প্রকাশ: সোমবার, ২১ ডিসেম্বর, ২০২০, ৭:৪৪ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
রাজধানীর অতিগুরুত্বপূর্ণ থানা ইউনিট হিসাবে পল্টন থানা ছাত্রলীগের কমিটি বিবেচিত হয়ে আসছে। এমনকি এই থানার নেতৃত্ব নির্ধারণে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ছাত্রলীগের সভাপতি মেহেদী হাসান এবং সাধারণ সম্পাদক জোবায়ের আহমেদকে নানা তদবিরের মাঝ থেকে সঠিক নেতৃত্ব বের করতে বেশ বেগও পেতে হয়েছে।
গত ১৫ ডিসেম্বর রাতে পল্টন থানা ছাত্রলীগের নতুন কমিটি ঘোষণা করা হয়। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ছাত্রলীগের সভাপতি মেহেদী হাসান এবং সাধারণ সম্পাদক জুবায়ের হাসান আহমেদ স্বাক্ষরিত কমিটিতে মো. আল-আমিনকে সভাপতি এবং সি এম পিয়ালকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে।
কমিটি ঘোষণার পর থেকেই পল্টন থানা ছাত্রলীগের পদবঞ্চিতরা বারবার বলছেন, শুধুমাত্র ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ছাত্রলীগের শীর্ষ এক নেতার নিজ জেলার ছেলে হওয়ার কারণেই সি এম পিয়ালকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে। পল্টনের রাজনীতিতে তার কোনো সক্রিয় ভূমিকা কখনোই ছিল না। এমনকি সি এম পিয়ালের বিরুদ্ধে ক্যাসিনোকাণ্ডে গ্রেপ্তার হওয়া যুবলীগের বহিস্কৃত নেতা ইসমাইল চৌধুরী সম্রাটের হয়ে বিভিন্ন ক্লাব থেকে চাঁদা আদায় করে তা জমা দিতেন বলেও অভিযোগ করেছেন কেউ কেউ। এ বিষয়ে দেশের শীর্ষ স্থানীয় একটি গণমাধ্যমে প্রকাশিত একটি সংবাদেও সি এম পিয়ালের নাম এসেছে ক্যাসিনো সম্রাটের ছোট ক্যাশিয়ার হিসাবে।
পল্টন থানা আওয়ামী লীগ, সহযোগী সংগঠন এবং ওয়ার্ড কাউন্সিলরদের সাথে কোনো ধরণের আলাপ আলোচনা করে পল্টন থানা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে সি এম পিয়ালকে। তাই পল্টন থানা ছাত্রলীগের এই সাধারণ সম্পাদককে এলাকায় রাজনীতি করতে দিবেন না বলেও হুমকি দিয়েছেন। এছাড়া, এই পিয়াল পল্টন থানা ছাত্রলীগের একটি ওয়ার্ডের নেতা থাকা অবস্থায় একবার বহিষ্কারও হয়েছিলেন।
এসব অভিযোগের বিষয়ে সি এম পিয়াল ভোরের পাতাকে বলেন, আমি ২০১২ সাল থেকেই পল্টনে থাকি। আমার ভোটার আইডি কার্ডও পল্টনের। দীর্ঘ ১০ বছরের বেশি সময় ধরে ছাত্রলীগের বিভিন্ন পদে ছিলাম। এখন যারা আমাকে বহিরাগত বলছেন, তারা আসলে পদে বসতে না পারার বেদনা থেকেই এসব ষড়যন্ত্র করছেন। এছাড়া, ক্যাসিনোকাণ্ডে নিজের বিষয়টি পরিষ্কার করে তিনি বলেন, যুবলীগের নেতা হিসাবে সম্রাট ভাইকে আমি চিনতান। কিন্তু কখনোই তার হয়ে কোথাও থেকে এক পয়সাও আনতে যাইনি। স্রমাট ভাই আমাকে চিনতেন কিনা, সেটা নিয়েও সংশয় রয়েছে।
পল্টন থানা ছাত্রলীগই নয়, মেহেদী-জুবায়ের স্বাক্ষরিত প্রায় সকল কমিটিতেই বিতর্কিতদের ঠাঁই দেয়া হয়েছে বলে ভোরের পাতাকে জানিয়েছেন মহানগর দক্ষিণ ছাত্রলীগের সাবেক এক শীর্ষ নেতা। এক্ষেত্রে আর্থিক লেনদেন থেকে শুরু করে বিভিন্ন অনৈতিক সুবিধা গ্রহণের অভিযোগও রয়েছে। সাবেক ছাত্রলীগ নেতা আক্ষেপ করেই বলেন, মহানগরে এত বড় বড় নেতা হয়েছেন; তাদের সবার নজর ছাত্রলীগের নেতা বানানোর। এক্ষেত্রে অনেক সময় দায়িত্বপ্রাপ্ত মেহেদী-জুবায়েরেরও কিছুই করার থাকে না। তবে যদি কেউ বিতর্কিত থেকে থাকে, তাকে ছাত্রলীগ থেকে বহিষ্কার করে পরিচ্ছন্ন ও মেধাবীদের যোগ্যতার ভিত্তিতে পদায়ন করলেই ঐতিহ্যবাহী মহানগর দক্ষিণ ছাত্রলীগ আবারো পুনরায় প্রাণশক্তি ফিরে পাবে বলেও বিশ্বাস করেন তিনি।