প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ২৪ ডিসেম্বর, ২০২০, ৯:১০ এএম আপডেট: ২৪.১২.২০২০ ১:০৯ পিএম | প্রিন্ট সংস্করণ
রাজধানীকে যানজটমুক্ত রাখতে ও গণপরিবহনে শৃঙ্খলা ফেরাতে ঢাকার উপকণ্ঠে নতুন করে চারটি আন্তঃজেলা বাস টার্মিনাল তৈরি করা হবে বলে জানিয়েছেন ঢাকা দক্ষিণের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস। গতকাল বুধবার সাভারের ভাটুলিয়া ও বিরুলিয়া এলাকা পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের এই তিনি কথা বলেন। এসময় তার সাথে ছিলেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আতিকুল ইসলাম। মহাখালী, গাবতলী ও সায়েদাবাদকে সিটি টার্মিনাল হিসেবে রেখে ঢাকার চার সীমান্তে নতুন করে আরও চারটি আন্তঃজেলা টার্মিনাল করা হবে করার কথা কলা হয়। তিনি বলেছেন, রাজধানীর ভেতরে যাতে আন্তঃজেলা বাসগুলো প্রবেশ করতে না হয়, সেজন্যই এমন পরিকল্পনা করা হচ্ছে। রাজধানী ঢাকাকে যানজটমুক্ত রাখতে ও গণপরিবহনে শৃঙ্খলা ফেরাতে গঠিত বাস রুট রেশনালাইজেশন কমিটির কার্যক্রম বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে তারা এই পরিদর্শনে নেমেছেন।
মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস জানান, রাজধানী ঢাকার পুরো গণপরিবহন ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজাতে চাই। আর সেজন্য সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। আন্তঃজেলা বাস টার্মিনাল নির্মাণের জন্য কমিটির গত সভায় ইতোমধ্যে দশটি জায়গা নির্ধারণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি। সেখান থেকে আন্তঃজেলা বাস টার্মিনাল স্থাপনের জন্য বেছে বেছে আমরা চারটি (জায়গা) পরিদর্শন করেছি। আমরা এই চারটি স্থান নিয়ে প্রয়োজনে আরও পর্যালোচনা করবো। যারমধ্যে ভাটুলিয়া-বিরুলিয়ায় একটি স্থান পরিদর্শন করেছি। এরপর হেমায়েতপুরে আরেকটি জায়গা দেখা হবে। এছাড়া, কাঁচপুর এবং কেরানীগঞ্জে দুটি জায়গা নির্ধারণ করা হয়েছে। এগুলো দেখে আগামী জানুয়ারি মাসে অনুষ্ঠিতব্য সভায় চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া আসতে পারে। এরপর আমাদের এই পদক্ষেপ যাবে মন্ত্রণালয়ে। আমাদের চাই ঢাকা শহরের চিরচেনা বর্তমান যানজটে জনগণ বিরক্ত ও বিব্রত। তারা কিছু না বললেও আমরা বুঝি। আমরা চাই ঢাকাকে যানজটের চাপ থেকে পুরাপুরি মুক্ত করতে। তাপস বলেন, সিটি বাস টার্মিনাল আমাদের কার্যকর নেই। তাই সবকিছু মিলিয়ে সামগ্রিকভাবে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার জন্য আমাদের এই পদক্ষেপ। আগামী বছর সুনির্দিষ্ট রূপরেখা পাওয়া সাপেক্ষে কাজগুলো আরম্ভ করা সম্ভব হবে। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আতিকুল ইসলাম জানন, ঘাটারচর থেকে মতিঝিল পর্যন্ত রুটে আগে ১৬০টি বাস চালায় ২৯টি বেশি কোম্পানি। তাদের আমরা একটি কোম্পানির মাধ্যমে নিয়ে আসার উদ্যোগ নিয়েছি। এ বিষয়ে আমাদের সাথে বাস মালিক-শ্রমিকদের একটা কথা হয়েছে। আমরা চাই সবাই শৃঙ্খলার মধ্যে কাজ করেন। শহরের বাস শহরের মধ্যে দিবে যাতায়াত করবে। আর বিভিন্ন জেলা থেকে আগত বাস রাজধানীর এরিয়া থেকে একটু দূরে একটি জায়গায় এসে থেমে যাবে। তারা ভেতরে ঢুকতে পারবে না। শহরের বাসের মধ্যে প্রতিযোগিতা, আন্তঃজেলা বাসের মধ্যে প্রতিযোগিতা হচ্ছে। এতে আমাদের ট্রাফিক ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে, ব্যাপক যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে।
এক প্রশ্নে শেখ ফজলে নূর তাপস বলেন, আন্তঃজেলা বাস টার্মিনাল নির্মাণের জন্য প্রাথমিকভাবে দশটি জায়গা নির্ধারণ করেছেন বিশেষজ্ঞরা। আমরা সেখান থেকে কমিয়ে চারটি ঠিক করেছি। বাকি জায়গাগুলো অনেক দূরে হয়ে যায়। সেব জায়গায় আন্তঃবাস টার্মিনাল সম্ভব না। এজন্য সেখান থেকে মাত্র চারটি জাগা বেছে নিয়েছি। যদি সকলের মতামতের ভিত্তিতে সুনির্দিষ্ট করতে পারি এই চারটি জায়গা, তাহলে আগামী বছর থেকে টার্মিনাল নির্মাণে বাজেট নিয়ে কাজ শুরু করব। যারা আন্তঃজেলা বাস ব্যবহার করবে তারা চাইলে মেট্রোরেল ব্যবহার করবে, না হয় অন্য পরিবহন ব্যবহার করবে। আমরা চাই গাবতলী, মহাখালী এবং সায়েদাবাদ সিটি টার্মিনাল হিসেবে পরিচালিত হবে। জেলা থেকে আসা বাস এখানে আসবে না। তাহলে ঢাকার ভেতরে অনেক যানজট কমে যাবে।