প্রকাশ: শুক্রবার, ২৫ ডিসেম্বর, ২০২০, ১২:০০ এএম আপডেট: ২৫.১২.২০২০ ১:১৯ পিএম | প্রিন্ট সংস্করণ
কোভিড-১৯ অর্থাৎ করোনাভাইরাসের রূপান্তরিত রূপ বাংলাদেশেও শনাক্ত হয়েছে বলে দাবি করেছেন বিজ্ঞানীরা। নতুন এই ভাইরাসের সঙ্গে যুক্তরাজ্যে পাওয়া নতুন করোনা ভাইরাসের মিল আছে। বিবিসি বাংলার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদ বা বিসিএসআইআরের বিজ্ঞানীরা বলছেন, করোনা ভাইরাসের নতুন একটি স্ট্রেইন বাংলাদেশে শনাক্ত হয়েছে, যেটির সঙ্গে সম্প্রতি যুক্তরাজ্যে পাওয়া নতুন ধরনের করোনাভাইরাসের সাদৃশ্য রয়েছে।
বিসিএসআইআরের বিজ্ঞানীরা গত মাসে ১৭টি নতুন জিনোম সিকোয়েন্স পরীক্ষা করে পাঁচটিতে করোনা ভাইরাসের নতুন ধরনের এই স্ট্রেইন শনাক্ত করেন বলে নিশ্চিত করেছেন প্রতিষ্ঠানটির প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. সেলিম খান।
তিনি বলেন, করোনা ভাইরাসের এই নতুন স্ট্রেইন আমরা বাংলাদেশে দুই মাস আগেই পেয়েছি। আমাদের পর এ নতুন স্ট্রেইন ইংল্যান্ড পেয়েছে। ইংল্যান্ড নভেম্বর মাসের মাঝামাঝি সময়ে নতুন স্ট্রেইন পায়। এই দুইমাসে আমাদের দেশে করোনা ভাইরাসের নতুন কোনো ঘটনা ঘটেনি, সবকিছুই ঠিক আছে।
ড. সেলিম খান বলেন, ‘ইংল্যান্ডে যখন হঠাৎ করে করোনার সংক্রমণ বেড়ে যায়, তখন তারা গবেষণা করে দেখে, নতুন স্ট্রেইনের সঙ্গে আরও কিছু মিউটেশন হয়েছে। ইংল্যান্ড যখন এটা নিয়ে ফলাফল প্রকাশ করে, তখন আমরা মিলিয়ে দেখি, তাদের ওই স্ট্রেইনের সঙ্গে আমাদের দেশে দুমাস আগে শনাক্ত হওয়া স্ট্রেইনের কিছুটা মিল আছে। ওই স্ট্রেইন ছিল একটা নতুন ধরনের মিউটেশন। এই স্ট্রেইনের যে প্রধান মিউটেশন ছিল, তা আমরা দেশে অক্টোবর মাসের স্যাম্পলে পেয়েছি।’
করোনা ভাইরাসের নতুন স্ট্রেইন নিয়ে দেশে গবেষণা না হওয়ার কারণ সম্পর্কে তিনি বলেন, আমাদের দেশে নতুন এ স্ট্রেইনের কোনো বৈশিষ্ট্য লক্ষ্য করা যায়নি। তাদের দেশে (ব্রিটেন) দ্রুত সংক্রমণ বাড়ার ফলে, তারা এটা নিয়ে গবেষণা করেছে। আমাদের দেশে যেহেতু এই স্ট্রেইন সংক্রমণ বাড়ায়নি, তাই আমরা এটা নিয়ে গবেষণা করিনি। প্রতিনিয়ত করোনা ভাইরাসের মিউটেশন হচ্ছে, তবে সব মিউটেশনেতো আর সিরিয়াস কোনো ক্ষতি হচ্ছে না। তবে ড. সেলিম করোনার নতুন এ ধরন সম্পর্কে আশার কথা শোনালেন। তিনি বলেন, নতুন এই মিউটেশন তেমন কোনো ক্ষতি করেনি, আশা করছি তেমন কোনো ক্ষতি ভবিষ্যতেও ঘটাবেও না। যেহেতু ২ থেকে আড়াই মাস পার হয়ে গেছে, তাই ক্ষতির আশঙ্কা কম।
সম্প্রতি যুক্তরাজ্যে করোনা ভাইরাসের নতুন যে একটি স্ট্রেইন পাওয়া গেছে, সেটি আগের স্ট্রেইনটির তুলনায় ৭০ শতাংশ বেশি গতিতে ছড়ায় বলে জানিয়েছেন গবেষকরা। এরইমধ্যে যুক্তরাজ্যে নতুন করোনা ভাইরাস সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়েছে। সরকারের পক্ষ থেকেই বলা হয়েছে, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে। এ অবস্থায় ইউরোপের বিভিন্ন দেশ ব্রিটেনের সঙ্গে সীমান্ত বন্ধ করে দিয়েছে। বন্ধ করেছে ফ্লাইটও। এরইমধ্যে দেশটিতে করোনার টিকা কার্যক্রমও চলছে।