করোনা
মহামারির কারণে সারাবিশে^র মতো দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে বড় ধরনের
ওলটপালট হয়ে গেছে। অনলাইন ক্লাসের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের পাঠ্যক্রম অব্যাহত
রাখার চেষ্টা থাকলেও স্বাভাবিক ও চিরায়ত গতি হারিয়ে নতুন আরেকটি ব্যবস্থার
দিকে যেতে হয়েছে গোটা শিক্ষা ব্যবস্থাকে। চলতি বছরের মার্চ মাস থেকে টানা ৯
মাসের মতো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ থাকায় নিয়মিত ক্লাস পরীক্ষা, বর্ষ
সমাপনী ও জেএসসি, জেডিসি, এসএসসির মতো গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষাগুলো হতে
পারেনি। এইচএসসি পরীক্ষাও অনুষ্ঠিত হয়নি এ সময়ের মধ্যে। কলেজ-বিশ^বিদ্যালয়
পর্যায়েও চূড়ান্ত পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব হয়নি। এবারের এইচএসসি ও সমমানের
পরীক্ষার ফল প্রকাশ ডিসেম্বরের মধ্যে হওয়ার কথা থাকলেও বিশেষ পরিস্থিতির
কারণে সে ফল প্রকাশ হবে নতুন বছরের শুরুতে এবং সেজন্য একটি অধ্যাদেশ জারি
করতে হবে। কারণ পরীক্ষার ফল সংক্রান্ত আইন রয়েছে, বিশেষ পরিস্থিতিতে ফল
প্রকাশের জন্য একটি অধ্যাদেশ জারি করতে হবে।
গতকাল মঙ্গলবার এক
ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি এ কথা জানিয়েছেন। শুধু
এইচএসসির ফল প্রকাশের সিদ্ধান্তই নয়, সংবাদ সম্মেলনে বেশ কয়েকটি
গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তও জানিয়েছেন তিনি। ফেব্রুয়ারিতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান
খোলা, এবার জেএসসি-জেডিসির সনদে জিপিএ না থাকা, মাধ্যমিকের নতুন ক্লাসে ওঠা
শিক্ষার্থীদের চিরাচরিত রোল নম্বর প্রথায় বন্ধ করে আইডি নম্বর দেওয়া এবং
১২ দিনে শিক্ষার্থীদের মাঝে নতুন পাঠ্যবই বিতরণ এবং ২০২১ এর এসএসসি পরীক্ষা
পেছানো হবে বলে জানান শিক্ষামন্ত্রী।
জানুয়ারিতে এইচএসসির ফল প্রকাশ
:এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল প্রকাশ হবে নতুন বছরের শুরুতে, তবে সেজন্য
একটি অধ্যাদেশ জারি করতে হবে। বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি। তিনি
বলেন, ‘পরীক্ষার ফল সংক্রান্ত আইন রয়েছে, বিশেষ পরিস্থিতিতে ফল প্রকাশের
জন্য একটি অধ্যাদেশ জারি করতে হবে। সহসাই এটি জারি করা হবে।’ দেশের ১১টি
বোর্ডে ১৩ লাখ ৬৫ হাজার ৭৮৯ জন শিক্ষার্থীর এবার এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা
দেওয়ার কথা ছিল। পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা ছিল ১ এপ্রিল থেকে। কিন্তু করোনা
ভাইরাসের প্রকোপ বাড়তে শুরু করলে ১৭ মার্চ থেকে দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান
বন্ধ করে দেওয়া হয়। শিক্ষার্থী আর অভিভাবকদের দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর গত ৭
অক্টোবর এক সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রী জানান, পঞ্চম ও অষ্টমের সমাপনীর
মত এইচএসসি পরীক্ষাও এবার নেওয়া যাচ্ছে না। সেদিন তিনি বলেছিলেন, অষ্টমের
সমাপনী এবং এসএসসির ফলাফলের গড় করে এবারের এইচএসসির ফল নির্ধারণ করা হবে।
ডিসেম্বর মাসের মধ্যেই এই ফল ঘোষণা করা হবে। তবে ডিসেম্বরে যে ফলাফল দেওয়া
যাচ্ছে না, সে কথা জানিয়ে মঙ্গলবারের সংবাদ সম্মেলনে দীপু মনি বলেন,
‘এইচএসসির ফল তৈরি আছে, অধ্যাদেশ জারি করা প্রয়োজন, এটি জারি করা মাত্রই ফল
দিয়ে দিতে পারব। আশা করি জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে এটি জারি করতে পারব, এটি
