প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ২১ জানুয়ারি, ২০২১, ১:৫০ এএম আপডেট: ২১.০১.২০২১ ৩:২৭ পিএম | প্রিন্ট সংস্করণ
গতকাল শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ওয়েস্ট ইন্ডিজের মুখোমুখি হয় বাংলাদেশ। কাগজে কলমে তাদের খর্বশক্তির দল বলা হলেও তারা ক্লাইভ লয়েড, কালিচরণ, লারাদের উত্তরসূরি। বর্তমান সময়ে বিশ্ব দাঁপিয়ে বেড়ানো ক্রিস গেইল, পোলার্ডদেরও উত্তরসূরি। জাতীয় দলের প্রতিনিধি হিসাবেই দলটি বাংলাদেশে এসেছে। বিমানবন্দরে নেমে তাদের কোচ টাইগারদের বিরুদ্ধে হুংকার ছুড়ে দিয়েছিলেন। বাংলাদেশকে সমীহ করলেও সে হুংকারে স্পষ্ট ছিল তারা সিরিজ জয়ের লক্ষ্যে বাংলাদেশের মাটিতে পা রেখেছে। গতকাল প্রথম মোকাবিলায় অবশ্য কোচের সেই হুংকার কোন কাজে আসেনি। দীর্ঘদিন পরে মাঠে নেমে টাইগাররা কাক্সিক্ষত জয় তুলে নিয়েছে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের দেওয়া ১২৩ রান লক্ষ্যে ব্যাট করে টাইগাররা মাত্র ৪ উইকেট খুইয়ে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায়। এজন্য ৩৩.৫ ওভার খেলতে হয়।
টস জিতে টাইগার অধিনায়ক তামিম ইকবাল ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ জানান। এসময় টাইগার বোলাররা চেপে ধরে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ব্যাটসম্যানদের। টাইগারদের বোলিং তোপে বালির বাধের মত ধসে পড়ে উইন্ডিজদের সব প্রতিরোধ। নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে দীর্ঘদিন পরে মাঠে ফিরে সাকিব সংহারমূর্তি ধারণ করেন। তিনি একাই ৪ উইকেট শিকার করেন। তিনি ৭.২ ওভার বল করে ২ ম্যাডেনসহ ৮ রান দিয়ে ৪ উইকেট নিজের ঝুলিতে পোরেন। এই ৪ উইকেটের সুবাদে ঘরের মাঠে সাকিব ১৫০ উইকেটের মালিক হলেন। এদিকে প্রথম আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলতে নেমে হাসান তার জাত চেনান। তিনি ৬ ওভার বল করে ১ মেডেনসহ ২৮ রানে-৩ উইকেট সংগ্রহ করেন। কাটারমাস্টার মুস্তাফিজ ৬-০-২০-২, মিরাজ ৭-১-২৯-১ নেন। বলা যেতে পারে বেশ দাপুটে জয় তুলে নিয়েছে বাংলদেশ। এই জয়ের ফলে সিরিজে বাংলদেশ ০-১ এগিয়ে গেল।
টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে সফরকারীরা ৩২.২ ওভারে সব উইকেট হারিয়ে মাত্র ১২২ রান সংগ্রহ করে। জবাবে বাংলাদেশ ৩৩.৫ ওভারে ৪ উইকেট হারিয়ে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায়। করোনা পরবর্তী আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিরেই জয়ের স্বাদ পেলো বাংলাদেশ। সাকিব-হাসান-মুস্তাফিজের বোলিং তোপের পর অধিনায়ক তামিম ইকবালের ৪৪ রানের ওপর ভর করে ৬ উইকেটের বিশাল জয় পায় টাইগাররা। ম্যাচ সেরার পুরস্কার জেতেন সাকিব আল হাসান। জয়ের জন্য ১২৩ রানের লক্ষে ব্যাট করতে নেমে ৪৭ রানের দূরন্ত শুরু এনে দেন তামিম-লিটন। ১৪ রানে লিটন আউট হলেও অন্য প্রান্ত আগলে রাখেন নতুন অধিনায়ক। কিন্তু দলীয় ১০ রান যোগ করে ব্যক্তিগত ১ রানেই প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন নাজমুল হোসেন শান্ত ২২.৫ ওভারে দলীয় ৮৩ রানের মাথায় আকিল হোসেনের বলে স্ট্যাম্পিংয়ের ফাঁদে পড়ে ব্যক্তিগত অর্ধশত রানের স্বপ্ন জাগিয়েও মাঠ ছাড়তে হয় তামিম ইকবালকে। আউট হওয়ার আগে ৭ চারে ৪৪ রান আসে তামিমের ব্যাট থেকে। নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে রাজকীয় প্রত্যাবর্তনের দিনে সাকিব আল হাসান জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ার স্বপ্ন দেখালেও সেই আকিল হোসেনের বলেই ব্যক্তিগত ১৯ রান করে মাঠ ছাড়তে বাধ্য হন।
তবে বাকিটা সময় হেসে খেলেই জয় তুলে নেন টাইগারদের দুই অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান মুশফিকুর রহিম ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। ৩৩.৫ ওভার খেলে ৯৭ বল হাতে রেখেই জয় নিয়ে মাঠে ছাড়েন তারা। মুশফিকের ব্যাট থেকে আসে ১৯ রান। রিয়াদ অপরাজিত থাকেন ৯ রানে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর: ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১২২/১০ (৩২.২ ওভার) মায়ার্স ৪০, পাওয়েল ২৮, জেসন ১৭, ম্যাককার্থি ১২ (সাকিব ৭.২-২-৮-৪, হাসান ৬-১-২৮-৩, মুস্তাফিজ ৬-০-২০-২, মিরাজ ৭-১-২৯-১) বাংলাদেশ :১২৫/৪ (৩৩.৫ ওভার)তামিম ৪৪, মুশফিক ১৯*, সাকিব ১৯, লিটন ১৪, রিয়াদ ৯*, শান্ত ১ (আকিল ১০-১-২৬-৩, জেসন ৮-০-১৯-১) ফল : বাংলাদেশ ৬ উইকেটে জয়ী। ম্যান অফ দ্য ম্যাচ :সাকিব আল হাসান