর চার হাজার শেয়ারের মালিক তাঁর স্ত্রী ও কোম্পানির চেয়ারম্যান শামীমা নাসরিন। পরিশোধিত মূলধনের মধ্যে ১০ হাজার টাকা দিয়েছেন মোহাম্মদ রাসেল আর শামীমা নাসরিন দিয়েছেন ৪০ হাজার টাকা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন ইনস্টিটিউট (আইবিএ) থেকে এমবিএ ডিগ্রিধারী মোহাম্মদ রাসেল হচ্ছেন ই-ভ্যালির প্রতিষ্ঠাতা। কর্মজীবন শুরু করেন তিনি ঢাকা ব্যাংক দিয়ে। পরে ছেড়ে দিয়ে ‘কিডস’ ব্র্যান্ডের ডায়াপার আমদানি শুরু করেন। পরে নিয়ে আসেন ই-ভ্যালি।
শুরুর দিকে চালু করা হয় ‘ভাউচার’ নামক একটি পদ্ধতি, এতে দেওয়া হতো ৩০০ শতাংশ ও ২০০ শতাংশ ক্যাশব্যাক। বর্তমানে ১৫০ শতাংশ, ১০০ শতাংশ এবং পরে ৪০ শতাংশ পর্যন্ত ক্যাশব্যাকের সুযোগ দেওয়া হচ্ছে। শুরুর দিকে ১০ টাকায় একটি পেনড্রাইভ এবং ১৬ টাকায় টি-শার্ট বিক্রি করে সাড়া জাগায় ই-ভ্যালি। সাবেক অতিরিক্ত সচিব মাহবুব কবীর সম্প্রতি ই-ভ্যালি নিয়ে ফেসবুকে এক স্ট্যাটাসে বলেন, পণ্য আছে ৫টি, যেহেতু কেউ জানে না, তাই টাকা জমা দিলেন হয়তো ১০০ জন। পণ্য পাবেন ৫ জন। বাকি ৯৫ জনের টাকা ঝুলে থাকবে। আর সবার বোঝা উচিত যে বিক্রেতা বা কোম্পানি আপনাকে পণ্যের সঙ্গে ১০০ শতাংশ, ১৫০ শতাংশ টাকা ফেরত দিচ্ছে। নিশ্চয়ই তিনি পৈতৃক সম্পত্তি বিক্রি করে বা পকেট থেকে দেবেন না। দেবেন নিশ্চয়ই অন্যকে ক্ষতিগ্রস্ত করে বা অন্য কোনো অনৈতিক উপায়ে।
রেফায়েত হক নামক এক ক্রেতা তার ফেসবুক পোস্টে বলেন, তিনি একটি ওয়ার্ডার দিয়েছিলেন এই অর্ডার-টা না ডেলিভারি হয়েছে, আর না লেইট হবার কারণে ক্যান্সেল করে টাকা রিফান্ড পেয়েছি। বাটপার ইভ্যালি এই ভাবে কতো হাজার মানুষের টাকা খেয়েছে, নো আইডিয়া।
মোহাম্মদ আইয়ুব নামক এক ক্রেতা বলেন, তিন মাস পর ই-ভ্যালি বলছে পণ্য দিতে পারবে না। এমন বাটপারি করেন কেন। গতবার লাইভে এসে খুব কান্না কাটি করে জনগণের মনে জায়গা করে নিয়েছেন, সামনে জনগণ দেখে নিবে, বাটপারের দল। এবার আমাকে তোমরা একটু সময় দাও মামলা করার জন্য এবং সাথেই থাকো। বিশ্বাস করো আমি মামলা করব। অপর এক ক্রেতা বলেন, ই-ভ্যালি শালার.... ২০১৮ সালের মাল গুলা আমাদের জন্য পাঠিয়েছে। এগুলা মেয়াদ উত্তীর্ণ পণ্য দিয়ে ক্রেতা কি করবে।
