শনিবার ২৩ নভেম্বর ২০২৪ ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

শিরোনাম: স্কুলে ভর্তির আবেদন শুরু আজ   স্কুলে ভর্তির আবেদন শুরু আজ   স্কুলে ভর্তির আবেদন শুরু আজ   ফিল্ম সিটি থেকে বাদ দেওয়া হচ্ছে ‘বঙ্গবন্ধুর’ নাম   সিলেটের সাবেক সংসদ সদস্য ইয়াহিয়া গ্রেপ্তার   অনন্য অসাধারণ শেখ হাসিনা আমাদের গর্ব   নরসিংদীতে ‘থার্টি ফার্স্ট’ উপলক্ষে চাঁদা না দেয়ায় ব্যবসায়ীকে কোপালো সন্ত্রাসীরা   
https://www.dailyvorerpata.com/ad/Inner Body.gif
করোনার টিকা নিয়েও হারাম-হালাল বিতর্ক!
ভোরের পাতা ডেস্ক
প্রকাশ: রোববার, ২৭ ডিসেম্বর, ২০২০, ১২:৪৩ পিএম আপডেট: ২৭.১২.২০২০ ১:০৮ পিএম | প্রিন্ট সংস্করণ

করোনা ভাইরাসের টিকা দেওয়া শুরু হয়েছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে। এর মধ্যেই বিতর্ক শুরু হয়েছে করোনার এই টিকা হালাল নাকি হারাম। মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ বিভিন্ন দেশ তো বটেই ইউরোপের বিভিন্ন দেশের মুসলিমরাও এ নিয়ে জড়িয়েছেন বিতর্কে। বায়োএনটেক-ফাইজারের টিকা অনুমোদন দেওয়ার মাধ্যমে বিশ্বে প্রথম করোনা টিকা দেওয়া শুরু করে যুক্তরাজ্য। তখনই শুরু হয় এ বিতর্ক। ইসলামের দৃষ্টিতে শূকরের মতো কিছু পশুকে হারাম বা খাওয়ার জন্য নিষিদ্ধ বলে মনে করা হয়। কিন্তু টিকা তৈরিতে যে কোলেস্টেরল ব্যবহার হয়েছে তার উৎস নিয়েই বাধে বিপত্তি। মুসলিমদের আশঙ্কার জায়গা ছিল এই কোলেস্টেরল শূকরের চর্বি থেকে ব্যবহার না হলেও সঠিকভাবে জবাই না করা অন্য কোনো পশু, যেমন গরুর চর্বি থেকেও তৈরি হতে পারে।

‘টিকা হারাম’ দাবি করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নানা ধরনের প্রচারণার ফলে ব্রিটেনের মুসলিমদের মধ্যে টিকা নেওয়ার বিষয়ে অনাগ্রহ দেখা দিতে পারে, এমন আশঙ্কাও দেখা দেয়। ফলে বিতর্ক শুরুর কয়েকদিনের মাথায় ব্রিটিশ ইসলামিক মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন-বিআইএমএ এই বিষয়ে একটি বিবৃতি প্রকাশ করে। বিবৃতিতে বিআইএমএ জানায়, এ বিষয়ে সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ, ওষুধ প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান এবং সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কথা বলেছেন। তারা জানান, ‘এই টিকা তৈরিতে কোনো পশুজাত দ্রব্য বা কোষ ব্যবহার করা হয়নি।

ব্রিটেনের কয়েকজন মুফতি একটি ফতোয়ায় ‘সর্বশেষ প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী’ বায়োএনটেকের টিকাকে ‘হালাল’ বলে ঘোষণাও দেন। কিন্তু তাতেও থামেনি বিতর্ক। সৌদি আরবসহ বেশ কিছু মুসলিম রাষ্ট্রেও এরই মধ্যে বায়োএনটেকের টিকা দেওয়া শুরু হয়েছে। এরই মধ্যে বিশ্বের সবচেয়ে বড় মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ ইন্দোনেশিয়াতেও শুরু হয়েছে এই বিতর্ক। অক্টোবরেই টিকার বিষয়ে চুক্তি করতে ইন্দোনেশিয়ার বেশ কিছু কূটনীতিক ও ইসলামী আলেম চীনে যান। কূটনীতিকরা যখন দাম, পরিমাণ, সরবরাহ ইত্যাদি নিয়ে আলোচনা করছিলেন, আলেমদের মূল দায়িত্ব ছিল টিকাটি হালাল কিনা তা নিশ্চিত করা। কিন্তু এখন চীনের টিকার বদলে যখন ইউরোপ-আমেরিকার টিকা বাজারে চলে এসেছে, এ নিয়ে বিতর্কও শুরু হয়েছে নতুনভাবে। মজুত ও সরবরাহ সুবিধার জন্য স্ট্যাবিলাইজার হিসেবে অনেক টিকাতেই শূকরের চর্বিজাত জেলাটিন ব্যবহার করা হয়। কিন্তু ইহুদি ও মুসলিম ধর্মে শূকরজাত পণ্য গ্রহণ নিষিদ্ধ থাকায় সুইস প্রতিষ্ঠান নোভার্টিসের মতো অনেকেই এখন বিকল্পের দিকে ঝুঁকছে। সৌদি আরব এবং মালয়েশিয়াভিত্তিক এজে ফার্মা নিজেরাই হালাল টিকা তৈরির কাজ শুরু করেছে।

