প্রকাশ: রোববার, ২৭ ডিসেম্বর, ২০২০, ৪:০৮ পিএম আপডেট: ২৭.১২.২০২০ ৪:১৬ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমরা যারা রাজনীতি করি, আমাদের ক্ষমতার চেয়ার আর কারাগার খুব পাশাপাশি থাকে। তবে ২০০৭ সালে যেটা হয়েছে, ক্ষমতা ছাড়াও সবার আগে কিন্তু আমাকেই গ্রেফতার করা হয়েছিল। কাজেই সেটা আমরা জানি, রাজনীতি করতে গেলে এটা করতেই হবে। এ জন্য আমরা কারাগারগুলো উন্নত করে যাচ্ছি। কেন্দ্রীয় কারাগারে নতুন ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। সেটা আমরা উদ্বোধন করেছি।
রোববার (২৭ ডিসেম্বর) তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ঢাকার কেরানীগঞ্জে কেন্দ্রীয় কারাগারে মহিলাদের জন্য আলাদা ভবন এবং ২০টি ফায়ার স্টেশনসহ অন্যান্য সেবার উদ্বোধন করে এ সব কথা বলেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, কারাগারে যারা গ্রেফতার হয়ে যায়, তাদের পরিবারগুলো কষ্ট পায়। তারা অপরাধ করে অপরাধী। কিন্তু তারপরও তাদের পরিবারগুলো কষ্ট পায়। এতগুলো মানুষ বেকার বসে থাকবে কেন? সেই জন্য সেখানে তাদের ট্রেনিং করানো, কিছু পণ্য উৎপাদন করানো এবং তাদের উৎপাদিত পণ্য বাজারজাত করার ব্যবস্থা করে দিয়েছি। বাজারজাত করার ফলে যে টাকা আসবে খরচ রেখে (লাভের ৫০ ভাগ) বাকিটা যে উৎপাদন করবে সে পাবে। সে তা নিজে জমাও করতে পারবে, কিছু অংশ পরিবারকেও পাঠাতে পারবে।
তিনি বলেন, আমরা কারাগারে কতগুলো পরিবর্তন এনেছি। আমাদের কারারক্ষীদের কোনও ট্রেনিং ছিল না, তাদের নিরাপত্তারও কোনও ব্যবস্থা ছিল না। এমনকি তাদের থাকারও ভালো ব্যবস্থা ছিল না। নতুন কারাগারে সেই ব্যবস্থাগুলো নেওয়া হয়েছে। আমরা কারাগারগুলোর উন্নতি করে যাচ্ছি।
কারাগারকে সংশোধনাগার হিসেবে গড়ে তুলতে সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের উদ্দেশ্য হলো কারাগারে শুধু অপরাধীদের বন্দি করে রাখা নয়, সঙ্গে সঙ্গে তাদের মন-মানসিকতার পরিবর্তন করা, তাদের কিছু প্রশিক্ষণ দেওয়া, তাদের কিছু শিক্ষা দেওয়া; যাতে তারা বের হয়ে ভবিষ্যতে একই অপরাধে জড়িয়ে না পড়ে।
সংগ্রামী জীবনে বঙ্গবন্ধুর বারবার জেল খাটার কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, শুধু অপরাধ করলেই যে জেলে যায় তা না। ১৯৪৮ সালে যখন আমাদের মাতৃভাষা বাংলার অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছিল, তখন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রতিবাদ করেছিলেন, সেই প্রতিবাদের কারণে কারাগারে যেতে শুরু করেন। তারপর তার জীবনের অনেকটা সময় কারাগারে কাটাতে হয়েছে অত্যন্ত মানবেতরভাবে।
বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে কারাগারে যাওয়ার অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, কারাগারের সঙ্গে সব সময় আমাদের একটা সম্পর্ক। ছোটবেলা থেকেই কারাগারে যাই, সেখানকার ভালোমন্দ অনেক কিছু জানারও সুযোগ হয়।
কারাগারগুলোতে ভার্চুয়াল কোর্ট চালু প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, কেরানীগঞ্জের কারাগারেও ইতোমধ্যে কোর্টরুম তৈরি করা হয়েছে। এভাবে জেলা কারাগারগুলোতেও কোর্টরুম চালু করা হবে। অনলাইনের মাধ্যমে মামলাও পরিচালিত হবে। এখন করোনার সময় সরাসরি কোর্ট চালানো মুশকিল। তাই আমরা ভার্চুয়াল কোর্টের ব্যবস্থা করেছি।
সরকার প্রধান বলেন, প্রত্যেকটি আইন ডিজিটালাইজ করে ফেলা হচ্ছে। যেকোনও মামলার কজ লিস্ট যেটা থাকবে সেটাও অনলাইনে জানা যাবে। প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে সব কাজ যেন আরও সুন্দরভাবে-সুষ্ঠুভাবে হয়, সেই ব্যবস্থা আমরা নিচ্ছি।
মামলার রায় বাংলায় ছাপাতে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, মামলার রায় ইংরেজিতে বের হয়, সেটাকে বাংলা করে ছাপানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে।