তিনি সেখানে টিজারের তিনটি স্ক্রিন শট দিয়ে লেখেন "১ম ছবিটি দেখুন। কালেমা খচিত পতাকা, পতাকার নীচের অংশে AK-47 এর সিম্বল । পতাকার পেছন থেকে অস্ত্র হাতে বেরিয়ে আসছে কথিত সন্ত্রাসীরা । ২য় ছবিটিতে দেখুন। চার দিকে আরবি লেখা। টিজারের এই অংশে দেখানো হচ্ছে কথিত সন্ত্রাসীরা সুন্নাতি পোষাক পড়ে "নারায়ে তাকবির" "আল্লাহু আকবর" স্লোগান দিচ্ছে"।
তিনি আরো লেখেন "এই মুভিতে দেখাবে ইসলামি জঙ্গিবাদ দমনে নায়ক দেব এসে হাজির হয়েছে। আর জঙ্গিদের সিম্বল হিসাবে কালিমা খচিত পতাকা ব্যবহার করা হয়েছে। এখানে সুস্পষ্টভাবে ইসলামকে ডিমোনাইজ করা হচ্ছে। ভিলেন বানিয়েছে ইসলামকে । যা ইচ্ছাকৃত ইসলাম বিদ্বেষ"।
তিনি প্রশ্ন রাখেন "ইসলাম কখনো জঙ্গী ধর্ম নয়, একই সাথে ধর্মের নামে কেবল ইসলামেই উগ্রতা আর জঙ্গীবাদ আছে এমন নয়, সব ধর্মেই আছে, তাহলে মুভিতে কেনো ইসলাম আর কলেমার পতাকারই শুধু ব্যাবহার?"
বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত কথা বলার জন্য আব্দুল হাই মোহাম্মদ সাইফুল্লাহ'র সাথে একাধিক বার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে কোন মন্তব্য পাওয়া সম্ভব হয়নি।
সিনেমার টিজার নিয়ে ধর্ম অবমাননার যে অভিযোগ উঠেছে সেটা নিয়ে এই সিনেমার প্রযোজক সেলিম খানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেছেন, যখনই তিনি দেখেছেন এটা নিয়ে বিতর্ক হচ্ছে তখনি টিজারটি সরিয়ে ফেলার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
তিনি বলেন "আমি নিজে মুসলমান, ইসলাম ধর্মকে অবমাননা করার দুঃসাহস আমার নেই। জঙ্গিবাদ সরকার কীভাবে দমন করছে সেটাই সিনেমায় দেখানো হয়েছে"।
তিনি বলেন "টিজারটি কলকাতা থেকে সিনেমার অভিনেতা দেব ,তিনি আপলোড করেন। আমি তাকে জানাই এটা নিয়ে আমার দেশে সমস্যা হচ্ছে, তিনি টিজারটা সরিয়ে ফেলেন"।
বিদেশী শিল্পী হিসেবে কেউ যদি বাংলাদেশে কাজ করতে চান তাকে সরকারের অনুমতি নিতে হয়।
মি. খান জানান "যখন দেবের অভিনয়ের বিষয়টা ফাইনাল হয় তখন আমরা তথ্য মন্ত্রণালয়ে অনুমতি নেই। তখন সিনেমার গল্পের অনুমোদন নেয়া হয়েছে এবং আমরা স্ক্রিপ্ট অনুযায়ী কাজ করছি। এখানে ধর্ম অবমাননার কোন প্রশ্নই আসে না"।
এদিকে বাংলাদেশ সেন্সর বোর্ডের সদস্য খোরসেদ আলম খসরু বলছিলেন এখানে দুইটি বিষয় রয়েছে।
তিনি বলছিলেন,প্রথমত একটি সিনেমা মুক্তি পাওয়ার পর সেটা সম্পূর্ণ দেখে মন্তব্য করা উচিত।
"টিজার দেখে কোন মন্তব্য করা বা বিতর্ক সৃষ্টি করা উচিত না" বলছিলেন তিনি।
দ্বিতীয় বিষয় হল, সিনেমা বিষয়ক যে নীতিমালা রয়েছে সেটা মেনে চলা।
মি. খসরু বলছিলেন "বাংলাদেশে যে নীতিমালা রয়েছে সেখানে সেন্সর বোর্ডের ছাড়পত্র দেয়ার আগে সিনেমার একটা পোষ্টারও প্রকাশ করার নিয়ম নেই। সেখানে সিনেমা শেষ করার আগে, সেন্সর বোর্ডের অনুমোদনের আগে যে টিজার প্রকাশ করা হয়েছে সেখানে আমি বলবো নিয়ম ভাঙ্গা হয়েছে"।
প্রযোজক সেলিম খান এই বিষয়ে বলেন "আমরা অনলাইন প্লাটফর্মে রিলিজ করেছিলাম, কোন সিনেমা হলে টিজার মুক্তি দেইনি"।
তাই নীতিমালা ভঙ্গ হচ্ছে না বলে তিনি মনে করেন। সূত্র: বিবিসি বাংলা