রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪ ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

শিরোনাম: স্কুলে ভর্তির আবেদন শুরু আজ   স্কুলে ভর্তির আবেদন শুরু আজ   স্কুলে ভর্তির আবেদন শুরু আজ   ফিল্ম সিটি থেকে বাদ দেওয়া হচ্ছে ‘বঙ্গবন্ধুর’ নাম   সিলেটের সাবেক সংসদ সদস্য ইয়াহিয়া গ্রেপ্তার   অনন্য অসাধারণ শেখ হাসিনা আমাদের গর্ব   নরসিংদীতে ‘থার্টি ফার্স্ট’ উপলক্ষে চাঁদা না দেয়ায় ব্যবসায়ীকে কোপালো সন্ত্রাসীরা   
https://www.dailyvorerpata.com/ad/Inner Body.gif
সীমান্তে বাংলাদেশি হত্যাকাণ্ড: বিএসএফ মহাপরিচালকের কথা ও কাজে যেন মিল থাকে
ড. কাজী এরতেজা হাসান
প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ২৪ ডিসেম্বর, ২০২০, ১০:৫১ এএম আপডেট: ২৪.১২.২০২০ ১:১২ পিএম | প্রিন্ট সংস্করণ

ভারতের বিএসএফ মহাপরিচালক সীমান্ত সম্মেলনে হত্যা বন্ধে ফের আশ্বাসের বাণী শুনিয়েছেন। আশা করা যায়, বিএসএফ মহাপরিচালকের কথা যথাযথভাবে কার্যকর হবে। বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে নিরপরাধ বাংলাদেশিদের বিএসএফের গুলিতে আর প্রাণ যাবে না। দুঃখজনক হলো বিএসএফ ইতোপূর্বে বহুবার সীমান্ত হত্যাকাণ্ড ঘটাবে না বলে প্রতিশ্রুতি দিলেও তা রক্ষা হয়নি। এতে দু’দেশের সম্পর্কে বিরূপ কোনো প্রভাব পড়বে না। তবে এ নিয়ে দেশের মধ্যে নানা অপশক্তি সরকারকে সমালোচনার তীরে বিদ্ধ করে আসছে বারবার। ভারত সরকারকে এ দিকটি বিবেচনায় রেখে সীমান্তে কোনো ধরনের হত্যাকাণ্ড যাতে সংঘটিত হতে না পারে সে দিকে তীক্ষè নজর রাখাটা একান্তভাবে জরুরি। তার পাশাপাশি সীমান্তে হত্যাকাণ্ড যাতে শূন্যের কোটায় নেমে আসে সেই চেষ্টা উভয় দেশের সীমান্ত রক্ষীদের চেষ্টা চালিয়ে যাওয়া উচিত।

মনে রাখা প্রয়োজন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শাসনামলে সর্বোচ্চ চূড়া স্পর্শ করেছে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের। এই সম্পর্ক শিথিল হয় এমন কোনো কর্মকাণ্ড কোনো পক্ষ থেকেই হওয়া উচিত নয়। বাংলাদেশের অপশক্তিরা বরাবরই বলে আসছে যে, সীমান্তে বিএসএফ বাংলাদেশের নাগরিকদের পাখির মতো গুলি করে মারছে। অপশক্তিদের এ কথার প্রকৃত সত্যতা খুঁজে পাওয়া যাবে না। তারপরও তর্জনি তুলে এই ধরনের অভিযোগ করে আসছে তারা। এ বিষয়গুলো সম্পর্কে সবার সচেতন থাকাটা জরুরি। গণমাধ্যমের প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, গত মঙ্গলবার আসামের রাজধানী গুয়াহাটিতে সীমান্ত সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এতে মুখোমুখি বসেন বাংলাদেশ ও ভারতের সীমান্ত রক্ষী বাহিনী। সম্মেলনে নিজ নিজ পক্ষে নেতৃত্ব দেন দুই বাহিনীর প্রধানগণ। বিজিবি-বিএসএফ মহাপরিচালক পর্যায়ের ৫১তম সীমান্ত সম্মেলনেই সীমান্ত হত্যা বন্ধে আশ্বাস বাণী শোনান বিএসএফ মহাপরিচালক। এবারের সম্মেলনে বিজিবির পক্ষে যে সব গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আলোচ্যে স্থান পায়। সেই বিষয়গুলো হলো- সীমান্তে নিরস্ত্র বাংলাদেশি নাগরিকদের উপর গুলি চালানো ও আহত বা হত্যা করা সম্পর্কে প্রতিবাদ জানানো এবং এধরনের কর্মকাণ্ড বন্ধে করণীয় নির্ধারণ করা। ভারত থেকে বাংলাদেশে ইয়াবা, ফেনসিডিল, হেরোইনসহ বিভিন্ন প্রকার অবৈধ মাদকদ্রব্যের চোরাচালান রোধ, মাদক পাচারকারীদের সম্পর্কিত তথ্য বিনিময় করা। ভারত থেকে বাংলাদেশে অস্ত্র ও গোলাবারুদ চোরাচালান রোধ এবং অস্ত্র চোরাচালান রোধে অস্ত্র ব্যবসায়ীদের সম্পর্কে তথ্য বিনিময় করা। বিএসএফ এবং ভারতীয় নাগরিক কর্তৃক সীমানা লংঘন, অবৈধ পারাপার, অনুপ্রবেশ রোধ করা। সীমান্তের ১৫০ গজের মধ্যে ভারত কর্তৃক অনুমোদনহীন উন্নয়নমূলক নির্মাণ কাজ না করা এবং বন্ধ থাকা বাংলাদেশের অন্যান্য উন্নয়নমূলক কাজ যত দ্রুত সমাধানে পদক্ষেপ গ্রহণ করা। উভয় দেশের সীমান্ত এলাকায় নদীর তীর সংরক্ষণ কাজ বাস্তবায়ন করা। রাজশাহী সীমান্তের চর মাজারদিয়া ও চর খানপুর এলাকার স্থানীয় জনসাধারণের চলাচলের সুবিধায় পদ্মা নদীর ভারতীয় অংশ ব্যবহারের অনুমতি নেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করা। ভারতীয় সীমান্তের অভ্যন্তরে সশস্ত্র সন্ত্রাসী ও আঞ্চলিক বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীর সম্ভাব্য অবস্থান ও তাদের কর্মকাণ্ড পরিচালনা সম্পর্কিত তথ্য বিনিময় করা। সীমান্ত ব্যবস্থাপনা এবং সীমান্ত সম্পর্কিত সমস্যা দ্রুত সমাধানের জন্য ও ‘কার্যকর সমন্বিত সীমান্ত ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা’ কার্যকরভাবে বাস্তবায়ন করা।

