প্রকাশ: শুক্রবার, ২৫ ডিসেম্বর, ২০২০, ১২:০০ এএম আপডেট: ২৫.১২.২০২০ ১:১৮ পিএম | প্রিন্ট সংস্করণ
ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের (ঢাবি) উপাচার্য অধ্যাপক মো. আখতারুজ্জামান বলেছেন, মহামারিকালে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলো খুলে দেওয়ার ক্ষেত্রে তারা সরকারি সিদ্ধান্তের বাইরে যেতে পারছেন না। এদিকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ঢাবির হল খুলে দেওয়ার দাবি নিয়ে আন্দোল মুখর হয়ে উঠছে শিক্ষার্থীরা। সরকারি সিদ্ধান্তে গত মার্চ মাস থেকে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে করোনার আক্রমণ থেকে বাঁচার জন্য। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এর মধ্যে স্নাতক ও স্নাতকোত্তরের সমাপনী এবং বিসিএস পরীক্ষা নেওয়ার ঘোষণা দিলেও আবাসিক হলগুলো বন্ধই রেখেছে।
শিক্ষার্থীরা পরীক্ষার রুটিন প্রকাশ করার পর উচ্ছ্বসিত হলেও আবাসিক হল বন্ধ থাকায় ঢাকায় এসে কোথায় থেকে পরীক্ষা দেবে, তা নিয়ে দুঃশ্চিন্তায় পড়ে যায়। আবাসিক হলগুলো শুধু পরীক্ষার্থীদের জন্য হলেও খুলে দেওয়ার দাবি তুলেছে শিক্ষার্থীরা। তাদের সমর্থন করছে বিভিন্ন ছাত্র সংগঠন। পরীক্ষার্থীদের জন্য হল খোলার দাবিতে গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে ছাত্রলীগ, প্রগতিশীল ছাত্রজোটের নেতারা উপাচার্য কার্যালয়ে গিয়ে অধ্যাপক আখতারুজ্জামানের সঙ্গে দেখা করে তাদের দাবি জানায়। উপাচার্য বলেন, শিক্ষার্থীরা হল খোলার দাবি জানালেও আমরা সিদ্ধান্ত নিতে পারি না। এমন পরিস্থিতিতে হল খুলতে জাতীয় সিদ্ধান্ত লাগবে। সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ১৬ জানুয়ারি পর্যন্ত বন্ধ রাখার ঘোষণা রয়েছে। পরিস্থিতির উপর নির্ভর করে সরকার সিদ্ধান্ত নেবে।
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ২৬ ডিসেম্বর থেকে স্নাতক ফাইনাল ও স্নাতকোত্তরের পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। পরীক্ষা শুরু করার আগেই শিক্ষার্থীদের জন্য আবাসিক হল খোলার দাবিতে ক্যাম্পাসে মিছিল, সমাবেশের পর স্মারকলিপি নিয়ে উপাচার্য কার্যালয় ঘেরাও করে প্রগতিশীল ছাত্রজোট। পরে উপাচার্যের সঙ্গে বৈঠক করে চার দফা দাবিতে স্মারকলিপি দেয় জোটের নেতারা। ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি ফয়েজ উল্লাহ, সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের সভাপতি মাসুদ রানা ও সাধারণ সম্পাদক নাসিরুদ্দিন প্রিন্স এসময় উপস্থিত ছিলেন। প্রগতিশীল ছাত্রজোট তাদের দাবির মধ্যে বলেছে, প্রশাসনিক ব্যবস্থাপনায় ছাত্রলীগের দখলদারিত্ব মুক্ত করে অবিলম্বে হল খুলে দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। বেতন ফি মওকুফসহ অতিরিক্ত হারে সেশন ফি ও অন্যান্য ফি এবং জরিমানা নেওয়া বন্ধ করতে হবে। পরিবেশ পরিষদের সভা আহ্বান করে বিশ্ববিদ্যালয় খোলার রোডম্যাপ ঘোষণা করতে হবে। গত ১৩ ডিসেম্বর উপাচার্যকে স্মারকলিপি দিয়েছিল বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ। সাড়া না দেখে বৃহস্পতিবার ছাত্রলীগের বিশ্ববিদ্যালয় সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাস ও সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেনের নেতৃত্বে সংগঠনের নেতারা উপাচার্যের সঙ্গে দেখা করতে যান।
উপাচার্য আখতারুজ্জামান বলেন, শিক্ষার্থীদের কষ্টের চেয়ে এই মহামারিতে স্বাস্থ্যঝুঁকি ও নিরাপত্তার বিষয়টা বেশি গুরুত্বপূর্ণ। আমার এই দাবির সাথে দ্বিমত নেই। তবে এটি যদি স্বাভাবিক বন্ধ হতো, তাহলে আমরা সিদ্ধান্ত নিতে পারতাম। স্বাভাবিক না বিষটি। পুরো দেশকে আমরা অন্যদিকে নিয়ে যেতে পারি না। কেউ এটাকে বলবে ট্রাম্পের মতো আচরণ। এই বিষয়গুলো মাথায় রেখে হল খুলতে গেলে জাতীয় সিদ্ধান্ত লাগবে। স্বাস্থ্য অধিদফতরের সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞদের মতামত লাগবে। এদিকে গত বুধবার সকাল ১১টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হল খোলার দাবিতে রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে টানা অবস্থান কর্মসূচি পালন করছে বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের নেতাকর্মীরা। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত সেখানে অবস্থান কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দিয়েছে তারা।