২০১০ সালে ‘বলো না তুমি আমার’ ছবিটির মাধ্যমে রুপালি জগতে পা রাখেন ঢাকাই সিনেমার পরিচিত মুখ তমা মির্জা। তারপর বেছে বেছে নিজের পছন্দ মতো বেশ কয়েকটি সিনেমায় অভিনয় করেছেন তিনি। জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারও লাভ করেন তমা। ২০১৫ সালে ‘নদীজন’ সিনেমায় অভিনয়ের জন্য শ্রেষ্ঠ পার্শ্বচরিত্রের অভিনেত্রী বিভাগে পুরস্কার জিতেন তিনি।
বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত কানাডার নাগরিক হিশাম চিশতীর সঙ্গে ২০১৯ সালের ৭ মে বিয়ের বন্ধনে আবদ্ধ হন তমা মির্জা। পারিবারিকভাবে হিশামের সঙ্গে তমার পরিচয়। শুরুতে তমার দাম্পত্য জীবন ভালোই চলছিল। দুবাইয়ে হানিমুনও করেছিলেন তারা। এছাড়া বিভিন্ন জায়গায় একসঙ্গে ঘুরতে যাওয়ার ছবি শেয়ার করেছেন এ অভিনেত্রী। কিন্তু হঠাৎ করেই তাদের মনোমালিন্যের খবর পাওয়া গেছে।
এখন আর একসঙ্গে থাকছেন না তমা ও হিশাম। বিভিন্ন কারণে বাবার বাড়িতেই থাকছেন তমা মির্জা। এরই মধ্যে নায়িকা তমা মির্জা এবং তার স্বামী হিশাম চিশতি পরস্পরের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। গত ৬ ডিসেম্বর রাজধানীর বাড্ডা থানায় ওই ফৌজদারি মামলা করেন হিশাম চিশতি। মামলায় তমা মির্জা ছাড়াও তার পরিবারের কয়েকজনকে আসামি করা হয়েছে। মামলার ধারা নং ৩২৩/৩২৪/৩২৫/৩০৭/১০৯। মামলাটিতে তমা মির্জাকে এক নম্বর আসামি করা হয়েছে। এ ছাড়া তার বাবা-মা, ভাই এবং অজ্ঞাতপরিচয় একজনকেও আসামি করা হয়েছে।
এবার হিশাম চিশতিকে মারধরের বেশ কিছু ছবি মিডিয়ায় এসেছে। হিশাম চিশতি গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, তিনি আগেই বিচ্ছেদ চেয়েছিলেন, তার জের ধরেই হামলার শিকার হতে হয়েছে তাকে। হিশাম চান, তার এ ঘটনা থেকে লোকে শিক্ষা নিক।
এদিকে প্রকাশিত ছবিতে দেখা গেছে, শরীরের বিভিন্ন জায়গায় ব্যান্ডেজ নিয়ে রয়েছেন তিনি। শরীরে মারধরের অসংখ্য চিহ্ন রয়েছে। এসব তমা মির্জার নির্যাতনের চিত্র বলে তিনি জানান। বিবাদের কারণ হিসেবে হিশাম গণমাধ্যমকে জানান, ২০১৮ সালে তমার সঙ্গে তার পরিচয় হয়। ২০১৯ সালের মে মাসে তারা বিয়ে করেন। কিন্তু বিয়ের পর তিনি জানতে পারেন, তমার আগেও দু’বার বিয়ে হয়েছিল, যা তারা গোপন করেছেন। এছাড়া তমার পরিবারকে অর্থনৈতিকভাবে সহযোগিতাও করে আসছিলেন হিশাম।
হিশাম চিশতি বলেন, তমাদের একটি স্বর্ণের দোকানের শেয়ার ছিল। আমার কাছ থেকে ২০ লাখ টাকা ধার নিয়ে তারা সেখানে বিনিয়োগ করতে চেয়েছিলেন। সেখান থেকে আয় করে তারা সংসার চালাবেন বলে জানিয়েছিলেন। শুরুতে আপত্তি করলেও তমার চাপে তার পরিবারকে ওই টাকা দিতে তিনি বাধ্য হন।
হিশাম বলেন, সেই টাকা দেওয়ার পরও তাদের চাহিদা কমেনি। প্রতি মাসে সংসার খরচ বাবদ তারা মোটা অঙ্কের টাকা নিতে থাকেন। এর বাইরে তমার ভাইয়ের খরচ, বাবা-মায়ের চিকিৎসা, বাসার পোষা কুকুরের খাবার খরচসহ নানা খাতে, নানা অজুহাতে তারা টাকা চাইতেই থাকেন। বাংলাদেশে আসার পর বাসা ভাড়া নেয়ার কথা বলে তার কাছ থেকে তিন লাখ টাকা নেন তমা। স্ত্রী হিসেবে তিনি শ্বশুরবাড়িতে গিয়ে থাকতে রাজি হচ্ছিলেন না।
এদিকে তমা মির্জা এসব দাবি উড়িয়ে দিয়েছেন। গণমাধ্যমকে তিনি বলছেন, আমার আয়ের টাকা কেন আমি আমার পরিবারকে দিই, এটা নিয়ে নানা কথা শুনতে হতো আমাকে। শুধু কি তা-ই, আমাকে কাজ করতেও বাধা দেয় সে। আমার কাছ থেকে টাকা নিতে ক্রমাগত চাপ প্রয়োগ করে। তার কাছ থেকে আমার পরিবার টাকা ধার নেবে কেন! কানাডা থেকে দেশে এলে সে তো আমার টাকায় চলে। আমি টাকা না দিতে চাইলে টর্চার করে। তার টর্চারের কারণেই একটা সময় শ্বশুরবাড়ি থেকে আমি বাবার বাসায় চলে আসি।