রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪ ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

শিরোনাম: স্কুলে ভর্তির আবেদন শুরু আজ   স্কুলে ভর্তির আবেদন শুরু আজ   স্কুলে ভর্তির আবেদন শুরু আজ   ফিল্ম সিটি থেকে বাদ দেওয়া হচ্ছে ‘বঙ্গবন্ধুর’ নাম   সিলেটের সাবেক সংসদ সদস্য ইয়াহিয়া গ্রেপ্তার   অনন্য অসাধারণ শেখ হাসিনা আমাদের গর্ব   নরসিংদীতে ‘থার্টি ফার্স্ট’ উপলক্ষে চাঁদা না দেয়ায় ব্যবসায়ীকে কোপালো সন্ত্রাসীরা   
https://www.dailyvorerpata.com/ad/Inner Body.gif
রেল ক্রসিং হতে হবে সুরক্ষিত
ড. কাজী এরতেজা হাসান
প্রকাশ: মঙ্গলবার, ২২ ডিসেম্বর, ২০২০, ১১:১৯ এএম আপডেট: ২২.১২.২০২০ ৩:১৮ পিএম | প্রিন্ট সংস্করণ

দেশে রেল ক্রসিং অরক্ষিত থাকার অভিযোগে একটার পর একটা যেভাবে  রেল দুর্ঘটনা হচ্ছে, তাতে বোঝার উপায় নেই যে সারা দেশের বেশির ভাগ রেল ক্রসিং রক্ষিত অবস্থায় আছে। এই অবস্থা যেন দেখার কেউ নেই। আসল চিত্র সত্যিই বিপজ্জনক। দেশের সিংহভাগ রেল ক্রসিং অরক্ষিত থাকায় প্রায়শই ঘটছে দুর্ঘটনা। এসব ছোট-বড় দুর্ঘটনায় প্রাণ হারাচ্ছেন সাধারণ মানুষ। যেখানে গত শনিবার বাস-ট্রেনের সংঘর্ষে মারা গেছেন ১২ জন যাত্রী। এই দুর্ঘটনায় এতো মানুষের প্রাণ হারানোর ঘটনা খুবই বেদনাদায়ক। রেল ক্রসিং অরক্ষিত থাকায় ওই প্রাণহানির ঘটনা ঘটে। এর দায় কে নেবে? যেসব পরিবার স্বজন হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে গেল, তাদের শান্ত¡না দেবার মতো ভাষা কি কারোর জানা আছে? শান্ত¡না দেবার মতো কোনো ভাষা কারোর জানা নেই। কিন্তু যাদের কতর্ব্য অবহেলায় এতগুলো মানুষের প্রাণ গেল তাদের বিরুদ্ধে কি ব্যবস্থা নেওয়া হবে?। তবে অতীতের অভিজ্ঞতা বলছে তা সময়ের সঙ্গে সঙ্গে হারিয়ে যাবে। যারা মারা গেলেন তাদের আর ফিরে পাবে না তাদের স্বজনরা।


অথচ নিহতদের মধ্যে অনেকের কাধেই ছিল পুরো পরিবারের ভার। অনেকেই ছিলেন উপার্জনক্ষম। মোট কথা এরা ছিলেন পরিবারের স্বপ্ন। এদের ঘিরে পরিবার স্বপ্ন দেখতো। বেঁচে থাকা স্বার্থক মনে করতো। এখন নিহতদের পরিবার কি নিয়ে বেঁচে থাকবে, তাদের স্বপ্ন অকালে মরে গেল, ধূলিসাৎ হয়ে গেল। প্রতিটি দুর্ঘটনায় এভাবে এক একটি পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। যে ক্ষতি কোনো কিছু দিয়েই পূরণ করা সম্ভব না। প্রশ্ন হলো রেল ক্রসিং অরক্ষিত রাখার দায় কে নেবে? এবং এ কারণে প্রচুর মানুষ প্রাণ হারাচ্ছে, এ জন্য কে জবাবদিহি করবে। তবে এটাও ঠিক যে, নানা গোজামিল দিয়ে একটা জবাব হয়তো দায়িত্বশীলরা খাড়া করবেন। এই জবাবের মধ্যদিয়ে নিজেদের নির্দোষ দাবি করবেন। আমরা দীর্ঘদিন দেখে আসছি, সড়ক হোক বা রেল দুর্ঘটনা হোক দায়িত্বশীলরা এভাবে গা-ঝাড়া এক রকম জবাব খাড়া করে নিজেদের নির্দোষ দাবি করে পার পেয়ে যাচ্ছেন। দোষ কেউ স্বীকার করছেন না। বা এও বলা যায়, দুর্ঘটনার রাশ টেনে ধরার কোনো চেষ্টা চোখে পড়ছে না। দুর্ঘটনা হ্রাসের মুখভরা বুলি আওরিয়ে ও প্রতিশ্রুতি দিয়ে কর্তব্য শেষ করছেন সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীলরা। মূলত রেল ক্রসিংয়ের নিয়ত দুর্ঘটনার কোন স্থায়ী সমাধানে বাস্তব অগ্রগতি চোখে পড়ে না। আমাদের মনে হয়, এ ব্যাপারে সরকারের শীর্ষ পর্যায় থেকে কড়া দিক নির্দেশনা আসা উচিত এখনই। গতকালের ‘ভোরের পাতা’র প্রধান সংবাদই ছিল ‘মৃত্যুফাঁদ কেন রেল ক্রসিং’।