গত ২৪ জুন ই-ভ্যালি থেকে দুটি ফ্যান কেনার অর্ডার দিয়েছিলেন মিরপুরের বাসিন্দা কামরুল আহসান। দাম ৫ হাজার ৮০০ টাকা। তিনি জানান, ই-ভ্যালি তাকে বলেছিল ৭ থেকে ৪৫ দিনের মধ্যে ফ্যান পৌঁছে দেবে বাসায়। অর্ডারের সঙ্গে ৯০ শতাংশ অর্থাৎ ৫ হাজার ২২০ টাকা ক্যাশব্যাক পান কামরুল। এই টাকা ই-ভ্যালির সরবরাহ করা কাচ্চি বিরিয়ানি খেয়ে শেষ করেন। কিন্তু গত সাত মাসেও তিনি ফ্যান আর পাননি। কামরুল আহসান বলেন, ‘ফ্যান আমার দরকার ছিল বলেই অর্ডার দিয়েছিলাম। অপেক্ষা করতে করতে একপর্যায়ে বাজার থেকে ফ্যান কিনে ফেলি। ই-ভ্যালি যদি কোনো সময় ফ্যান দেয়ও, তা দিয়ে কী করব, এখন আছি সেই দুশ্চিন্তায়।’ প্রচলিত পদ্ধতিতে পণ্য কেনার সঙ্গে সঙ্গে দাম পরিশোধ করতে হয়। দেশে কিস্তিতে ও বাকিতে পণ্য কেনার সুযোগও তৈরি হয়েছে এখন।
আর কয়েক বছরের প্রবণতা হচ্ছে অনলাইনে কেনাকাটা। সে ক্ষেত্রে পণ্য সরবরাহ নেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে দাম পরিশোধ করতে হয়, যাকে বলা হয় ‘ক্যাশ অন ডেলিভারি’। কিন্তু ই-ভ্যালি এসব পথে হাঁটছে না। ই-ভ্যালি থেকে পণ্য কিনতে গেলেই দাম পরিশোধ করতে হয় আগে। শুরুতে যে বলা হলো এক লাখ টাকার পণ্য কিনে এক থেকে দেড় লাখ টাকা ফেরত দেওয়া হয়, ই-ভ্যালি এই ফেরতের নামই দিয়েছে ‘ক্যাশব্যাক’। ক্যাশব্যাক জমা হয় ই-ভ্যালি ব্যালান্সে। তাও আবার তিন দিন পর। এই টাকায় ই-ভ্যালি থেকেই অন্য পণ্য কিনতে হয়। সে ক্ষেত্রে পণ্যের ৬০ শতাংশ দাম গ্রাহক পরিশোধ করতে পারেন ব্যালান্স থেকে। বাকি ৪০ শতাংশ পকেট থেকে টাকা দিতে হয়। ই-ভ্যালির রয়েছে ১৫০ শতাংশ পর্যন্ত ‘ভাউচার অফার’।
আরও রয়েছে ‘ক্যাম্পেইন’ নামক একটি বিকল্প কর্মসূচি। ক্যাম্পেইনভেদে পণ্য সরবরাহ করা হয় ৭ থেকে ৪৫ দিনে। ই-ভ্যালি এও বলছে, অনিবার্য কারণবশত ক্যাম্পেইনে যেকোনো পরিবর্তন, পরিবর্ধন বা পরিমার্জনের সম্পূর্ণ অধিকার ই-ভ্যালি কর্তৃপক্ষের রয়েছে। তবে কিছু গ্রাহকের অভিযোগ হচ্ছে, বেঁধে দেওয়া সময়ে তারা পণ্য পাচ্ছেন না। আর ই-ভ্যালির জবাব হচ্ছে, স্টক থাকা সাপেক্ষে পণ্য দেওয়া হয়, এমনকি চাইলেই গ্রাহকরা টাকা ফেরত নিয়ে যেতে পারেন।
ঢাকার মিরপুর ডিওএইচএসের বাসিন্দা আমানউল্লাহ চৌধুরী গত ১৪ জুলাই দুদক চেয়ারম্যান বরাবর এক আবেদনে ই-ভ্যালি নিয়ে তদন্ত করার অনুরোধ জানান।
যোগাযোগ করলে আমানউল্লাহ চৌধুরী বলেন, ই-ভ্যালি হচ্ছে ডিজিটাল এমএলএম কোম্পানি। দেশের ই-কমার্স প্ল্যাটফরমকে বাঁচাতে এর কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা উচিত। এক সাংবাদিক বলেন, তিনি প্রেসার মেশিন কেনান জন্য টাকা জমা দিয়েছেন তিন মাস আগে তবে এখন পর্যন্ত তিনি তার চাহিদামত পণ্যটি পাননি। এবং কখন পাবো তাও তাকে জানানো হচ্ছে না।
