প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ২৪ ডিসেম্বর, ২০২০, ১:৫৮ এএম | প্রিন্ট সংস্করণ
বিতর্কিত দক্ষিণ চীন সাগরের নানশা দ্বীপপুঞ্জের উপকূল থেকে একটি মার্কিন যুদ্ধজাহাজকে তাড়িয়ে দিয়েছে বেইজিং। চীনা সেনাবাহিনীর বরাত দিয়ে আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম আল-মায়াদিন জানিয়েছে, বেইজিংয়ের অনুমতি না নিয়েই মার্কিন যুদ্ধজাহাজটি নানশা দ্বীপপুঞ্জের জলসীমায় ঢুকে পড়ায় সেটিকে তাড়িয়ে দেয়া হয়েছে। গত মঙ্গলবার চীনের সেনাবাহিনী এই দাবি করে বলে বার্তা সংস্থা পিটিআইয়ের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়। চীনের পিপলস লিবারেশন আর্মির (পিএলএ) দক্ষিণাঞ্চলীয় কমান্ড বলেছে, ইউএসএস জন এস ম্যাককেইন চীনা সরকারের অনুমোদন ছাড়াই চীনের নানশা দ্বীপপুঞ্জের কাছের জলভাগে প্রবেশ করেছিল। পিএলএর দক্ষিণাঞ্চলীয় কমান্ডের মুখপাত্র সিনিয়র কর্নেল তিয়ান জুনলি বলেন, চীন অধিকৃত জলসীমায় মার্কিন যুদ্ধজাহাজের অনধিকার প্রবেশের পরিপ্রেক্ষিতে তাঁরা নৌ ও বিমানবাহিনীকে সংগঠিত করেন। মার্কিন যুদ্ধজাহাজটিকে প্রথমে সতর্ক করা হয়। পরে সংশ্লিষ্ট এলাকা থেকে যুদ্ধজাহাজটিকে বহিষ্কার করা হয়। সামরিক মহড়া চালাতে চীনের বিমানবাহী রণতরি দক্ষিণ চীন সাগরে প্রবেশের এক দিন পরই সেখানে যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধজাহাজের উপস্থিতির ঘটনা ঘটল। পিএলএর দক্ষিণাঞ্চলীয় কমান্ডের মুখপাত্র বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধজাহাজের অনধিকার প্রবেশের বিষয়টি চীনের সার্বভৌমত্ব ও নিরাপত্তার প্রতি গুরুতর হুমকি। যুক্তরাষ্ট্রের এই ধরনের কর্মকা- দক্ষিণ চীন সাগরে শান্তি ও স্থিতিশীলতা মারাত্মকভাবে ব্যাহত করছে। কমান্ডের সেনারা সব সময় সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। জাতীয় সার্বভৌমত্ব ও নিরাপত্তার পাশাপাশি অঞ্চলটির শান্তি-স্থিতিশীলতা রক্ষায় তারা তাদের দায়িত্ব দৃঢ়তার সঙ্গে পালন করবে। সবশেষ এই ঘটনা সম্পর্কে চীনা সেনাবাহিনীর অফিশিয়াল ওয়েবসাইটে বিশেষজ্ঞদের বরাতে বলা হয়েছে, অঞ্চলটির ওপর নিয়ন্ত্রণের বিষয়টি আবার প্রদর্শন করল পিএলএ। একই সঙ্গে তারা জাতীয় সার্বভৌমত্ব ও নিরাপত্তা সুরক্ষার সক্ষমতাও দেখাল। এর আগে গত শনিবার একটি মার্কিন যুদ্ধজাহাজ তাইওয়ান প্রণালী অতিক্রম করেছে বলে দেশটির গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছিল। চীন বহুবার যুক্তরাষ্ট্রকে সতর্ক করে দিয়ে বলেছে, ওয়াশিংটন যেন চীন, তাইওয়ান ও হংকংয়ের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করে। একই সঙ্গে দক্ষিণ চীন সাগরে সামরিক উপস্থিতি বন্ধ করার আহ্বানও জানানো হয়েছে। চীন মনে করে ওই অঞ্চলে উত্তেজনা সৃষ্টি ও নিরাপত্তাহীনতার প্রধান কারণ মার্কিন সামরিক উপস্থিতি। দক্ষিণ চীন সাগরের প্রায় পুরোটার মালিকানা দাবি করে চীন। কিন্তু ভিয়েতনাম, ফিলিপাইন, মালয়েশিয়া, ব্রুনাই ও তাইওয়ানও এই সাগরের নিজ নিজ উপকূলীয় অঞ্চলের মালিকানা দাবি করে আসছে। বেইজিং বলছে, মার্কিন সরকারই চীনের প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলোকে বেইজিংয়ের বিরুদ্ধে উসকানি দিচ্ছে। আমেরিকার কারণেই ফিলিপাইন, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, ভিয়েতনাম ও ব্রুনাইয়ের সঙ্গে চীনের সম্পর্কের উন্নতি হচ্ছে না। আমেরিকা দক্ষিণ চীন সাগরকে আন্তর্জাতিক জলসীমা বলে দাবি করে এবং ওই সাগরে যুদ্ধজাহাজ চালানোকে নিজেদের অধিকার বলে মনে করে।