প্রকাশ: মঙ্গলবার, ২২ ডিসেম্বর, ২০২০, ১০:০৯ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
ডিসেম্বর। বিজয় ও গৌরবের মাস। কালের চাকা ঘুরে দেখতে দেখতে কেটে গেছে বছরগুলো। আমরা বাঙালিরা ২৪ বছরের পাকিস্তানি পরাধীনতার জিঞ্জির ভেঙেছি একাত্তরে। দখলদার পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে ৯ মাসের সশস্ত্র সংগ্রামের মাধ্যমে অর্জন করেছি মহান বিজয়। আজকের এই বিজয়ের বাংলাদেশের উন্নয়ন ও আস্থার প্রতীক শেখ হাসিনা।
দৈনিক ভোরের পাতার নিয়মিত আয়োজন ভোরের পাতা সংলাপের ১৯৬ তম পর্বে এসব কথা বলেন আলোচকরা। মঙ্গলবার (২২ ডিসেম্বর) আলোচক হিসাবে উপস্থিত ছিলেন সংসদ সদস্য এবং বাংলাদেশ আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক পঙ্কজ দেবনাথ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কামরুল হাসান খান। দৈনিক ভোরের পাতা সম্পাদক ও প্রকাশক ড. কাজী এরতেজা হাসানের পরিকল্পনা ও নির্দেশনায় অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন সাবেক তথ্য সচিব নাসির উদ্দিন আহমেদ।
পঙ্কজ দেবনাথ বলেন, বিজয়ের মাসে আমি কথা বলার শুরুতেই এই বিজয়ের মহানায়ক জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি শ্রদ্ধা জানাচ্ছি, আরও স্মরণ করছি ৩০ লক্ষ শহীদ ও ২ লক্ষ ইজ্জত হারা মা বোনদের যাদের বিনিময়ে আজকের এই স্বাধীন বাংলায় কথা বলতে পারছি। গৌরবের বিজয়। আসলেই এটা গৌরবের বিজয়। আমাদের শতাব্দীর সবচে বড় অর্জন হচ্ছে আমাদের বিজয়। আমরা এই মাসে বিজয় হয়েছি। এই মাসে পাকিস্তান হানাদার বাহিনী মুক্তিবাহিনীদের কাছে যৌথ বাহিনীদের ফ্রোসদের কাছে আত্মসমর্পণ করে। আমরা রক্ত দিয়ে এই বিজয় অর্জন করেছি। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে উদ্ভাসিত বাঙালি, আসলেই আমরা উদ্ভাসিত তার নেতৃত্বে। বিজয়ের এই মাসে আমাদের নতুন একটি সেতু সংযোগ হয়েছে; পদ্মা সেতু। বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশের উন্নয়নের জন্য পদ্মাসেতুর গুরুত্ব অপরিসীম। এ সেতু নির্মিত হলে দক্ষিণাঞ্চলের সঙ্গে ঢাকার দূরত্ব অনেকাংশে কমে যাবে, যা দেশের অভ্যন্তরে বাণিজ্য ঘাটতি কমিয়ে আনতে সাহায্য করবে। বাংলাদেশ ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ শুধু স্বপ্ন দেখে না, স্বপ্ন সম্পন্ন করেন বঙ্গবন্ধু ও বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনা। বাংলাদেশ স্বপ্ন দেখতে জানে ও স্বপ্নকে বাস্তবে রূপান্তরিত করার সাহস আছে। বাংলাদেশের স্বাধীনতা, তারও আগে বাংলাদেশের মাতৃভাষা এবং বাংলাদেশে স্বাধীনতার পরে স্বৈরশাসকদের পরাভিত করা এবং সকল অসম্ভবকে সম্ভব করাই বঙ্গবন্ধু পরিবারের একটি অন্যতম গুন। সমুদ্র বিজয় থেকে শুরু করে মহাকাশ বিজয়, পদ্মা বিজয় সবই আজ সম্ভব হয়েছে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে। আমি শুধু স্যালুট জানাই বঙ্গবন্ধু কন্যাকে সকল অসম্ভবকে সম্ভব করে বাংলাদেশকে বিশ্বের অনন্য মর্যাদার আসনে নিয়ে গেছেন এই জন্য। আসলে বিজয় নিয়ে কেন আমরা উদ্ভাসিত। স্বাধীনতা ব্যর্থ হয়ে যাবে যখন দেশের একটি মানুষ না খেয়ে মারা যাবে, স্বাধীনতা তখনি ব্যর্থ হয়ে যাবে যদি আমি নিরক্ষতার অভিশাপে দারিদ্রের কষাগাতে নিষ্পেষিত হয়। বঙ্গবন্ধু কন্যা তার লব্দ জ্ঞান, প্রজ্ঞা, বিচক্ষণতা, দূরদর্শিতা দিয়ে মানুষের প্রতি তার যে ভালোবাসা সে ভালোবাসা থেকে উচ্ছ্বাসিত হয়ে দেশপ্রেম; সেখান থেকে তিনি গণতন্ত্র উদ্ধার করাই নয়, গণতন্ত্র উত্তরণের যাত্রাকে অব্যাহত রেখে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা চিকিৎসা, কর্মসংস্থান; এই যে মৌলিক অধিকার গুলো শেখ হাসিনা পরম যত্নে নিশ্চিত করেছেন। কেন আজকে বিএনপি ব্যর্থ হচ্ছে? কেন আজকে জামায়াত ধর্মীয় সুড়সুড়ি দিয়ে উগ্রবাদী কর্মকাণ্ড করে ব্যর্থ হচ্ছে? কারণ জননেত্রী শেখ হাসিনা অসাম্প্রদায়িক চেতনার মূল্যবোধকে ধারণ করে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে সমুন্নত রেখে শুধুই যে রাজনৈতিক পদক্ষেপ নিচ্ছেন না, তিনি একেবারে মানুষের পেটে দুবেলা দুমুঠো ভাত তুলে দিতে পেরেছেন। আজকে তার এই বিচক্ষণ রাজনীতির নেতৃত্বের দেশে কিছু ধর্ম ব্যবসায়ীরা উশৃঙ্খলতা সৃষ্টি করছে। এ দেশ ধর্ম, বর্ণ, গোষ্ঠী নির্বিশেষে সবার। আমরা চাই, সবাই তার নিজ নিজ ধর্ম স্বাধীনভাবে পালন করবে। এক্ষেত্রে যারা বিরোধ সৃষ্টি করতে চাইবে তাদেরকে কঠোর হস্তে দমন করতে হবে। আমাদের প্রত্যাশা যারা ধর্মের নামে অধর্ম করে দেশে নৈরাজ্য সৃষ্টি করার পায়তারা করার চেষ্টা করছে তাদের বিরুদ্ধে সরকার কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করবে। এ ক্ষেত্রে তাদেরকে ছাড়া দেওয়ার কোন সুযোগ নেই। কেননা ধর্মীয় উগ্রপন্থীদের সাথে যে দেশই সুসম্পর্ক বজায় রাখবে সে দেশে কখনো শান্তি ফিরে আসতে পারে না।