রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪ ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

শিরোনাম: স্কুলে ভর্তির আবেদন শুরু আজ   স্কুলে ভর্তির আবেদন শুরু আজ   স্কুলে ভর্তির আবেদন শুরু আজ   ফিল্ম সিটি থেকে বাদ দেওয়া হচ্ছে ‘বঙ্গবন্ধুর’ নাম   সিলেটের সাবেক সংসদ সদস্য ইয়াহিয়া গ্রেপ্তার   অনন্য অসাধারণ শেখ হাসিনা আমাদের গর্ব   নরসিংদীতে ‘থার্টি ফার্স্ট’ উপলক্ষে চাঁদা না দেয়ায় ব্যবসায়ীকে কোপালো সন্ত্রাসীরা   
https://www.dailyvorerpata.com/ad/Inner Body.gif
সীমান্ত হত্যা নিয়ে উদ্বেগ বিজিবি অমূলক নয়
ড. কাজী এরতেজা হাসান
প্রকাশ: রোববার, ২৭ ডিসেম্বর, ২০২০, ১২:৪০ পিএম আপডেট: ২৭.১২.২০২০ ১২:৫৭ পিএম | প্রিন্ট সংস্করণ

সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে বহু বাংলাদেশি নাগরিকের মৃত্যুর ঘটনায় বরাবরই বাংলাদেশ সরকার, ভারত সরকারের কাছে উদ্বেগ জানিয়ে আসছে। কিন্তু এতে সীমান্তে বাংলাদেশি হত্যকাণ্ড থেমে থাকেনি। নানা অজুহাতেই বিএসএফ গুলি করে বাংলাদেশিদের হত্যা করেছে। কিন্তু এমন ঘটনা খুব কমই রয়েছে যে, বিজিবির গুলিতে ভারতীয় কোনো নাগরিক মারা গেছেন। কিন্তু বিপরীত চিত্র বলে দিচ্ছে- বিএসএফের হঠকারী ভূমিকায় সীমান্তে একের পর এক বাংলাদেশি নাগরিক গুলিতে হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছে। বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে যে বন্ধন বা বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে। এই সম্পর্ক থাকা অবস্থায় আমাদের নিরস্ত্র ও নিরপরাধ নাগরিকদের গুলি করে হত্যার ঘটনা মেনে নেওয়া যায় না।

বাংলাদেশ-ভারতের সম্পর্ক ক্ষতিগ্রস্ত করার জন্য এটা করা হচ্ছে কি-না তা ভারত সরকারকে খুঁজে দেখতে হবে। সীমান্তে বাংলাদেশি নাগরিক হত্যাকাণ্ডের শিকার হলে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে সঙ্গে সঙ্গে তার প্রতিবাদ জানানো হয়। কিন্তু আমরা দেখে আসছি আমাদের সরকারের প্রতিবাদকে বিএসএফ খুব একটা যেন গা করেনি। তারপরেও আমাদের সরকার সীমান্তে হত্যাকাণ্ড থামানোর জন্য বারংবার বিএসএফকে আহ্বান জানিয়ে আসছে। সীমানে হত্যাকাণ্ড শূন্যের নিচে নেমে আসে, এটা সকল মহলের চাওয়া বলে আমরা মনে করি। গতকালের দৈনিক পত্রিকাগুলোর প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, মঙ্গলবার থেকে শুরু হওয়া ভারতের গৌহাটিতে বিজিবি-বিএসএফ মহাপরিচালক পর্যায়ের ৫১তম সীমান্ত সম্মেলন হয়েছে। এই সম্মেলন থেকে ইতিবাচক অনেক সিদ্ধান্ত উঠে এসেছে। এবার আশা করা যায়, সম্মেলনে যেসব সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে, তাতে সীমান্তে হত্যাকাণ্ড থামাতে সাহায্য করবে। সম্মেলনে সীমান্ত হত্যাকাণ্ড নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল সাফিনুল ইসলাম। বিপরীতে সীমান্ত হত্যা শূন্যে আনার বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন বিএসএফ প্রধান শ্রী রাকেশ আস্থানা। বিএসএফ প্রধানের এই বক্তব্যকে আমরা সাধুবাদ জানাই। আশা করা যায়, তার এই বক্তব্যের পরে সীমান্তে কোনো হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হবে না। হত্যাকাণ্ডের কারণে আমাদের মধ্যে হতাশা ও দুশ্চিন্তার ছায়া নেমে আসে। হত্যাকাণ্ড বন্ধের ফলে তার পুনরাবৃত্তি আর হবে না। গণমাধ্যমের প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, গত শুক্রবার বিজিবির জনসংযোগ কর্মকর্তা শরিফুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে।  বিজ্ঞপ্তিটি দুই বাহিনীর যৌথ বিবৃতি। এতে বলা হয়, সম্মেলনে বিজিবি মহাপরিচালক সীমান্তে বিএসএফ বা ভারতীয় নাগরিক কিংবা দুর্বৃত্তদের হাতে বাংলাদেশের নিরস্ত্র নাগরিকদের হত্যা, আহত ও মারধরের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেন। বিজিবি মহাপরিচালক বলেন, বাংলাদেশের মানুষ সর্বদা দুই সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মধ্যে বিদ্যমান চমৎকার সম্পর্কের প্রশংসা করে এবং তারা সীমান্তে হত্যা শূন্যে নামিয়ে আনার বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ প্রত্যাশা করেন। মানবাধিকার সমুন্নত এবং অপরাধীদের হত্যার পরিবর্তে নিজ নিজ দেশের প্রচলিত আইনের আওতায় আনার জন্য সর্বাত্মক প্রচেষ্টার আহ্বান জানানো হয়।

