প্রকাশ: মঙ্গলবার, ২২ ডিসেম্বর, ২০২০, ১১:১৯ এএম আপডেট: ২২.১২.২০২০ ৩:১৮ পিএম | প্রিন্ট সংস্করণ
আগামী জাতীয় নির্বাচনে ইসলামী দলগুলোর সঙ্গে জোট গঠন ও ভোটের চিন্তা করে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য ভাঙচুরের ইস্যুতে চুপ থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জাতীয় পার্টি। গতকাল সোমবার জাতীয় পার্টির কার্যালয় অনুষ্ঠিত সভায় এসব বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। দলটির ৩৯ সদস্যের মধ্যে ৩১ জন সদস্য অংশ নেন। বৈঠক সূত্র জানিয়েছে, ভাস্কর্য ইস্যু ছাড়া সংসদে এবং সংসদের বাইরে সঠিকভাবে বিরোধীদলের ভূমিকা পালন করবে জাপা। কারও লেজুড়বৃত্তি করে দলটি রাজনৈতিক ভূমিকা রাখবে না। তবে জনস্বার্থ বিরোধী কোনো কার্যক্রমে সরকারকেও ছাড় দিতে নারাজ দলটি।
বৈঠক প্রসঙ্গে একজন প্রেসিডিয়াম সদস্য তার নাম গোপন রাখার শর্তে বলেন, ‘বৈঠকে দলটির চেয়ারম্যান জিএম কাদের বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ইস্যুতে আামদের নীরব থাকাই ভালো। কারণ বিষয়টি আমাদের রাজনৈতিক অংশ নয়। এ বিষয় ভেবেচিন্তে কথা বলা উচিত।’ তিনি বৈঠকে বলেন, জাতীয় পার্টি মহাজোটে থেকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছে ঠিকই। জাতীয় পার্টি সরকারের শরিক দল নয়। জাপা এখন জাতীয় সংসদের বিরোধীদলের ভূমিকায় রয়েছে। ফলে জাতীয় পার্টির রাজনৈতিক ভূমিকা থাকবে বিরোধীদলের মতো। এ সময় বৈঠকে উপস্থিত একজন সদস্য বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাঙচুরের বিষয় নিয়ে বক্তব্য রাখার চেষ্টা করলেও তিনি বক্তব্য রাখতে পারেননি। উপস্থিত অন্যান্য প্রেসিডিয়াম সদস্যরা এ বিষয় নিয়ে কোনো বক্তব্য রাখেননি।
ধর্মীয় স্পর্শকাতর ইস্যুতে জাতীয় পার্টির অবস্থান নিয়ে অবশ্য প্রশ্ন অনেক পুরানো। ২০১৩ সালের ৫ মে রাজধানীর শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের তা-বের দিনেও জাতীয় পার্টি তাদের পাশে দাঁড়িয়েছে। দলের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের প্রত্যক্ষ নির্দেশনায় জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীরা হেফাজত কর্মীদের জন্য খাবার বিতরণ করেন। সেদিন জাতীয় পার্টির ভূমিকার সঙ্গে এখনকার ইসলামী দলগুলোর ভাস্কর্য বিরোধিতা ইস্যুতে জাতীয় পার্টির ভূমিকা একই বলে মন্তব্য করেছেন দলটির কয়েকজন প্রেসিডিয়াম সদস্য। এছাড়া বৈঠকে জাতীয় পার্টির ১ জানুয়ারি প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে ২/৩টি জাতীয় পত্রিকায় ক্রোড়পত্র প্রকাশের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ক্রোড়পত্রে এরশাদের শাসন আমলের উন্নয়ন কর্মকা- তুলে ধরা হবে। এছাড়া বৈঠকে সাংগঠনিক রিপোর্ট পেশ করে ৭ বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত অতিরিক্ত মহাসচিবরা। তাদের পেশকরা রিপোর্ট নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। আলোচনায় অংশ নিয়ে অনেকেই সাংগঠনিক কার্যক্রমের ওপর ক্ষোভ প্রকাশ করেন বলে সূত্রটি জানায়। বৈঠকে করোনা পরিস্থিতির কারণে দলটির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে বড় ধরনের কোনো সমাবেশ না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে জাতীয় পার্টি মহাসমাবেশ করবে। বর্তমানে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে সারা দেশে জেলা উপজেলায় আলোচনা সভা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কেন্দ্রীয়ভাবে দলটির বনানী কার্যালয়ে আলোচনা সভা করা ও কেক কাটার আয়োজন করা হয়েছে।