প্রকাশ: শুক্রবার, ২৫ ডিসেম্বর, ২০২০, ১২:০০ এএম আপডেট: ২৫.১২.২০২০ ১:২৪ পিএম | প্রিন্ট সংস্করণ
কারো
বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ পেলে তার বক্তব্য শোনার জন্য দুর্নীতি দমন
কমিশন (দুদক) নোটিস দিতে পারে। দুদক আইনের মধ্যে থেকে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে
জিজ্ঞাসাবাদের ক্ষমতা দুদকের রয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করে দুদকের
দেওয়া নোটিসের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল জান্নাতুল
ফেরদৌসী রুপার রিট খারিজ করে দেওয়া আদেশের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপিতে এমন
পর্যবেক্ষণ দিয়েছেন হাইকোর্ট। দুদকের আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান জানান,
গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে আদেশের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি পেয়েছেন। তিনি বলেন,
‘রায়ে আদালত উল্লেখ করেছেন নোটিসটা একটা রিকোয়েস্ট। এতে ডেপুটি অ্যাটর্নি
জেনারেলের মৌলিক অধিকার খর্ব হয়নি। এ নোটিস কমপ্লাই করা উচিত। আর এ নোটিস
কমপ্লাই করার জন্য ২৭ জানুয়ারির মধ্যে হাজির হতে নির্দেশ দিয়েছেন।
পর্যবেক্ষণে আদালত বলেছেন, দুর্নীতি বিষয়ে যে কোনো অভিযোগ পেলে অভিযোগের
সূত্র ধরে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে নোটিস দেওয়ার আইনি এখতিয়ার রাখে দুদক। ’
দুদক
আইনের ২২ ধারায় বলা হয়েছে, দুর্নীতি বিষয়ক কোনো অভিযোগের অনুসন্ধান বা
তদন্ত চলাকালে কমিশন যদি মনে করে যে, অভিযোগের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কোনো
ব্যক্তির বক্তব্য শোনা প্রয়োজন, তাহলে কমিশন উক্ত ব্যক্তিকে শুনানির
যুক্তিসঙ্গত সুযোগ দেবে। গত ৩ ডিসেম্বর বিচারপতি মো. মঈনুল ইসলাম চৌধুরী ও
বিচারপতি একেএম জহিরুল হকের হাইকোর্ট বেঞ্চ রিটটি সরাসরি খারিজ করে আদেশ
দেন। আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী শফিক আহমেদ, জেড আই খান
পান্না, সালাহ উদ্দিন দোলন, সুরাইয়া বেগম, মাহবুব শফিক। গত ২৮ অক্টোবর
দুদকের প্রধান কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ ইব্রাহিম স্বাক্ষরিত এক
চিঠিতে তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৪ নভেম্বর দুদকে হাজির হতে বলা হয়। ওই
চিঠিতে অভিযোগের সংক্ষিপ্ত বিবরণে বলা হয়, জান্নাতুল ফেরদৌসী রুপার
বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম, দুর্নীতি, ক্ষমতার অপব্যবহার ও জাল জালিয়াতির
মাধ্যমে ঘুষ নিয়ে জি কে শামীমসহ বিভিন্ন আসামির সঙ্গে আঁতাত করে জামিন
করিয়ে বিপুল অর্থ হাতিয়ে নেওয়াসহ জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ
রয়েছে। এ অবস্থায় উল্লিখিত অভিযোগ বিষয়ে বক্তব্য দেওয়ার লক্ষ্যে আগামী ৪
নভেম্বর সকাল ১০টায় রেকর্ডপত্র/কাগজপত্রসহ দুদকে হাজির হওয়ার জন্য অনুরোধ
করা হলো। এর বিরুদ্ধে রিট করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল। আবেদনে নোটিশের
কার্যক্রম স্থগিত চেয়ে রুল জারির আর্জি জানানো হয়।
আবেদনে স্বরাষ্ট্র
সচিব, দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান, দুদকের মহাপরিচালক (বিশেষ
অনুসন্ধান ও তদন্ত-২) এবং উপ-পরিচালককে (বিশেষ অনুসন্ধান ও তদন্ত-২) বিবাদী
করা হয়। পরে তার অসুস্থতার কারণে ৩ নভেম্বর শুনানি নিয়ে ৩ ডিসেম্বর
পর্যন্ত রিটটি মুলতবি করেছিলেন হাইকোর্ট। ওই দিন খুরশীদ আলম খান জানান,
আদালত ৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত রিট শুনানি মুলতবি করেছেন। পিটিশনার অসুস্থ।
এজন্য দুদকে হাজিরে সময় চাইলে ৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত তাকে সময় দিতে বলেছেন
আদালত। পরে আবেদনের পর দুদক তাকে সময় দেন। এদিকে নির্ধারিত দিনে ৩ ডিসেম্বর
বৃহস্পতিবার আবেদনটি ফের কার্যতালিকায় ওঠে। শুনানি শেষে রিট আবেদনটি খারিজ
করে দেন আদালত।