মনির হোসেন ওরফে গোল্ডেন মনির সংশ্লিষ্ট সাবেক গৃহায়ন ও গণপূর্ত অধিদপ্তরের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলীসহ চারজনের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদের অনুসন্ধান করছে দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদক। শিগগিরই তাদের সম্পদের হিসাব চেয়ে নোটিশ জারি করা হবে। দুর্নীতিতে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা জরুরি- বলছে টিআইবি। বিষয়টি দুদকের নির্ভরযোগ্য এবং বিশস্ত সূত্র ভোরের পাতাকে নিশ্চিত করেছে। এমনকি চলতি সপ্তাহের মধ্যেই দুর্নীতিবাজ এই কর্মকর্তা এবং সিবিএ নেতাদের বিরুদ্ধে চিঠি ইস্যু করা হবে।
উল্লেখ্য, রাজধানীতে ২০০ প্লটের মালিক গোল্ডেন মনির। এছাড়াও ৬১০ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ দেখিয়ে তার সম্পদে হিসাব চেয়ে নোটিশ জারি করে দুর্নীতি দমন কমিশন। কিভাবে গোল্ডেন মনির বিপুল সম্পদের মালিক হলো তা খতিয়ে দেখছে দুদক।
অভিযোগ আছে, দুর্নীতির মাধ্যমে গোল্ডেন মনিরের বিশাল সম্পদ অর্জনে সহযোগী হিসেবে কাজ করেছে সরকারি কর্মকর্তা, ব্যবসায়ীসহ অনেকে। এ অভিযোগে এরই মধ্যে ৫ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে দুদক। যার মধ্যে চারজনের অবৈধ সম্পদের অনুসন্ধান করছে সংস্থাটি। এ চারজন হলেন- গৃহায়ণ ও গণপূর্তে অধিদপ্তরের অতিরিক্তি প্রধান প্রকৌশলী প্রদীপ কুমার বসু, রাজউকের পরিচালক শেখ শাহিনুল ইসলাম, সিবিএ নেতা আব্দুল মালেক ও আব্দুল জলীল আকন্দ। এ মাসের মধ্যেই তাদেরকে আয়কর নথি, পাসপোর্ট, জাতীয় পরিচয় পত্র ও ব্যাংক হিসাবের তথ্য জমা দিতে বলা হয়েছে।
উল্লেখ্য, দুদক উপ-পরিচালক ও অনুসন্ধান কর্মকর্তা মো. সামছুল আলম স্বাক্ষরিত আলাদা নোটিসে ৮ থেকে ১০ ডিসেম্বরের মধ্যে তাদেরকে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে হাজির হতে বলা হয়েছিল বলে কমিশনের মুখপাত্র প্রনব কুমার ভট্টাচার্য্য জানিয়েছেন।
ওই সাতজনের মধ্যে তিনজনকে আগামী ৮ ডিসেম্বর তলব করা হয়। তাদের মধ্যে রাজউকের সিবিএ নেতা আবদুল জলিলকে ওই দিন সকাল ১০টায়, রাজউকের নিম্নমান সহকারী ও সিবিএ’র সাবেক নেতা মো. ওবায়দুল্লাহ হককে সকাল সাড়ে ১১টায় এবং রাজউকের উচ্চমান সহকারী ও রাজউক শ্রমিক লীগের সাবেক সভাপতি আবদুল মালেককে দুপুর ২টায় তলব করা হয়।
অন্যদিকে রাজউকের পরিচালক শেখ শাহিনুল ইসলামকে ৯ ডিসেম্বর সকাল ১০টায় এবং গণপূর্ত অধিদপ্তরের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী প্রদীপ কুমার বসুকে একই দিন সকাল সাড়ে ১১টায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করা হয়েছিল।
দুর্নীতি দমন কমিশনের কমিশনার পদমর্যাদার একজন কর্মকর্তা জানান, দুর্নীতির মাধ্যমে গোল্ডেন মনিরের বিশাল সম্পদ অর্জনে সহযোগী হিসেবে কাজ করেছে সরকারি কর্মকর্তা, ব্যবসায়ীসহ অনেকে। এ অভিযোগে এরই মধ্যে কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। যার মধ্যে চারজনের অবৈধ সম্পদের অনুসন্ধান করা হচ্ছে।
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান জানান, দুর্নীতিতে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা জরুরি। কিন্তু কোনো নিরপরাধ ব্যক্তি যেন হয়রানির শিকার না হয় সে বিষয়ে সতর্ক থাকার পরামর্শ তাদের।
গোল্ডেন মনিরের সাথে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে আরো অন্তত একডজন ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারে দুদক, এ কথাও জানিয়েছে নির্ভরযোগ্য সূত্র।
আগামী পর্বে: নারী কেলেংকারীর দায়ে সরিয়ে দেয়া হচ্ছে গণপূর্তে অধিদপ্তরের অতিরিক্তি প্রধান প্রকৌশলী প্রদীপ কুমার বসুকে।