গত একযুগে বাংলাদেশের উত্থান আমরা ভালোভাবেই দেখতে পেরেছি: অধ্যাপক ড. বদরুজ্জামান ভূঁইয়া কাঞ্চন
সিনিয়র প্রতিবেদক
প্রকাশ: সোমবার, ২৮ ডিসেম্বর, ২০২০, ১০:০২ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
পুরো বিশ্বের অর্থনীতির ওপর করোনা সংকটের মারাত্মক প্রভাবের মাত্রা দিনে দিনে আরেও স্পষ্ট হয়ে উঠছে। বিশেষ করে পশ্চিমা দেশগুলোর অর্থনীতির অবস্থা সম্পর্কে ভয়াবহ চিত্র উঠে আসছে। বিশ্বব্যাপী করোনা মহামারিতে বাংলাদেশের অর্থনীতি তুলনামূলক অনেক ভালো অবস্থানে আছে। এমনকি ভারত, পাকিস্তান, চীন ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের অর্থনীতির চেয়েও কম ঝুঁকিতে রয়েছে বাংলাদেশ। দুর্যোগে এদেশের অর্থনৈতিক নিরাপত্তা এখনও ভালো, ফলে করোনাকবলিত অন্যান্য দেশ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কর্তৃক গৃহীত পদক্ষেপগুলো অনুসরণ করবে এটাই স্বাভাবিক।
দৈনিক ভোরের পাতার নিয়মিত আয়োজন ভোরের পাতা সংলাপের ২০২তম পর্বে এসব কথা বলেন আলোচকরা। সোমবার (২৮ ডিসেম্বর) আলোচক হিসাবে উপস্থিত ছিলেন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, রংপুর এর উপ- উপাচার্য অধ্যাপক ড. সরিফা সালোয়া ডিনা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের চেয়ারম্যান এবং বাংলাদেশ আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক অধ্যাপক ড. বদরুজ্জামান ভূঁইয়া কাঞ্চন, বঙ্গবন্ধু পরিষদ ফ্রান্স এর সাধারন সম্পাদক এবং ইউরোপীয়ান প্রবাসী বাংলাদেশী এসোসিয়েশনের সহ-সভাপতি আশরাফ ইসলাম। দৈনিক ভোরের পাতা সম্পাদক ও প্রকাশক ড. কাজী এরতেজা হাসানের পরিকল্পনা ও নির্দেশনায় অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন সাবেক তথ্য সচিব নাসির উদ্দিন আহমেদ।
অধ্যাপক ড. বদরুজ্জামান ভূঁইয়া কাঞ্চন, বাংলাদেশের যে উত্থান তা আমরা গত একযুগে অনেক ভালোভাবেই দেখেছি। বাংলাদেশের এই বর্তমান চিত্রের স্বপ্ন আমাদের জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দেশ স্বাধীন করার আগেই দেখেছিলেন। তিনি স্বপ্ন বুকে ধারণ করে এই দেশকে স্বাধীনতা এনে দিয়েছিলেন। তার আমলে আমরা দেখেছি এই দেশের জিডিপি গ্রোথ ছিল ৭.৫%, বৈদেশিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে উনি অনেক যুগান্তকারী পদক্ষেপ নিয়েছিলেন এবং তারই ধারাবাহিকতায় জননেত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা সারা বাংলাদেশের মানুষকে পুরো বিশ্বের কাছে যেভাবে সম্মানিত করেছেন তা আর বলার অপেক্ষা রাখেনা। করোনা মহামারি বিশ্ব অর্থনীতিতে রীতিমতো ধস নামিয়েছে। অনেক দেশেরই জিডিপির প্রবৃদ্ধি নেতিবাচক ধারায় চলে গেছে। বাংলাদেশের অর্থনীতিতেও শুরুতে করোনা আঘাত হেনেছে। রফতানি আয় কমে গিয়েছিল। রাজস্ব আদায়ের হার কমেছে। কিন্তু বর্তমান অবস্থা অনেক পাল্টে গিয়েছে। আশা করা যায়, ২০২৪ সালের মধ্যেই বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের কাতারে চলে যাবে। কয়েক বছর ধরেই বাংলাদেশ ধারাবাহিকভাবে এগিয়ে চলেছে। অবকাঠামো খাতে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। পদ্মা সেতু এখন দৃশ্যমান বাস্তবতা। বিদ্যুতে দেশ আজ স্বয়ংসম্পূর্ণ। মাথাপিছু আয় দুই হাজার ডলার ছাড়িয়েছে। করোনার মধ্যেও বর্তমান অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে রফতানি আয়ে ভালো প্রবৃদ্ধি হয়েছে। তৈরি পোশাক রফতানি ছাড়া অন্যান্য খাতেও রফতানি বাড়ছে। বাংলাদেশের ওষুধ যাচ্ছে ১৬৬টি দেশে। প্রবাসী আয় উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ছাড়িয়েছে ৪২ বিলিয়ন ডলার। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সবসময় বলে থাকেন, বাংলাদেশের মানুষের রয়েছে আশ্চর্য এক সহনশীল ক্ষমতা এবং ঘাত-প্রতিঘাত সহ্য করে দ্রুত ঘুরে দাঁড়ানোর সক্ষমতা। ১৯৭১ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে সাড়া দিয়ে যে জাতি মাত্র ৯ মাসের মধ্যে স্বাধীনতা অর্জন করতে পারে, যুদ্ধে বিজয় অর্জন করতে পারে- সেই জাতিকে কেউ কখনও দাবিয়ে রাখতে পারবে না, এটা জাতির পিতা নিজেই বলে গেছেন। কাজেই মহামারিতে সৃষ্ট অর্থনৈতিক সংকট দূর করার জন্য জাতির পিতার সেই অমরবাণী বুকে ধারণ করে এগিয়ে যেতে হবে; ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। তাঁর নেতৃত্বে নানামুখী পদক্ষেপ গ্রহণের ফলে ভবিষ্যতে মানুষের আর কোনো সমস্যা থাকবে না। সকলের কষ্ট লাঘব করাটাই বর্তমান সরকারের অন্যতম দায়িত্ব।