জারি করতে পারলেই ফল দিয়ে দেব।’ এইচএসসি-সমমানের মূল্যায়নের ক্ষেত্রে
এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফলাফল যে প্রাধান্য পাবে, সে কথা সরকারের তরফ
থেকে ইতোমধ্যে জানানো হয়েছে। জেএসসি-জেডিসির ফলাফলকে ২৫ এবং এসএসসির ফলকে
৭৫ শতাংশ বিবেচনায় নিয়ে উচ্চ মাধ্যমিকের ফল ঘোষিত হবে।
ফ্রেব্রুয়ারিতে
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার ভাবনা :নয় মাসের বেশি সময় ধরে বন্ধ থাকা শিক্ষা
প্রতিষ্ঠানগুলো আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে খুলে দেওয়া হতে পারে বলে আভাস
দিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি। তিনি বলেন, ‘গত ১৬ মার্চ থেকে প্রত্যক্ষ
শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। ফেব্রুয়ারি থেকে এপ্রিল এই সময়কালে
ক্লাসরুমে পড়ানোর উদ্যোগ নেব, সেই চেষ্টা করছি।’ ২০২১ সালের এসএসসি ও
সমমানের পরীক্ষার্থীদের পূর্ণাঙ্গ সিলেবাস শেষ করা যায়নি বলে সিলেবাস
পুনর্বিন্যস্ত করে তাদের স্কুলে নিয়ে ক্লাস করানোর এই উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে
বলে জানান শিক্ষামন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘পরিস্থিতি যদি অনুকূলে থাকে, ২০২১
সালের জুন নাগাদ এসএসসি পরীক্ষা নেওয়ার চেষ্টা হবে। সেজন্য স্কুল খুলে
দেওয়ার চেষ্টা করা হবে, যাতে মাধ্যমিকের শিক্ষার্থীদের শ্রেণিকক্ষেই
সংক্ষিপ্ত সিলেবাসের ক্লাস নিয়ে পরীক্ষার জন্য তৈরি করা যায়।’ আর এইচএসসি
পরীক্ষার্থীদের আগামী ফেব্রুয়ারি থেকে মে মাস পর্যন্ত ক্লাসরুমে নিয়ে ক্লাস
করানোর পরিকল্পনা করা হচ্ছে জানিয়ে দীপু মনি বলেন, ‘জুলাই-আগস্ট নাগাদ
এইচএসসি পরীক্ষা গ্রহণের আশা প্রকাশ করছি।’ বাংলাদেশে করোনা ভাইরাসের
প্রকোপ বাড়তে থাকলে গত ১৭ মার্চ থেকে দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে
দেওয়া হয়। কওমি মাদরাসা বাদে অন্যসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আগামী ১৬ জানুয়ারি
পর্যন্ত ছুটি ঘোষণা করা আছে।
এবার জিপিএ থাকবে না জেএসসি-জেডিসির সনদে
:এবার পরীক্ষা ছাড়াই জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) ও জুনিয়র দাখিল
সার্টিফিকেট (জেডিসি) পরীক্ষার্থীদের পরের ক্লাসে তোলা হবে বলে তাদের
সনদপত্রে কোনো জিপিএ থাকবে না। শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘কোভিড-১৯ পরিস্থিতির
কারণে এ বছর জেএসসি-জেডিসি পরীক্ষা গ্রহণ করতে পারিনি, সম্ভব হয়নি।
মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতরের নির্দেশনা মোতাবেক স্ব স্ব শিক্ষা
প্রতিষ্ঠান অ্যাসাইনমেন্টের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন সম্পন্ন করেছে।
ইতোমধ্যে শিক্ষাবোর্ডগুলো জেএসসি-জেডিসি পরীক্ষার্থীদের রেজিস্ট্রেশনের
কাজও সম্পন্ন করেছে। বোর্ডগুলো সকল শিক্ষার্থীদের উত্তীর্ণ সদন দেবে,
কিন্তু কোনো নম্বরপত্র দেওয়া হবে না’
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘আমরা যদিও
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে, অ্যাসাইনমেন্টের মাধ্যমে কিছুটা মূলায়ন
করেছি, সে মূল্যায়নপত্রও আমরা সংগ্রহ করব। কিন্তু আমরা কোনো নম্বরপত্র এবার
দিচ্ছি না, এ কারণে জেএসসি-জেডিসির সনদপত্রে জিপিএ উল্লেখ থাকবে না।’
মহামারির মধ্যে এবার পঞ্চম ও অষ্টমের সমাপনী পরীক্ষা নেওয়া যায়নি। এইচএসসি ও
