বাংলাদেশ নিরাপত্তা বাহিনীর সহায়তায় জঙ্গিদের ডেরা থেকে অপহৃত ৩ ব্যক্তিকে উদ্ধার করলো ভারত
প্রকাশ: শুক্রবার, ২৫ ডিসেম্বর, ২০২০, ৩:১০ পিএম আপডেট: ২৫.১২.২০২০ ৩:১২ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
বাংলাদেশের নিরাপত্তা বাহিনীর সহায়তায় ত্রিপুরায় অপহৃতদের ফেরত আসা সম্ভব হয়েছে৷ এতে, দুই দেশের মধ্যে বন্ধুত্বের সম্পর্ক আরো মজবুত হয়েছে৷
বৃহস্পতিবার (২৪ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টা নাগাদ উগ্রপন্থী কবল থেকে মুক্তি পেয়ে ধলাই জেলায় গন্ডাছড়া থানাধীন ডি পি পাড়া বিএসএফ-র আউটপোস্টে পৌছান অপহৃত তিন নির্মাণ শ্রমিক৷ ত্রিপুরা পুলিশ জানিয়েছে, অপহরণের ঘটনার পর থেকে ত্রিপুরা পুলিশ এবং নিরাপত্তা বাহিনীর লাগাতর তল্লাশি অভিযান প্রচন্ড চাপ তৈরি করেছে৷ শুধু তাই নয়, বাংলাদেশ নিরাপত্তা বাহিনী-র জোরদার তল্লাশি অভিযানে অপহৃতদের ফিরে আসতে সহায়ক হয়েছে৷
প্রসঙ্গত, গত ৭ ডিসেম্বর ধলাই জেলার গঙ্গানগর থানাধীন মালদা কুমার রোয়াজাপাড়া এবং হরিয়ামুনি পাড়ার মধ্যবর্তী এলাকায় অবস্থিত ছড়া থেকে পানি আনার সময় এনপিসিসি সাইট সুপারভাইজার সুভাষ ভৌমিক, জেসিবি চালক সুবল দেবনাথ এবং শ্রমিক সর্দার গণপতি ত্রিপুরাকে সশস্ত্র এনএলএফটি জঙ্গিরা অপহরণ করেছিল৷ ওই এলাকায় ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণের কাজ চলছে৷ তাঁরা পানি সংগ্রহে গিয়ে অনেক সময় পার হয়ে গেলেও ফিরে না আসায় অন্যান্য শ্রমিকরা বিষয়টি বিএসএফ আধিকারিকদের নজরে নেন৷ এর পরই তাঁদের খোঁজ শুরু হয়৷
স্থানীয় সূত্রের খবর, অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সুসজ্জিত নিষিদ্ধ ঘোষিত এনএলএফটি-র সাত জঙ্গি ওই শ্রমিকদের অপহরণে এসেছিল৷ পাহাড়ের চূড়া থেকে পাঁচ জঙ্গি নেমে এসে শ্রমিকদের বন্দুকের নলের মুখে অপহরণ করে নিয়ে যায়৷ ওই অপহরণের ঘটনায় পুলিশ গঙ্গানগর থানাধীন মালদাপাড়ার বাসিন্দা জঙ্গি সহযোগী পাঠান মোহন ত্রিপুরা, যতীন্দ্র ত্রিপুরা এবং বৈজয় ত্রিপুরাকে আটক করেছিল৷ তাদের জিজ্ঞাসাবাদে অসংলগ্ণতা ধরা পড়ায় পুলিশ গ্রেফতার করেছে৷
তারপরও ওই তিন শ্রমিককে উদ্ধার সম্ভব হয়নি৷ গতকাল ১৬ দিন বাদে তাঁরা উগ্রপন্থী কবল থেকে ফিরে এসেছে৷ সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টা নাগাদ তাঁরা গন্ডাছড়া থানাধীন ডি পি পাড়া বিএসএফ-র আউটপোস্ট-এ পৌছেছেন৷ পুলিশ জানিয়েছে, ত্রিপুরা পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনীর লাগাতর তল্লাশি অভিযানে চাপ তৈরি হয়েছিল৷ এমনকি বৈরী সহযোগীরাও পুলিশি অভিযানে প্রচন্ড চাপে ছিলেন৷ পাশাপাশি, বাংলাদেশ নিরাপত্তা বাহিনীর জোরদার তল্লাশি অভিযান ওই তিন অপহৃতের ফিরে আসতে সহায়তা করেছে৷
প্রসঙ্গত, ত্রিপুরায় উগ্রপন্থা দমনে অতীতে বাংলাদেশ সরকারের অসামান্য অবদান ছিল৷ বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেদেশে সমস্ত উগ্রপন্থী ঘাঁটি গুড়িয়ে দিয়েছিলেন৷ তাঁর উগ্রপন্থী বিরোধী লাগাতর অভিযানে জঙ্গিরা স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে বাধ্য হয়েছিল৷ আবারো ত্রিপুরায় উগ্রপন্থার আস্ফালনে বাংলাদেশ পরম উপকারী বন্ধুর মতো সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে৷