গতকাল সকাল ৮টা ২০ মিনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেন ক্যানসার আক্রান্ত অভিনেতা আবদুল কাদের। তার মৃত্যুতে অভিনয় জগতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। শোক প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী। তার বিদায়ের পর গভীর শ্রদ্ধা আর ভালোবাসায় স্মরণ করছেন তাকে সহকর্মীরা। কেউ কেউ অতীত দিনের স্মৃতিচারণা করছেন...
আমাদের প্রায় তিন দশকের সম্পক: হানিফ সংকেত
আমাদের জন্য খুবই কষ্টের খবর। আমরা গভীরভাবে শোকাহত। অক্টোবরের মাঝামাঝি সর্বশেষ তিনি ‘ইত্যাদি’র শুট করেছিলেন। সে সময় তাঁকে খুব অসুস্থ দেখেছি। আমি তাকে বললাম, কী হয়েছে? উনি বললেন, ‘না, কিছু না; কিছু হয়নি। শেষে আমাকে বললেন, ‘আমার শরীরটা ভালো না, দোয়া করবেন। ’ আমরা তার শট একটা-একটা করে বসিয়ে নিয়েছি। যারা পর্বটা দেখেছেন, তারা নিশ্চয়ই বুঝতে পেরেছেন। কাদের ভাইয়ের সঙ্গে আমাদের প্রায় তিন দশকের সম্পর্ক। উনি অত্যন্ত শৃঙ্খলাপূর্ণ জীবনযাপন করতেন। দীর্ঘ তিন দশক তিনি আমাদের মামা-ভাগ্নে পর্বটা করেছেন এবং তিনি খুব জনপ্রিয়। তার সঙ্গে আমার কথা হয়েছে, তিনি যখন চেন্নাই গেলেন। দেশে ফিরেও বিমানবন্দরে নেমে কথা হয়েছে ভিডিও-কলে। অনেক কান্না করলেন। আমাকে বললেন, ‘হানিফ ভাই, জানি না আপনার সঙ্গে আর দেখা হবে কি না। দোয়া করবেন যেন দেখা হয়। অন্যদের কী হয়েছে জানি না, তিনি আমাদের পরিবারের একজন। কাদের ভাই চলে যাওয়া মানে আমাদের পরিবারের একজন চলে যাওয়া।
একটি স্মরণীয় স্মৃতি সূবর্ণা মুস্তাফা:
১৯৮৬, ফারিদী এবং আমি ভারতে যাচ্ছিলাম। বিমানটি পরের দিন ছিল। দরজায় একটা নক ছিল, কাদের ভাই সেখানে ছিলেন তাৎক্ষণিক ক্যামেরা নিয়ে। তিনি আমাদের তা দিয়েছিলেন, ইন্ডিয়া যাবা, সুন্দর সুন্দর জায়েগা দেখবা আর ছবি তুলবা’ এটাই কাদের ভাই। বলা বাহুল্য তখন আমাদের কোনও ক্যামেরা ছিল না। কাদের ভাই এটি সম্পর্কে কীভাবে জানতে পেরেছিলেন আজ অবধি আমার কোনও ধারণা নেই। একটি স্মরণীয় স্মৃতি। শান্তিতে কাদের ভাই। আমরা সবাই তোমাকে ভালবাসি।
তার মতো অভিনেতা :লাকি ইনাম
‘নক্ষত্রের রাত’ নাটকে আমাদেও জুটিকে দর্শক দারুণ ভাবে গ্রহন করেন। তারপর থেকে এখনো অনেকের মুখে সেই নাটকের কথা শুনি। এভাবেই তিনি দর্শকের মনে গেঁথে আছেন। আমি মনে করি, বাংলা নাটকের দর্মকের মনে তিনি সব সময় থাকবেন। অনেক বড় শক্তিমান অভিনেতা তিনি। তার চলে যাওয়া সত্যিই অপূরণীয় ক্ষতি আমাদের।
তিনি আমাকে এত ফিল করতেন:ওমর সানী
আমার প্রযোজিত নাটকের কাজ করেছিলেন ভাইয়া, তিনি আমাকে এত ফিল করতেন বিশেষ করে মৌসুমী কে মৌ বলে ডাকতেন, একজন ভালো অভিনেতা একজন ভালো মানুষ এটা হওয়া একটা বিরল ঘটনা তাই ছিলেন আপনি, শুনে কষ্ট পেলাম সবারই যেতে হবে, আল্লাহ তাকে জান্নাত নসিব করুন।
২০টি বছর একসঙ্গে কাজ করেছি:আফজাল শরীফ
২০টি বছর একসঙ্গে কাজ করেছি। সে আমার আপনের চেয়েও আপন। নিয়মিত যোগাযোগ হতো যে অল্প কজনের সঙ্গে তাদের একজন ছিলেন তিনি। ইত্যাদির ‘লাস্ট পর্বে, তার সঙ্গে আমার সংলাপ ছিলো, ‘আমি না জেনেবুঝে খারাপ করেই যাই। আর তুমি আমারে বাঁচায়া দাও মামা।’ তার সংলাপ ছিলো, ‘ভাইগ্না, আমি বারবার বাঁচাই সত্য, কিন্তু কতদিন এভাবে বাঁচাতে পারবো?’ দুজনের এই সংলাপগুলো আজ বারবার মনে পড়ছে।