বিশ্বের কাছে বাংলাদেশ এখন অষ্টম আশ্চর্যের নাম: ড. মো: নূরে আলম আবদুল্লাহ
প্রকাশ: রোববার, ২০ ডিসেম্বর, ২০২০, ১০:০৪ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
ডিসেম্বর মাসটি বিজয় ও গৌরবের মাস। কালের চাকা ঘুরে দেখতে দেখতে কেটে গেছে বছরগুলো। আমরা বাঙালিরা ২৪ বছরের পাকিস্তানি পরাধীনতার জিঞ্জির ভেঙেছি একাত্তরে। দখলদার পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে ৯ মাসের সশস্ত্র সংগ্রামের মাধ্যমে অর্জন করেছি মহান বিজয়। এই মহান বিজয়ের দেশের স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের রেখে যাওয়া তার স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণের পূর্ণ বাস্তবায়ন করছেন তারই তনয়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
দৈনিক ভোরের পাতার নিয়মিত আয়োজন ভোরের পাতা সংলাপের ১৯৪তম পর্বে এসব কথা বলেন আলোচকরা। রবিবার (২০ ডিসেম্বর) আলোচক হিসাবে উপস্থিত ছিলেন সংসদ সদস্য অ্যারোমা দত্ত, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো: নূরে আলম আবদুল্লাহ, নর্দ রাইন ভেষটফালেন, জার্মান অঙ্গরাজ্য আওয়ামী লীগের সভাপতি খালেক জামান। দৈনিক ভোরের পাতা সম্পাদক ও প্রকাশক ড. কাজী এরতেজা হাসানের পরিকল্পনা ও নির্দেশনায় অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন সাবেক তথ্য সচিব নাসির উদ্দিন আহমেদ।
অধ্যাপক ড. মো: নূরে আলম আবদুল্লাহ বলেন, ধন্যবাদ সঞ্চালক ও ভোরের পাতাকে আজকে এই সংলাপে আমাকে আমন্ত্রণ জানানোর জন্য। আজকে বিষয় হলো গৌরবের বিজয়: শেখ হাসিনার নেতৃত্বে উদ্ভাসিত বাঙালি। আসলেই আমাদের উদ্ভাসিত বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা যার হাত ধরে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে এবং বীর বিক্রম জাতি হিসেবে এগিয়ে যাচ্ছে বলা যায়। বাংলাদেশ একসময় তলাবিহীন ঝুড়ির দেশ ছিল, অন্য দেশের কাছে হাসির পাত্র ছিল কিন্তু আজকের বাংলাদেশ কারো কাছে হাসির পাত্র নয়। বিশ্বের কাছে বাংলাদেশ এখন অষ্টম আশ্চর্যের নাম। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা এবং দেশের বিভিন্ন সেক্টরে উন্নতি সারা বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দিয়েছে। কিভাবে এই দেশটি বীর বিক্রমের মত এগিয়ে যাচ্ছে এটা আসলেই আশ্চর্যের বিষয়। আপনারা হয়তো খেয়াল করবেন কিছু দিন আগে বিশ্ব মিডিয়াই বাংলাদেশকে নিয়ে সংবাদ হয়েছে, সংবাদটি নেগেটিভ নয় পজিটিভ। আগে একসময় বাংলাদেশকে নিয়ে অনেক ধরণের নেগেটিভ সংবাদ হতো। ভূমিকম্প, খরা, বন্যা, অনাহার; এইরকম বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে বাংলাদেশকে জড়িয়ে সংবাদ প্রচার করা হতো। কিন্তু আজ ছাপা হচ্ছে বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে কিভাবে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। গত ১২ বছরে কতো লিজেন্ডারি এডভান্স বাংলাদেশে হয়েছে তা বলে শেষ করা যাবেনা। এরপরে আমরা পদ্মা সেতু নিজস্ব অর্থায়নে প্রায় শেষ করে ফেলেছি। পদ্মা সেতুর খুঁটির নিচে সর্বোচ্চ ১২২ মিটার গভীরে স্টিলের পাইল বসানো হয়েছে। এসব পাইল তিন মিটার ব্যাসার্ধের। বিশ্বে এখনও পর্যন্ত কোনো সেতুর জন্য এত গভীরে পাইলিং হয়নি এবং মোটা পাইল বসানো হয়নি। এছাড়াও কোন নির্মাণ কাজে বিশ্বে প্রথম দুই বিশেষ উপাদান ব্যবহার হয়েছে। একটি হচ্ছে- ভার্টিক্যাল আরসিসি বোর্ড পাইলে গ্রাউটিং ইনজেক্ট স্কিন ফিকশন করে দৃঢ়তা বৃদ্ধি করে নদীর তলদেশে বর্হিভাবে শক্তি বৃদ্ধি। পদ্মায় এমন পাইল সংখ্যা ২২টি। অপরটি হলো স্টিল টিউবুলার ড্রিভেন পাইলে গ্রাউটিং ইনজেক্ট করে পাইলের তলদেশের স্কিন ফিকশন সক্ষমতা বৃদ্ধি করা। এমন পাইল সংখ্যা ২৫২ টি। এটা একটা বিশাল অর্জন আমাদের জন্য। শেখ হাসিনার উদ্ভাবনী চিন্তা চেতনার বাস্তবায়ন ও উদ্যোগী মনোভাবের কারণে আজকে আমাদের বাংলাদেশ অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, সম্পদ উন্নয়ন, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, শিশুমৃত্যুর হার কমানো, দারিদ্র্য বিমোচন, অর্থনৈতিক সক্ষমতা অর্জন, রফতানি আয়, বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন, বৈদেশিক শ্রমবাজার, কর্মসংস্থান বৃদ্ধি, জননিরাপত্তা, সামাজিক বৈষম্য নিরসনসহ প্রায় সব সূচকেই অনেক দেশকে ছাড়িয়ে গিয়েছি। অফুরন্ত সম্ভাবনা নিয়ে দেশটি সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু এখনও রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা থেকে মুক্তি মেলেনি। রাজনৈতিক কারণে মাঝেমধ্যেই অর্থনৈতিক গতি থমকে দাঁড়ায়। এ থমকে দাঁড়ানো না হলে, সমান তালে অর্থনৈতিক চাকা ঘুরতে থাকলে অগ্রগতি আরও বেশি হতো।