জানা গেছে, বিজিবি ডিজি সমন্বিত সীমান্ত ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনার (সিবিএমপি) ওপর গুরুত্বারোপ করে মাদক, বিশেষ করে ইয়াবা পাচার, আগ্নেয়াস্ত্র চোরাচালান, গবাদি পশু, জালমুদ্রা, স্বর্ণ চোরাচালানের মতো আন্তঃসীমান্ত অপরাধের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। একই সঙ্গে এসব অপরাধ দমনে বিএসএফের সহযোগিতা কামনা করেন। তিনি আরও বলেন, ‘অবৈধ মাদক পাচারের ফলে যুব সমাজের মধ্যে মাদকাসক্তি বেড়েছে, যা উভয় দেশের জন্যই বিপজ্জনক এবং এটিকে কার্যকরভাবে মোকাবিলা করা দরকার। উভয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী চোরাকারবারি সম্পর্কিত তাৎক্ষণিক ও দরকারি তথ্য আদান-প্রদান এবং প্রয়োজনে যৌথ অভিযানের বিষয়ে সম্মত হয়েছে।’ দুই দেশের সীমান্ত রক্ষীবাহিনীর এই উদ্যোগ সফল হলে সীমান্তে শান্তি নেমে আসবে। বাংলাদেশি নাগরিক হত্যাকাণ্ড সম্পূর্ণ বন্ধ হবে। তবে একটা কথা বলা জরুরি যে, সীমান্তে কোনো ব্যক্তি বিধিবর্হিভূত কোনো কাণ্ড করে বসলে তাকে সঙ্গে সঙ্গে হত্যা করতে হবে, এর কোনো যৌক্তিকতা থাকতে পারে না। তাকে আইনের আওতায় এনে বিধিসম্মতভাবে শাস্তি দেওয়া যেতে পারে।

বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে যে সৌহার্দপূর্ণ সম্পর্কের প্রতিফলন সীমান্তেও ফুটে ওঠার প্রয়োজন আছে। উল্লেখ্য যে, বিজিবি ডিজি ভারতের মিজোরাম রাজ্যের অভ্যন্তরে বাংলাদেশের পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলের সশস্ত্র আঞ্চলিক বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীর আস্তানার উপস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন এবং এগুলো ধ্বংসে অনুরোধ জানান। এই উদ্বেগ-উৎকণ্ঠাকে ভারত সরকার গুরুত্বের সঙ্গে নেবে বলে আশা করা যায়। বাংলাদেশের ভেতরে কোনো গোষ্ঠি ভারতের মাটি ব্যবহার করে কোনো ধরনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড যাতে চালাতে না পারে সে ব্যাপারে ভারত সরকার যথেষ্ট সচেতন থাকবে বলে আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি।



« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
https://www.dailyvorerpata.com/ad/BHousing_Investment_Press_6colX6in20200324140555 (1).jpg
https://www.dailyvorerpata.com/ad/last (2).gif
https://www.dailyvorerpata.com/ad/431205536-ezgif.com-optimize.gif
https://www.dailyvorerpata.com/ad/agrani.gif
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ


সম্পাদক ও প্রকাশক: ড. কাজী এরতেজা হাসান
সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
সাউথ ওয়েস্টার্ন মিডিয়া গ্রুপ


©ডেইলি ভোরের পাতা ডটকম


©ডেইলি ভোরের পাতা ডটকম

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : ৯৩ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫।
ফোন:৮৮-০২-৪১০১০০৮৭, ৪১০১০০৮৬, বিজ্ঞাপন বিভাগ: ৪১০১০০৮৪, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৪১০১০০৮৫
অনলাইন ইমেইল: [email protected] বার্তা ইমেইল:[email protected] বিজ্ঞাপন ইমেইল:[email protected]