বুধবার ২৭ নভেম্বর ২০২৪ ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

শিরোনাম: স্কুলে ভর্তির আবেদন শুরু আজ   স্কুলে ভর্তির আবেদন শুরু আজ   স্কুলে ভর্তির আবেদন শুরু আজ   ফিল্ম সিটি থেকে বাদ দেওয়া হচ্ছে ‘বঙ্গবন্ধুর’ নাম   সিলেটের সাবেক সংসদ সদস্য ইয়াহিয়া গ্রেপ্তার   অনন্য অসাধারণ শেখ হাসিনা আমাদের গর্ব   নরসিংদীতে ‘থার্টি ফার্স্ট’ উপলক্ষে চাঁদা না দেয়ায় ব্যবসায়ীকে কোপালো সন্ত্রাসীরা   
https://www.dailyvorerpata.com/ad/Inner Body.gif
যে কারণ অবশেষে দেখিয়ে সরে দাঁড়ালেন আকবরের আইনজীবী!
প্রকাশ: শুক্রবার, ২৫ ডিসেম্বর, ২০২০, ৮:১৭ পিএম | অনলাইন সংস্করণ

দেশব্যাপী আলোচিত সিলেটের রায়হান হত্যা মামলার প্রধান অভিযুক্ত বন্দরবাজার ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই (সাময়িক বরখাস্তকৃত) আকবর হোসেন ভূঁইয়ার পক্ষের আইনজীবী সরে দাঁড়িয়েছেন।

শুক্রবার (২৫ ডিসেম্বর) আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. মিসবাউর রহমান (আলম) নিজেই এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

এর আগে গত ১০ ডিসেম্বর তিনি আকবরের পক্ষে ওকালতনামা জমা দেন। এছাড়া সরে দাঁড়ানোর পেছনে কয়েকটি কারণ উল্লেখ করে তিনি খোলা চিঠি লেখেন।

চিঠিটি তুলে ধরা হলো-

বিশ বছরের ওকালতি জীবনে হত্যা-অপহরণসহ অনেক মামলা পরিচালনা করেছি। আমার কাছে রায়হান হত্যা মামলাও তেমনি একটি মামলা ছিল। অধিক অর্থ প্রাপ্তি নয় বরং রায়হানের পক্ষে তার মামলা পরিচালনার জন্য যোগাযোগ করা হলে পেশাগত দায়িত্ববোধ থেকেই মামলাটি গ্রহণ করি।

হেফাজতে মৃত্যু নিবারণ আইনের মামলাটি আমার কাছে ছিল একেবারেই নতুন ধরনের এবং চ্যালেন্জিং। তাই আগ-পিছ না ভেবেই আমি মামলাটি গ্রহণ করি। আমার কাছে মনে হয়েছিল এই মামলাটি আমার পেশাগত জীবনে আরেকটি নতুন পালক সংযুক্ত করবে। সিলেটের আইনাজ্ঞনে এই আইনে ইতিপূর্বে এরুপ কোন মামলা হয় নাই। তাই এই মামলা পরিচালনা করে আমি আমার আইনাজ্ঞগনে পথচলায় অনেক সমৃদ্ধ হতে পারব। অর্থ প্রাপ্তি কখনোই আমার কাছে মূখ্য ছিল না। আকবরের পরিবারের সাথে যোগাযোগ করলে নিশ্চিতভাবেই তার সত্যতা পাওয়া যাবে।

আইনি সেবা পাওয়া প্রতিটি মানুষের মৌলিক অধিকার। কোন অভিযুক্ত ব্যক্তিকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়ে তাকে দণ্ডিত করা যায় না। তদুপরি এই মামলাটি সর্বোচ্চ দণ্ডাদেশের মামলা। এরুপ মামলায় আসামি আইনজীবী নিয়োগে অক্ষম হলে রাষ্ট্র তার পক্ষে আইনজীবী নিয়োগ দিতে বাধ্য।

কোন কারণে যদি আসামীপক্ষ আইনজীবী পেতে ব্যর্থ হয়, তবে পুরো বিচার প্রক্রিয়াই আটকে যাবে। বিচার প্রার্থীই তাতে বরং ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। এই দৃষ্টিকোণ থেকে আকবরের পক্ষে আইনজীবী নিযুক্ত হতে আমি সম্মত হই।

কিন্তু পরবর্তীতে রায়হানের বোন ফেসবুক লাইভে এসে আইনজীবী নিয়োগের আবশ্যকতা স্বীকার করলেও এরুপ নিয়োগের নিন্দা জানিয়ে আবেগঘন বক্তব্য রাখেন। বিচারিক প্রক্রিয়া সম্পর্কে অজ্ঞতার কারণে আসামিপক্ষে আইনজীবী নিয়োগ তিনি ভালোভাবে নেননি। স্বজন হারানো যে কারো পক্ষে এমন আবেগতাড়িত হওয়া খুবই স্বাভাবিক। কিন্তু তার লাইভের প্রতিক্রিয়ায় কিছু মানুষের চরম নেতিবাচক ও অশালীন মন্তব্য আমাকে যারপরনাই হতাশ করেছে।