এ প্রতিবেদনে প্রায়শই যে রেল ক্রসিংয়ে দুর্ঘটনা ঘটছে এবং কি কারণে ঘটছে তার বিস্তারিত তুলে ধরা হয়েছে। সত্য কথা হলো দীর্ঘদিন ধরে রেল ক্রসিং মৃত্যুফাঁদ হয়ে বিরাজ করছে। এটা দায়িত্বশীল ব্যক্তিরা জানেন না, তা মোটেই অবিশ্বাস করার মতো ব্যাপার নয়। তারা সব জানেন। কিন্তু রেল ক্রসিং মৃত্যুফাঁদ হয়ে থাকলেও তাদের গায়ে তো কোনো ধরনের আঁচড় লাগছে না। তাই এ নিয়ে তাদের কোনো মাথা ব্যাথা নেই এটা দিব্যি করেই বলা যায়। অথচ ‘শনিবার জয়পুরহাট সদর উপজেলার পুরানাপৈল রেল ক্রসিংয়ে ট্রেনের সঙ্গে বাসের সংঘর্ষে ১২ জন বাসযাত্রী মারা গেল। এ ঘটনায় গুরুতর আহত হয়েছেন আরও ৫ জন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। তবে মৃতের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে’। ভোরের পাতার প্রতিবেদন থেকে জানা গছে, ‘ভোর ৬টার দিকে পার্বতীপুর থেকে রাজশাহীগামী লোকাল উত্তরা মেইল ট্রেন জয়পুরহাটে আসছিল। এ সময় জয়পুরহাট সদর উপজেলার পুরানাপৈল রেলক্রসিংয়ে কর্তব্যরত লাইনম্যান রেলগেটে সিগন্যাল পোস্ট না ফেলায় জয়পুরহাট থেকে হিলিগামী বাঁধন এক্সপ্রেস নামক যাত্রীবাহী বাসটি রেল ক্রসিং অতিক্রম করতে গিয়ে ট্রেনের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। এতে বাসটি দুমড়ে মুচড়ে গিয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যায় বাসের ১০ জন যাত্রী। এ ঘটনায় গুরুতর আহত হয় আরও ৫ যাত্রী’। প্রতিবেদন থেকে আরো জানা গেছে, ‘পুরানাপৈল রেল ক্রসিংয়ে কর্তব্যরত গেইটম্যান রাতের বেলা অনেক সময় সেখানে থাকেন না এবং প্রায় সময়ই রাতের বেলা বিভিন্ন যানবাহনের চালক নিজ দায়িত্বে রেল ক্রসিং অতিক্রম করেন। ফলে এখানে মাঝে মধ্যেই ছোটবড় দুর্ঘটনা ঘটে এবং ঝুঁকিপূর্ণভাবে বিভিন্ন যানবাহন রেল ক্রসিং পারাপার হয়’।

যদি রেলক্রসিং অরক্ষিত অবস্থায় না থাকতো তাহলে কিন্তু এতবড় দুর্ঘটনা ঘটার সম্ভাব ছিল না। ১২ জন মানুষের প্রাণ হারাতে হতো না। সরকার রেলে উন্নয়নে হাজার হাজার কোটি টাকা ব্যয় করছে। অথচ রেলক্রসিং সুরক্ষায় রেলের হর্তাকর্তা কেন এতটা উদাসিন এবং রেল ক্রসিংয়ের ভালো সুরক্ষা তৈরির জন্য ভালোভাবে অর্থ ব্যয় করা হচ্ছে না? এটা ভেবে আমরা ভীষণভাবে বিস্মিত। সরকারের দায়িত্বশীলরা কি এ নিয়ে মোটেই চিন্তিত নন? রেলেক্রসিং দিয়ে যানবাহন এবং মানুষ পায়ে হেঁটে যাতায়াত করে থাকে। ফলে এসব এলাকা সুরক্ষিত রাখাটাই যৌক্তিক। কিন্তু এটার প্রতি চরম উদাসিন রেল কর্তৃপক্ষ তা হলফ করে বলা যায়। তাই যথাযথ কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলবো দ্রুত নতুন দেশের সব অরক্ষিত রেল ক্রসিং পরীক্ষা করে রক্ষণাবেক্ষণে জোর দাগিদ দেওয়া হোক। তা না হলে আবারও হতে পারে প্রাণহানি।



« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
https://www.dailyvorerpata.com/ad/BHousing_Investment_Press_6colX6in20200324140555 (1).jpg
https://www.dailyvorerpata.com/ad/last (2).gif
https://www.dailyvorerpata.com/ad/431205536-ezgif.com-optimize.gif
https://www.dailyvorerpata.com/ad/agrani.gif
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ


সম্পাদক ও প্রকাশক: ড. কাজী এরতেজা হাসান
সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
সাউথ ওয়েস্টার্ন মিডিয়া গ্রুপ


©ডেইলি ভোরের পাতা ডটকম


©ডেইলি ভোরের পাতা ডটকম

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : ৯৩ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫।
ফোন:৮৮-০২-৪১০১০০৮৭, ৪১০১০০৮৬, বিজ্ঞাপন বিভাগ: ৪১০১০০৮৪, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৪১০১০০৮৫
অনলাইন ইমেইল: [email protected] বার্তা ইমেইল:[email protected] বিজ্ঞাপন ইমেইল:[email protected]