লক্ষ্মীপুর-২ আসনের এমপি কাজী শহিদ ইসলাম পাপুলের স্ত্রী সংরক্ষিত আসনের নারী সাংসদ সেলিনা ইসলাম ও তার মেয়ে ওয়াফা ইসলাম আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন পেয়েছেন।
রোববার (২৭ ডিসেম্বর) বিকালে ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ কেএম ইমরুল কায়েশের আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন তারা। এরপর শুনিনি শেষে তাদের জামিন মঞ্জুর করেন আদালত।
এর আগে দুদক ও সিআইডির মামলায় এমপি পাপুল, তার পরিবারসহ ৬ ব্যক্তির দুই প্রতিষ্ঠানের সব সম্পদ জব্দের নির্দেশ দেন আদালত। দুপুরে মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে সিআইডি ও দুদকের আইনজীবীর পৃথক পৃথক আবেদনে সম্পদ ও ব্যাংক হিসাব জব্দের আদেশ দেন আদালত।
এ প্রসঙ্গে দুদক আইনজীবী জানান, পাপুল ও তার স্ত্রী সেলিনা ইসলাম অবৈধভাবে পাপুলের শ্যালিকা জেসমিন প্রধান ও মেয়ে ওয়াফা ইসলামের ব্যাংক হিসাব ব্যবহার করতেন। তাদের কোন পেশা না থাকলেও জেসমিন ও ওয়াফার ব্যাংক হিসাবে যেসব লেনদেন হয় তা মূলত পাপুল ও তার স্ত্রীর। এক্ষেত্রে এনআরবিসি প্রাইমসহ বেশকটি ব্যাংকের ৬১৭ হিসাব ব্যবহার করা হয়।
এছাড়া এনআরবি কমার্শিয়ালসহ তিনটি ব্যাংকে পাপুলের শ্যালিকা জেসমিন প্রধানের নামে পাঁচটি হিসাবে জমা হয় মোট ১৪৮ কোটি ৪১ লাখ টাকা। বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ব্যক্তি ও অনেকের ব্যাংক হিসাব থেকে পাঁচটি হিসাবে ওই পরিমাণ টাকা জমা করা হয়। পরে তা থেকে এরই মধ্যে ১৪৮ কোটি ২১ লাখ টাকা উত্তোলন করে আত্মসাৎ করা হয় বলে উল্লেখ করেন আইনজীবী।
আবেদনে তাদের নামে ৯২টি তফসিলে থাকা সম্পদ ক্রোক করারও আদেশ দিয়েছেন ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক কে এম ইমরুল কায়েস। আবেদনে পাপুল দম্পতির নামে বেনামে ১৪৮ কোটি ২১ লাখ টাকা পাচারের প্রমাণ পেয়েছে দুদকের তদন্ত দল, এমনটাই উল্লেখ করেন আইনজীবী।
অন্য একটি আবেদনে পল্টন থানার সিআইডির মানিলন্ডারিং মামলায় পাপুলসহ ৬ ব্যক্তি ও পাপুলের দুটি প্রতিষ্ঠানের ৫৩টি ব্যাংক একাউন্ট জব্দ করার আদেশ দেন মহানগর মুখ্য হাকিম আদালত। এ আদেশের মাধ্যমে এসব ব্যাংক হিসাব ও সম্পদ কোন ধরনের ক্রয় বিক্রয় বা রূপান্তর করতে পারবেন না আসামীরা।
মানব ও অর্থ পাচারের অভিযোগে চলতি বছরের জুনে লক্ষ্মীপুর-২ আসনের এমপি পাপুলকে গ্রেপ্তার করে কুয়েতের সিআইডি। তিনি বর্তমানে দেশটির কারাগারে আছেন। কুয়েতের বিভিন্ন ব্যাংক হিসাবে পাপুলের নামে জমা থাকা ১৩৮ কোটি টাকা জব্দ করা হয়েছে।