কিছু অনলাইন পত্রিকা এবং কিছু মানুষ আমার শ্রদ্ধাভাজন সিনিয়রকে জড়িয়ে ও আমার পরিবার সম্পর্কে বিরুপ ও অরুচিকর মন্তব্য করেছে, যা আমার সিনিয়র ও আমার পরিবারকে আহত করেছে। আমার কারণে আমার সিনিয়র বা পরিবার এরূপ স্থুল আক্রমণের শিকার হোক তা কখনোই কাম্য হতে পারে না। তাই আমার শ্রদ্ধাভাজন সিনিয়র এবং পরিবারকে এইরূপ অশালীন ও স্থুল আক্রমণ হতে রক্ষার স্বার্থে আকবরের পক্ষে আইনি লড়াই হতে বিরত হলাম। এবং সে লক্ষ্যে আমি বৃহস্পতিবার (২৪ ডিসেম্বর) আকবরের পক্ষে ইতিপূর্বে দায়েরকৃত ওকালতনামা সারেন্ডার করেছি এবং এ সংক্রান্ত একটি আবেদনও বিজ্ঞ আদালতে দাখিল করেছি।

আমি আবারো সবাইকে এটা নিশ্চিত করতে চাই, অর্থের লোভে নয়, বরং পেশাগত দায়িত্ববোধ থেকেই আমি মামলা পরিচালনায় সম্মত হয়েছিলাম।

সিলেটের আদালত পাড়ায় আমার এই দুই দশকের পথচলায় আমি চেষ্টা করেছি সর্বোচ্চ সততা আর নিষ্ঠার সাথে আইন পেশা পরিচালনা করা। যারা আমাকে চেনেন তারাই এ সম্পর্কে ভালো বলতে পারবেন। এ মামলায় আইনজীবী নিযুক্ত হওয়ায় আমাকে নিয়ে যারা বিরুপ মন্তব্য করেছেন, তাদের স্বজ্ঞাতার্থে বলতে চাই যে, আকবর কোন আইনজীবী না পেলে এই মামলার বিচার হবে না, সেটা যেমন রায়হানের পরিবারের জন্য সুখকর হবে না, তেমনি তা আইনের শাসন প্রতিষ্ঠারও অন্তরায় হবে। সবাই ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন।

প্রসঙ্গত, এর আগে গত ৯ নভেম্বর কানাইঘাটের ভারতীয় সীমান্ত থেকে আকবরকে আটক করা হয়। পরে ১০ নভেম্বর সিলেটের চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. আবুল কাশেমের আদালতে তাকে হাজির করা হয়। পিবিআই সিলেটের তদন্ত কর্মকর্তা মো. আওলাদ হোসাইন ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন করলে আদালত তার ৭ দিনেরই রিমান্ড মঞ্জুর করেন। পরে ১৭ নভেম্বর ফের আদালতে হাজির করা হলে আদালত তাকে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

গত ১১ অক্টোবর বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে নির্যাতনে গুরুতর আহত হন রায়হান নামের ওই যুবক। তাকে ওইদিন সকাল ৬টা ৪০ মিনিটে গুরুতর আহত অবস্থায় সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন বন্দরবাজার ফাঁড়ির এএসআই আশেকে এলাহীসহ পুলিশ সদস্যরা। সকাল ৭টা ৫০ মিনিটে হাসপাতালে মারা যান রায়হান।

ঘটনার পর পুলিশের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছিল, নগরের কাস্টঘরে গণপিটুনিতে রায়হান নিহত হন। তবে পরিবারের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, ফাঁড়িতে পুলিশি নির্যাতনে প্রাণ হারান রায়হান।

এ ঘটনায় রায়হানের স্ত্রী তাহমিনা আক্তার তান্নি বাদী হয়ে কোতোয়ালি থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। পরে সিলেট মহানগর পুলিশের তদন্ত কমিটি ঘটনার সত্যতা পেয়ে বন্দরবাজার ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই আকবরসহ চার পুলিশ সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত ও তিনজনকে প্রত্যাহার করেন। মামলাটি পুলিশ সদর দপ্তরের নির্দেশে পিবিআইয়ের তদন্ত কার্যক্রম চলমান রয়েছে।

একে একে চাঞ্চল্যকর এই মামলায় এসএমপির মোট আট পুলিশ সদস্য সাময়িক বরখাস্ত ও তিনজন প্রত্যাহার হয়েছেন। এছাড়া এ পর্যন্ত এসআই আকবর হোসেন ভুঁইয়াসহ গ্রেপ্তার করা হয়েছে চার পুলিশ সদস্যকে।

একইসঙ্গে রায়হানের বিরুদ্ধে চুরির অভিযোগ দাতা হিসেবে সন্দেহভাজন একজনকেও গ্রেপ্তার করেছে পিবিআই।



« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
https://www.dailyvorerpata.com/ad/BHousing_Investment_Press_6colX6in20200324140555 (1).jpg
https://www.dailyvorerpata.com/ad/last (2).gif
https://www.dailyvorerpata.com/ad/431205536-ezgif.com-optimize.gif
https://www.dailyvorerpata.com/ad/agrani.gif
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ


সম্পাদক ও প্রকাশক: ড. কাজী এরতেজা হাসান
সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
সাউথ ওয়েস্টার্ন মিডিয়া গ্রুপ


©ডেইলি ভোরের পাতা ডটকম


©ডেইলি ভোরের পাতা ডটকম

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : ৯৩ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫।
ফোন:৮৮-০২-৪১০১০০৮৭, ৪১০১০০৮৬, বিজ্ঞাপন বিভাগ: ৪১০১০০৮৪, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৪১০১০০৮৫
অনলাইন ইমেইল: [email protected] বার্তা ইমেইল:[email protected] বিজ্ঞাপন ইমেইল:[email protected]