দুদকের মুখপাত্র প্রণব কুমার ভট্টাচার্য বলেন, অনেক অভিযোগ আসে। এ ব্যাপারেও হয়তো এসেছে। খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ই-ভ্যালির কার্যক্রমের ধরন অনেকটা এমএলএম কোম্পানির মতো। এমএলএম কোম্পানিগুলোর প্রতারণার চিত্র দেখার অভিজ্ঞতা থেকে মনে হচ্ছে ই-ভ্যালিও তাই করছে। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, এখানে মানি লন্ডারিং হচ্ছে। ই-কমার্সের বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে সঠিক পণ্য সময়মতো পৌঁছানো। কিন্তু ই-ভ্যালি অনেক ক্ষেত্রেই কাজটি করতে পারছে না। টাকা আটকে রেখে ই-ভ্যালি গ্রাহককে জানিয়ে দিচ্ছে, পণ্যের সরবরাহ নেই (স্টক আউট) বলে অর্ডার বাতিল করা হলো। ‘গিফট কার্ড’ নাম দিয়েও গ্রাহকের কাছ থেকে অগ্রিম টাকা নিচ্ছে ই-ভ্যালি। যারা গিফট কার্ড কিনছেন, তারা তাদের টাকা ফেলে রাখতে বাধ্য হচ্ছেন। ই-ভ্যালির আরেকটি বিষয় হচ্ছে ‘ই-ওয়ালেট’। ই-ভ্যালিতে পণ্য না পেয়ে অনেক সময় ক্রেতা যখন বিরক্ত হয়ে অর্ডার বাতিল করে দেন, তখন তার টাকা জমা হয় ই-ওয়ালেটে। পণ্যের সরবরাহ না থাকায় ই-ভ্যালি নিজেও বাতিল করে দেয় অর্ডার। তখনো গ্রাহকের টাকা ই-ওয়ালেটে জমা হয়। টাকা আর ফেরত পান না গ্রাহক, বরং অন্য পণ্য কিনে উশুল করতে হয়। একজন গ্রাহক জানান, কেউ একজন আসুসের ল্যাপটপ কিনবেন বলে অর্ডার দিলেন। টাকাও জমা দিলেন। এক থেকে দুই মাস পর ই-ভ্যালি তাকে জানাল যে পণ্যটির সরবরাহ নেই। সরবরাহ আছে বেশি বেশি দরের অন্য ব্র্যান্ডের ল্যাপটপ। গ্রাহক সেটাই নিতে বাধ্য হন। ই-ভ্যালির ওয়েবসাইটে ‘সাপোর্ট’ নামক একটি অপশন রয়েছে। এখানে ফোন করার ও ই-মেইলের সুযোগ রয়েছে। কিন্তু ফোন করলেই স্বয়ংক্রিয়ভাবে জবাব আসে, ‘আপনার বিষয়টি আমাদের টিম দেখছে। খুব শিগগির আপনাকে কল-ব্যাক করা হবে।’ অথবা বলা হয়, ‘একটু ধৈর্য ধরুন। খুব শিগগির আপনার পণ্যটি পেয়ে যাবেন।’ ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইনের ৪৫ ধারায় বলা হয়েছে, প্রদত্ত মূল্যের বিনিময়ে প্রতিশ্রুত পণ্য বা সেবা যথাযথভাবে বিক্রি বা সরবরাহ করা না হলে অনূর্ধ্ব এক বছরের সশ্রম বা বিনা শ্রম কারাদন্ড বা অনধিক ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ড হতে পারে। ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বাবলু কুমার সাহা বলেন, ‘ই-ভ্যালির বিরুদ্ধে আমাদের কাছে অভিযোগ আসছে। প্রতিকারও নিচ্ছি। তবে অনেকে যথাযথভাবে অভিযোগ করতে পারছেন না বলে প্রতিকার পাচ্ছেন না।’ ই-ভ্যালির, ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ রাসেলের বক্তব্য জানার জন্য তিনদিন যাবত মোবাইল ফোনে চেষ্টা করলে তিনি ফোন ধরেননি। এই প্রতিবেদকের পক্ষ থেকে ক্ষুদ্র ম্যাসেজ দেয়ার পরও তিনি ফেন ধরেননি এবং ব্যাকও করেন নি। এমন কি ইমেইল এর ম্যধ্যমে প্রশ্ন পাঠিয়ে দেয়া হলেও তার কোন উত্তর পাওয়া যায়নি। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘পণ্য বেচাকেনার উঠতি পদ্ধতি ই-কমার্সকে আমরা সমর্থন করছি। সামনে বিপুল সম্ভাবনা। তবে ই-কমার্সের নামে প্রতারণা মেনে নেওয়া হবে না। ই-ভ্যালি নিয়ে অভিযোগ পেয়েছি। খোঁজ নিচ্ছি।’
এদিকে ই-ভ্যালি যে ওয়ালেট পদ্ধতিতে টাকা রাখছে, তা বাংলাদেশ ব্যাংকের লাইসেন্সবিহীন। করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ শুরু হওয়ার এক সপ্তাহের মাথায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক গত ৫ মার্চ দেশের সব তফসিলি ব্যাংক, মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস (এমএফএস) সেবাদাতা, পেমেন্ট সার্ভিস সেবাদাতা (পিএসপি) এবং পেমেন্ট সিস্টেম অপারেটরের (পিএসও) উদ্দেশে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। বলেছে, কিছু প্রতিষ্ঠান লাইসেন্স না নিয়েই পিএসপি ও পিএসওর মতো কার্যক্রম চালাচ্ছে, যা আইনসিদ্ধ নয়। কেউ প্রতারিত হলে গ্রাহকদের আস্থা নষ্ট হবে এবং অর্থনীতিতেও বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে। লাইসেন্স ছাড়া কোনো ধরনের ওয়ালেট সেবা দেওয়া থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
যোগাযোগ করলে কোম্পানি আইন নিয়ে কাজ করা আইনজীবী তানজীব-উল-আলম বলেন, ‘ই-ভ্যালির কার্যক্রমের ধরন অনেকটা এমএলএম কোম্পানির মতো। এমএলএম কোম্পানিগুলোর প্রতারণার চিত্র দেখার অভিজ্ঞতা থেকে মনে হচ্ছে, ই-ভ্যালিও তাই করছে। ৫০ হাজার টাকা পরিশোধিত মূলধনের কোম্পানি ১৫০০ কোটি টাকার পণ্য বিক্রি করেছে। কোম্পানির পরিচালকরা সক্ষম হলে পরিশোধিত মূলধন বাড়াতে পারতেন। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, এখানে মানি লন্ডারিং হচ্ছে। তবে বাংলাদেশ ব্যাংক তদন্ত করে দেখতে পারে।’