বায়োএনটেকের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তাদের টিকায় শূকরজাত পণ্য নেই। কিন্তু আগেই অন্যান্য অনেক দেশের ও প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে অনেক মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ চুক্তি করে ফেলায় সেসব দেশে আসা টিকা ‘জেলাটিনমুক্ত’ নাও হতে পারে। সরাসরি শূকর বা হারাম পশুর মাংস ও মাংসজাত পণ্য গ্রহণ ইসলাম ও ইহুদি ধর্মে হারাম। কিন্তু টিকা বা ওষুধে শূকরজাত রাসায়নিকের ব্যবহার হারাম কিনা এ নিয়ে মতভেদ রয়েছে। ব্রিটিশ ইসলামিক মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ড. সালমান ওয়াকার বার্তা সংস্থা এপিকে বলেন, ‘শূকরের চর্বি থেকে যখন জেলাটিন ব্যবহার করা হয়, তখন তা বড় ধরনের রাসায়নিক পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যায়। প্রশ্ন হচ্ছে তখন সেই রাসায়নিক দ্রব্যটিকেও ধর্মীয় দৃষ্টিতে হারাম বলা হবে কিনা।’ অতীতে নানা টিকা নিয়ে একই বিতর্ক হয়েছে। তখন মোটামুটি এক ধরনের ঐক্যমত্যে পৌঁছান বিশেষজ্ঞরা। সিডনি বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক হারুনুর রশীদ বলেন, ‘টিকার ব্যবহার না হলে বড় ধরনের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। ফলে এমন ক্ষেত্রে শূকরজাত জেলাটিন ব্যবহার করা যাবে বলে মোটামুটি অনেকেই একমত হয়েছিলেন।’ একই ধরনের মীমাংসা দিয়েছিলেন গোঁড়া ইহুদি সম্প্রদায়ের নেতারাও।

ইসরায়েলের র‌্যাবাই ডেভিড স্টাভ বলেন, ‘ইহুদি আইন অনুসারে শূকরের মাংস খাওয়া বা মুখের মাধ্যমে গ্রহণ করা নিষিদ্ধ। কিন্তু শূকর থেকে তৈরি অন্য কিছু যদি মুখে না দিয়ে রোগ ঠেকানোর জন্য শরীরে ইনজেকশনের মাধ্যমে দেওয়া হয়, সেটার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।’ কিন্তু ইন্দোনেশিয়াতে অবশ্য ওলামারা অন্যরকম সিদ্ধান্ত নিয়েছেন অতীতে। ২০১৮ সালে হাম ও রুবেলার টিকায় জেলাটিন ব্যবহার করা হয় বলে এই দুই টিকাকে হারাম বলে ঘোষণা করে দেশটির ওলামা কাউন্সিল। সন্তানকে টিকা না দেওয়ারও আহ্বান জানানো হয়। এর পরপরই হামের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয় দেশটিতে। হামে সংক্রমিত হওয়ার হারে বিশ্বে তৃতীয় সর্বোচ্চ দেশে পরিণত হয় ইন্দোনেশিয়া। পরে ওলামা কাউন্সিল তাদের মন্তব্য পালটে ‘টিকা হালাল’ ঘোষণা করলেও তখন সাধারণ মানুষ আর তাদের সন্তানদের টিকা দিতে আগ্রহী হয়ে ওঠেননি। ফলে এখন করোনার টিকা নিয়েও যে বিতর্ক শুরু হয়েছে, তাতে একই ধরনের পরিস্থিতি আবারও সামনে আসতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। ডয়েচে ভেলে বাংলা।



« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
https://www.dailyvorerpata.com/ad/BHousing_Investment_Press_6colX6in20200324140555 (1).jpg
https://www.dailyvorerpata.com/ad/last (2).gif
https://www.dailyvorerpata.com/ad/431205536-ezgif.com-optimize.gif
https://www.dailyvorerpata.com/ad/agrani.gif
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ


সম্পাদক ও প্রকাশক: ড. কাজী এরতেজা হাসান
সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
সাউথ ওয়েস্টার্ন মিডিয়া গ্রুপ


©ডেইলি ভোরের পাতা ডটকম


©ডেইলি ভোরের পাতা ডটকম

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : ৯৩ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫।
ফোন:৮৮-০২-৪১০১০০৮৭, ৪১০১০০৮৬, বিজ্ঞাপন বিভাগ: ৪১০১০০৮৪, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৪১০১০০৮৫
অনলাইন ইমেইল: [email protected] বার্তা ইমেইল:[email protected] বিজ্ঞাপন ইমেইল:[email protected]