সমমানের পরীক্ষার্থীদের ফল ঘোষণা করা হচ্ছে অষ্টম ও এসএসসির ফল বিবেচনায়
নিয়ে। পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়ায় স্কুলের বার্ষিক পরীক্ষাও এবার হয়নি।
পরীক্ষা ছাড়াই শিক্ষার্থীরা সবাই পরের ক্লাসে উঠে যাবে। তবে শিক্ষার্থীদের
কোথায় দুর্বলতা তা বোঝার জন্য ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণির ছাত্র-ছাত্রীদের
সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে সাপ্তাহিক অ্যাসাইনমেন্ট দিয়ে মূল্যায়নের ব্যবস্থা করা
হয়েছে।
রোল নম্বরের অবসান হচ্ছে মাধ্যমিকে :এবার মাধ্যমিকের নতুন ক্লাসে
ওঠা শিক্ষার্থীদের চিরাচরিত প্রথায় রোল নম্বর দেওয়া হবে না। বার্ষিক
পরীক্ষার মেধাক্রমের ভিত্তিতে আগে যে রোল নম্বর দেওয়া হত, তার বদলে
শিক্ষার্থীদের এবার আইডি নম্বর দেওয়া হবে বলে শিক্ষামন্ত্রী জানিয়েছেন। আর
প্রাথমিকের শিক্ষার্থীরা আগের ক্লাসের রোল নিয়ে পরের ক্লাসে উঠবে বলে
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন জানিয়েছেন। দীপু মনি বলেন,
‘রোল নম্বর নিয়ে একটা সমস্যা হয়। প্রত্যেক শ্রেণিতে যে রোল নম্বর থাকে,
আমাদের রোল নম্বরের যে প্রথা রয়েছে, তার কারণে একটা অনভিপ্রেত প্রতিযোগিতা
হয় এবং শিক্ষার্থীদের মধ্যে অনেক সময় যে সহযোগিতার মনোভাব, যেটি থাকার
দরকার, অনেক সময় সেটির অভাব ঘটে রোল নম্বরের কারণে, সামনে আসতে চায় সবাই।
আমরা চেষ্টা করছি ২০২১ শিক্ষাবর্ষে শিক্ষার্থীদের শ্রেণির রোল নম্বরের এই
বিষয়ের পরিবর্তে আইডি নম্বর প্রদান করতে, এতে পুরানো রোল নম্বর প্রথার
বিলুপ্তি হবে এবং অনভিপ্রেত প্রতিযোগিতা বন্ধ হয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে একটা
সৎ প্রতিযোগিতার মনোভাব তৈরি হবে বলে আশা করছি।’
শিক্ষামন্ত্রী বলেন,
প্রাথমিক থেকে সব শিক্ষার্থীর ইউনিক আইডি দেওয়া হবে। পুরো শিক্ষা জীবনে সে
ওই আইডি নম্বর নিয়ে থাকবে, তাতে তাকে ‘ট্র্যাক’ করা যাবে, সে ঝরে পড়ছে কি
না। দীপু মনি বলেন, ‘শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে সমতা আনা এবং গুণগত মান
অর্জনে সরকার কাজ করছে। এবার লটারির মাধ্যমে ভর্তি প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে,
আমরা আশা করছি, তাতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠাগুলোর মধ্যে কিছুটা হলেও হয়ত সমতা
আসবে। কিছু স্কুলে খুব ভালো ফলাফল করে তেমন শিক্ষার্থীরা যায়, কিছু স্কুল
থাকে একেবাইরে ভালো ফল করছে না তেমন শিক্ষার্থীরা যায়, এই যে একটা বিরাট
রকমের বৈষ্যম্য তৈরি হয়ে যায়, এই বৈষম্যটা তারা স্কুল-কলেজ পার হওয়ার পুরো
সময়টায় বয়ে নিয়ে যায়।’ লটারির মাধ্যমে যেটা হচ্ছে, এই বৈষম্যের জায়গাটা
অনেকখানি নিরসন হবে এবং কিছুটা হলেও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে সমতা
আসবে মন্তব্য কওে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘মিক্সঅ্যাবিলিট ক্লাসের কারণে ২০২১
সালে আমাদের গুণগত শিক্ষা অর্জন কিছুটা হয়তো সহজতর হবে।’
১২ দিনে
পাঠ্যবই বিতরণ :করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যে বছরের প্রথম দিন স্কুলে স্কুলে
বই উৎসব না করে এবার ১ থেকে ১২ জানুয়ারি পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের হাতে বই
পৌঁছে দেবে সরকার। অন্যবারের মত এবারও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৩১
ডিসেম্বর বই বিতরণ কার্যক্রমের উদ্বোধন করবেন। শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি
বলেন, ‘বছরের প্রথম দিন সারা দেশে প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বই উৎসবে অংশ
নেয়। এটি একটি বড় উৎসবে পরিণত হয়েছে। শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যঝুঁকি ও
নিরাপত্তার কথা ভেবে এবার একই দিনে সব শিক্ষার্থীর হাতে বই তুলে দেব না।
কারণ জনসমাবেশ কিছুতেই আমরা করতে পারি না।’ তার বদলে প্রতিটি শ্রেণির বই
বিতরণের জন্য তিন দিন করে সময় রাখার পরিকল্পনা জানিয়ে দীপু মনি বলেন, ‘ষষ্ঠ
থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত মোট ১২ দিনে আমরা বই বিতরণ করব। একেকটি ক্লাসের
শিক্ষার্থীরা তিন দিন (স্কুলে) আসবে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে বলে দেবে- ‘এত
থেকে এত তারিখ পর্যন্ত তোমরা আসো’, সে রকম একটি ব্যবস্থা করে একই ক্লাসের
শিক্ষার্থীরা তিন দিনে ভাগে ভাগে এসে বইগুলো নিয়ে যাবে।’
প্রাথমিক ও
গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন জানান, আগামী ৩১ ডিসেম্বর বঙ্গবন্ধু
আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে প্রধানমন্ত্রী বই বিতরণ কার্যক্রমের উদ্বোধন
করবেন। বলেন, ‘১ জানুয়ারি শিক্ষার্থীদের হাতে বই তুলে দিতে প্রস্তুতি
সম্পন্ন করেছি। বই বিতরণে শিক্ষার্থীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে আমি সবাইকে
আহ্বান জানাই।’ প্রাথমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের হাতে কীভাবে বই তুলে দেওয়া
হবে, সে বিষয়ে কিছু জানাননি গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী। প্রাথমিক ও মাধ্যমিক
স্তরের শিক্ষার্থীদের এবার ৩৫ কোটি বই বিনামূল্যে বিতরণ করা হবে। আওয়ামী
লীগ নেতৃত্বাধীন সরকার ২০১০ সাল থেকে বছরের প্রথম দিন উৎসব করে
শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই তুলে দিচ্ছে। গত ১১ বছরে ৩৬৬ কোটি ৮৭ লাখ ৭৭
হাজার ৫৬৬টি বই বিনামূল্যে বিতরণ করা হয়েছে।
২০২১ সালের এসএসসি পরীক্ষা
পেছাল :মহামারি করোনাভাইরাস পরিস্থিতির কারণে পেছানো হচ্ছে ২০২১ সালের
মাধ্যমিক পরীক্ষা (এসএসসি)। পরিস্থিতি অনুকূলে থাকলে আসছে বছরের জুন মাসে
এসএসসি পরীক্ষা নেওয়া হতে পারে। সাধারণত এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা
ফেব্রুয়ারির শুরুতে এবং এসএসসি ও সমমান পরীক্ষা এপ্রিলের শুরুতে হয়ে থাকে।
কিন্তু করোনার কারণে আগামী বছরের এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা নির্ধারিত সময়ে
হচ্ছে না। সংবাদ সম্মেলনে দীপু মনি আরও বলেন, ২০২০ সালেল এইচএসসির ফলাফল
নিয়ে কেউ সংক্ষুব্ধ হলে আপিল করা যাবে। এছাড়া এইচএসসির ফল ঘোষণার জন্য
বিশেষ অধ্যাদেশ জারি করতে হবে। ফলাফল প্রস্তুতের জন্য ইতোমধ্যে ৮ সদস্যের
পরামর্শক কমিটি টিমে কাজ করছে।
সর্বশেষ আগামী ১৬ জানুয়ারি পর্যন্ত ছুটি
বাড়িয়েছে সরকার। প্রতিবছর ১ জানুয়ারির বই উৎসব সর্বজনীন উৎসবে পরিণত হয়েছে।
তবে চলমান করোনা পরিস্থিতির এবছর সারা দেশে বই উৎসব হচ্ছে না। এর আগে গত
২৫ নভেম্বর এক সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রী জানিয়েছিলেন, জেএসসি ও এসএসসির
ফলাফলের ভিত্তিতে চলতি বছরের এইচএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হবে। তবে
এসএসসি পরীক্ষা যেহেতু বেশি গুরুত্বপূর্ণ, তাই এ ফল থেকে ৭৫ শতাংশ এবং
জেএসসির ফল থেকে ২৫ শতাংশ নম্বরের ভিত্তিতে ফল প্রকাশের পরিকল্পনা করা
হয়েছে। আর ডিসেম্বরের মধ্যেই এইচএসসির ফল প্রকাশ করার কথা।