সর্বশেষ পারস্পরিক আস্থা ও সৌহার্দ্য বৃদ্ধির লক্ষ্যে বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণের বিষয়ে আলোচনা হয় সম্মেলনে। আশা করা যায়, ভারত সরকার এবং বিএসএফ যথেষ্ট গুরুত্ব দেবে এই বিষয়গুলোর প্রতি। ভারতের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বন্ধুরাষ্ট্র হলো বাংলাদেশ। ভারতকেও বাংলাদেশের জনগণ সেটিই ভাবে। ফলে সীমান্তে কোনো বাংলাদেশিকে গুলি করে মারা হলে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে সেটি জনগণের মধ্যে। বন্ধু রাষ্ট্রের কাছ থেকে এমন ব্যবহার প্রত্যাশা করে না কেউ। এ ব্যাপারে বিএসএফ যথেষ্ট সতর্কতা অবলম্বন করবে এটা সবাই মনে করেন এবং আমাদের সরকারও তাই মনে করেন বলে আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি। ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক ক্রমশ নিবিড় ও প্রগাঢ় বন্ধনে বেষ্টিত হয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করে চলছে। এই বন্ধনের কথা বিশ্বে জ্ঞাত। ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের যে নিবিড় সম্পর্ক এটি ভেবে গৌরববোধ করে বাংলাদেশের জনগণ। সেই সাথে সীমান্তে একজন বাংলাদেশি নাগরিক বিএসএফ এর গুলিতে মারা গেলে হৃদয় কেঁপে ওঠে তাদের। তারা বিশ্বাস করতে চায় না এ ঘটনা। সুতরাং বিএসএফ এর উচিত বাংলাদেশের মানুষের এই ভাবাবেগের প্রতি শ্রদ্ধা-সম্মান জানানো। সীমান্তে আর কোনো গুলি চলবে না, বাংলাদেশের মানুষে সেই গুলিতে মরবে বলে বিএসএফের মহাপরিচালক যে আশ্বাসবাণী শুনিয়েছেন। তা শুধু আশ্বাসবাণী হিসেবে থাকবে না, সেই আশ্বাসবাণীর বাস্তবরূপও দেখতে চাই। বিএসএফ মহাপরিচালকের কথা ও কাজে মিল দেখতে আগ্রহী আমরা।



« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
https://www.dailyvorerpata.com/ad/BHousing_Investment_Press_6colX6in20200324140555 (1).jpg
https://www.dailyvorerpata.com/ad/last (2).gif
https://www.dailyvorerpata.com/ad/431205536-ezgif.com-optimize.gif
https://www.dailyvorerpata.com/ad/agrani.gif
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ


সম্পাদক ও প্রকাশক: ড. কাজী এরতেজা হাসান
সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
সাউথ ওয়েস্টার্ন মিডিয়া গ্রুপ


©ডেইলি ভোরের পাতা ডটকম


©ডেইলি ভোরের পাতা ডটকম

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : ৯৩ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫।
ফোন:৮৮-০২-৪১০১০০৮৭, ৪১০১০০৮৬, বিজ্ঞাপন বিভাগ: ৪১০১০০৮৪, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৪১০১০০৮৫
অনলাইন ইমেইল: [email protected] বার্তা ইমেইল:[email protected] বিজ্ঞাপন ইমেইল:[email protected]