প্রকাশ: শনিবার, ২৬ ডিসেম্বর, ২০২০, ৮:২৫ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
গতবছরের শুরুর দিকে, হঠাৎ নিজেকে আবিষ্কার করলাম অনলাইন জগতের প্রতি আমার প্রবল আগ্রহ! তারপর থেকে শুরু হয় ফ্রিল্যান্সিং নিয়ে ঘাটাঘাটি। ফ্রিল্যান্সিং-এ যুক্ত হয়েছি নিজের ইচ্ছাতেই। কারণ, নিজেই নিজেকে স্বাবলম্বী করার প্রবণতা ছিলো আমার মধ্যে। প্রচুর রিসার্চ করেছি। গুগল, ইউটিউব এবং নিয়মিত ব্লগ পড়েছি। আর উডমির কোর্স করেছি। সর্বোপরি, কাজ শিখে এখন কাজ করছি, আয় করছি এবং প্রতিনিয়ত নতুন নতুন কাজ শিখছি। আলাপচারিতায় এমনটিই জানাচ্ছিলেন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী ফাহমিদা মৌরী ।
রংপুরের এই বাসিন্দা জানান, কাজ শিখতে ৫ মাস সময় লেগেছে। তারপর পুরো ১ মাস মার্কেটপ্লেস নিয়ে রিসার্চ করেছি। গতবছরের জুন মাসে ফাইবারে একাউন্ট খুলি। একাউন্ট খোলার ১৪ দিনের মাথায় প্রথম কাজ পাই ৫ ডলারের। প্রথম অর্ডারে ফাইভ স্টার ফিডব্যাক সহ কাজটা কমপ্লিট করি। তারপর থেকে আমার রাত জাগার গল্প শুরু হয়। আমি মূলত ডিজিটাল মার্কেটিং সেক্টরে কাজ করছি।
পড়াশুনার জন্য বাসার বাহিরে থাকায় প্রথমত কেউ বিষয়টা জানত না। সিএসইতে পড়ায় বাবা প্রথম বর্ষেই ল্যাপটপ কিনে দিয়েছিলো। কিন্তু বিপত্তি টা বাধলো যখন বাসায় জানতে পারলো আমি ফ্রিল্যান্সিং করছি, রাত জাগছি। বাবা রংপুরে গিয়ে আমার ল্যাপটপ নিয়ে আসলো বাসায়। কারণ হচ্ছে, মেয়ে মানুষ এতো রাত জাগা যাবে না, ফ্রিল্যান্সিং করা যাবেনা, সরকারী চাকুরী করতে হবে, কারণ বাবাও সরকারী চাকুরীজীবি। পুরো ১ মাস পরে কান্নাকাটি করে ল্যাপটপ নিতে হয়েছে বাবার কাছ থেকে।
মৌরী আরও বলেন, আমার সফলতার পিছনে সবচেয়ে অবদান আমার নিজের। কারণ, আমি লেগে ছিলাম, কখনো হাল ছাড়িনি। শুরুতে অনেক কষ্ট করেছি,তবে ধৈর্য্য ধরেছি। নারীদের স্বাধীনভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা এখানে সীমিত। কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া পরিবার থেকে নারীদের প্রযুক্তিগত বিষয়গুলোতে উৎসাহ দেওয়া হয় না। জনগণের অর্ধেক নারী। তাঁদের অবহেলিত রেখে আমরা বেশি দূর এগিয়ে যেতে পারব না। আমাদের উচিত সবাইকে সমানতালে এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ করে দেওয়া। নিজেদের জায়গা থেকে নারীদের আস্থা বাড়াতে অনুকূল পরিবেশ তৈরি ও কাজ করার সুযোগ করে দেওয়ার পরামর্শ এই তরুণীর, ভবিষ্যতে একজন সফল উদ্যোক্তা হওয়ার স্বপ্ন দেখেন তিনি ।