প্রকাশ: শুক্রবার, ২৫ ডিসেম্বর, ২০২০, ১১:১৬ পিএম আপডেট: ২৫.১২.২০২০ ১১:২২ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
২৫ ডিসেম্বর খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের বড় উৎসব বড়দিন। এ উপলক্ষে দেশের সবগুলো গির্জা সাজানো হয়েছে নতুন রূপে। তা দেখতে অনেকে ভিড় করছেন গির্জাগুলোতে। খ্রিস্টধর্মের প্রবর্তক যিশুখ্রিস্ট আজকের (২৫ ডিসেম্বর) এই দিনে বেথলেহেম শহরে জন্মগ্রহণ করেন। খ্রিস্ট ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস, সৃষ্টিকর্তার মহিমা প্রচার এবং মানবজাতিকে সত্য ও ন্যায়ের পথে পরিচালনা করার জন্য যিশুখ্রিস্ট জন্ম নিয়েছিলেন। ঠিক একইভাবে আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সব সাম্প্রদায়িক চেতনাকে রুখে দিয়ে একটি অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র গঠনে কাজ করে যাচ্ছেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শকে বুকে ধারণ করে। তাই বলা যায়, ধর্মীয় সম্প্রীতির অনন্য উদাহরণ বাংলাদেশ।
দৈনিক ভোরের পাতার নিয়মিত আয়োজন ভোরের পাতা সংলাপের ১৯৯তম পর্বে এসব কথা বলেন আলোচকরা। শুক্রবার (২৫ ডিসেম্বর) আলোচক হিসাবে উপস্থিত ছিলেন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, রংপুরের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য এবং সংসদ সদস্য গ্লোরিয়া ঝর্ণা সরকার, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়ার ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের সাবেক ডিন অধ্যাপক ড. অরবিন্দ সাহা, বাংলাদেশ বুদ্ধিস্ট ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ভিক্ষু সুনন্দপ্রিয়, যুক্তরাজ্য আওয়ামী যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, এবং সাবেক ছাত্রনেতা জামাল আহমেদ খান। দৈনিক ভোরের পাতা সম্পাদক ও প্রকাশক ড. কাজী এরতেজা হাসানের পরিকল্পনা ও নির্দেশনায় অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন ভোরের পাতার সিনিয়র রিপোর্টার উৎপল দাস।
ভিক্ষু সুনন্দপ্রিয় বলেন, ২৫ ডিসেম্বর বড়দিন। প্রিয় দেশবাসীকে প্রিয় বড়দিনের শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। এই দিন মানবজাতির মুক্তি দাতা প্রভু যিশু খ্রিস্টের শুভ জন্মতিথি। প্রভু যিশু খ্রিস্টের জন্ম হয়েছিল মানুষকে পাপ অন্যায় থেকে মুক্তি দিতে। তিনি সুস্থতা দান করেছিলেন অগণিত রোগাক্রান্ত নারী-পুরুষদেরকে। ভালোবাসা, সেবা, মানুষের ন্যায্যতা দিয়ে তিনি নতুন মানব সমাজ তৈরি করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু বর্তমান বিশ্বে জাতীতে-জাতীতে রেষারেষি, বৈষম্য, হানাহানি দেখতে পাচ্ছি। এমনি সময়ে ২০২০ সালে আবারো নতুন করে এলো শুভ বড়দিন। আমরা জানি ২০২০ যিশু খ্রিস্টের ৫০০ বছর পূর্বে মহামতি গৌতম বুদ্ধের আবির্ভাব হয়েছিল এবং যিশু খ্রিস্টের ৫০০ বছর পরে ইসলাম ধর্মের আগমন হয়েছিল। তার আগে ভারত বর্ষে সনাতন ধর্ম ছিল যাকে এখন হিন্দু ধর্ম বলা হয়। এছাড়া আরও অনেক ছোট বড় ধর্মের লোক নিয়ে আমরা বর্তমান বাংলাদেশে একত্রে বসবাস করছি। আজকে একটা সুন্দর বিষয় নিয়ে আজকের সংলাপের আয়োজন করা হয়েছে। আজকের বাংলাদেশ অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ। বাংলাদেশ যুগ যুগ ধরে অসাম্প্রদায়িক চেতনায় পরিচালিত হয়েছে। আমরা দেখেছি ভাষা আন্দোলন। এখানে একটা ভাষার জন্য অনেকেই আন্দোলন করেছি। এখানে কে হিন্দু, কে মুসলমান, কে বৌদ্ধ- এর কোন ভেদাভেদ ছিলো না। আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে যে মহান মুক্তিযুদ্ধ হয়েছিল সেখানেও আমরা জাতি ধর্ম নির্বিশেষে অসাম্প্রদায়িক চেতনায় সবাই অংশগ্রহণ করেছিল। সেই মুক্তিযুদ্ধের চেতনায়, অসাম্প্রদায়িক চেতনায় বাংলাদেশ পরিচালিত হয়ে আসছে তার ব্যত্যয় আমরা মাঝে মাঝে দেখেছি। আজকে আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার বাণীতে বলেছেন, ধর্ম যার যার, উৎসব সবার। তিনি যথার্থই বলেছেন। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি আমাদের হাজার বছরের ঐতিহ্য। প্রতিটি সম্প্রদায়ের ধর্মীয় উৎসবে তাই এক মহামিলন ঘটে সবার। এবারের বড় দিনে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও ঐতিহ্য রক্ষা করে করোনা পরিস্থিতিতে অন্যরকম এক পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়েছে।