বঙ্গোপসাগরের মাটি দিয়ে চট্টগ্রামের মীরসরাইয়ে গড়ে তোলা হয়েছে হাজার হাজার একর নতুন ভূমি। আর এখানেই এগিয়ে চলছে বঙ্গবন্ধু শিল্পনগর। ৩০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগের পাশাপাশি কয়েক লাখ মানুষের কর্মসংস্থানের লক্ষ্য নিয়ে কাজ শুরু করেছে এই ইকোনমিক জোন। এরইমধ্যে গ্যাস-পানি এবং বিদ্যুতের ব্যবস্থা হয়ে গেছে। আমদানি-রফতানির সুবিধার্থে মাঝারি মানের বন্দরও হতে যাচ্ছে।
মাইলের পর মাইল ধূ ধূ প্রান্তর। শত শত স্কেভেটর দিয়ে যেমন মাটি কাটা হচ্ছে। তেমনি বুলডোজার দিয়ে সমান করা হচ্ছে উঁচু-নিচু মাটির কাঠামো। আর ধুলো উড়িয়ে এক জায়গার মাটি আরেক জায়গায় নিয়ে যাচ্ছে ট্রাকের সারি। এভাবেই এগিয়ে চলেছে মীরসরাই ইকোনমিক জোনের কাজ। পুরো এলাকাটির অধিকাংশই গত কয়েক বছর আগেও ছিল সাগরের অংশ। কিছু অংশ ছিল কেওড়া বন। জোয়ারের সময় অন্তত ৭ মিটার পানিতে তলিয়ে থাকতো পুরো এলাকা।
মীরসরাই উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন বলেন, দেশের সর্ববৃহৎ ইকোনোমিক জোন আমাদের এখানে হচ্ছে। এই জায়গার অনেক রাস্তাঘাটের উন্নয়ন হচ্ছে।
এই জলাভূমিতেই গত দুই বছরের বেশি সময় ধরে চলছে বঙ্গবন্ধু শিল্পনগর গড়ে তোলার কাজ। একদিকে নতুন ভূমি সৃষ্টি করা হচ্ছে। অন্যদিকে শিল্প কারখানার জন্য সেই ভূমি বরাদ্দও সম্পন্ন করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে একশটির বেশি শিল্প প্রতিষ্ঠানকে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে অন্তত ৭ হাজার একর জায়গা। যেখানে কাজ শুরু করেছে ১০টি প্রতিষ্ঠান। কয়েক মাসের মধ্যে উৎপাদনে যাবে জাপানের বিদ্যুৎ কেন্দ্র এবং চীনের কেমিকেল কারখানা।
বাংলাদেশ ইকনোমিক জোন অথরিটির চেয়ারম্যান পবন চৌধুরী বলেন, এখানে ১৮ থেকে ২০ বিলিয়ন বিনিয়োগের প্রস্তাব রয়েছে।
এদিকে, বঙ্গবন্ধু শিল্প নগরের পণ্য আনা-নেয়ার সুবিধার্থে সীতাকুণ্ড ও মীরসরাইয়ের মধ্যবর্তী উপকূলে মাঝারি মানের একটি বন্দর নির্মাণেরও পরিকল্পনা রয়েছে।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ সচিব মোহাম্মদ ওমর ফারুক বলেন, ইকোনোমিক জোনকে সাপোর্ট দেওয়ার জন্য এখানে একটি মাঝারি পোর্ট দেওয়ার জন্য চট্টগ্রাম বন্দর আগেই উদ্যোগ নিয়েছে।
শিল্পায়নের সুবিধার্থে বঙ্গবন্ধু শিল্পনগরকে তিনটি জোনে ভাগ করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে চট্টগ্রামের মীরসরাই, সীতাকুণ্ড ও সন্দ্বীপ এবং ফেনীর সোনাগাজী ও নোয়াখালীর কোম্পানিগঞ্জ। এছাড়া শেখ হাসিনা সরোবর নামে ২শো একর জায়গার উপর একটি কৃত্রিম লেকও থাকবে এখানে।