প্রকাশ: রোববার, ২০ ডিসেম্বর, ২০২০, ১০:৩৫ এএম আপডেট: ২০.১২.২০২০ ১২:৫১ পিএম | প্রিন্ট সংস্করণ
সারা দেশে করোনা রোগে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় প্রাণ হারিয়েছে আরও ২৫ জন। এসময় আরও ১ হাজার ২৬৭ জন নতুন আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে সারা দেশে করোনা রোগে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৫ লাখের কাছাকাছি অর্থাৎ রোগীর সংখ্যা বেড়ে ৪ লাখ ৯৯ হাজার ৫৬০ জনে দাঁড়িয়েছে। গতকাল শনিবার বিকেলে সর্বশেষ এই তথ্য জানায় স্বাস্থ্য অধিদফতর। এদিকে, গত একদিনে ২৫ জনের মৃত্যুর মধ্য দিয়ে এ নিয়ে সারা দেশে করোনায় মোট মৃতের সংখ্যা ৭ হাজার ২৪২ জনে পৌঁছালো। স্বাস্থ্য অধিদফতরের পক্ষ থেকে বলা হয়, বাসা এবং হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে আরও ১ হাজার ৯৮৭ জন রোগী সুস্থ হয়েছেন গত একদিনে। তাতে এ পর্যন্ত সুস্থ রোগীর মোট সংখ্যা বেড়ে ৪ লাখ ৩৫ হাজার ৬০১ জন হয়েছে। বাংলাদেশে করোনায় প্রথম সংক্রমিত রোগী ধরা পড়ে গত ৮ মার্চ, এই সংখ্যা ২৪ নভেম্বর পর্যন্ত সাড়ে ৪ লাখ অতিক্রম করে যায়। যার মধ্যে গত ২ জুলাই সর্বোচ্চ রোগী শনাক্ত হয়। সেই দিন ৪ হাজার ১৯ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়। আর প্রথম রোগী শনাক্তের ১০ দিন পর অর্থাৎ গত ১৮ মার্চ দেশে করোনায় প্রথম মৃত্যুর সংবাদ নিশ্চিত করা হয় স্বাস্থ্য অধিদফতরের পক্ষ থেকে। এরপর ১২ ডিসেম্বর এই মারা যাওয়া রোগীর সংখ্যা সাড়ে সাত হাজার ছাড়িয়ে গেল। এই হিসেবের মধ্যে ৩০ জুন এক দিনেই সর্বোচ্চ মৃত্যুর খবর প্রকাশিত হয়। সেই দিন ৬৪ জন মারা যান। এদিকে, বিশ^ করোনা রিপোর্ট প্রকাশকারী প্রতিষ্ঠান জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্য মতে, সারাবিশ্বে শনাক্তের দিক থেকে ২৬তম স্থান এবং মৃতের সংখ্যার দিক থেকে ৩৩তম অবস্থানে রয়েছে বাংলাদেশ।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্য বলছে, গত একদিনে সারা দেশে ১১৩টি আরটি-পিসিআর ল্যাব, ১৮টি জিন-এক্সপার্ট ল্যাব ও ২৯টি র্যাপিড অ্যান্টিজেন ল্যাবে অর্থাৎ সর্বমোট ১৬০টি ল্যাবে ১২ হাজার ৩০০টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এ পর্যন্ত পরীক্ষা হয়েছে ৩০ লাখ ৬২ হাজার ৩৬৪টি নমুনা। সরকারি ব্যবস্থাপনায় এ পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ২৪ লাখ ৪১ হাজার ২৪২টি। আর বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হয়েছে ৬ লাখ ২১ হাজার ১২২টি। শতকরা হিসেবে গত একদিনে নমুনা পরীক্ষার তথ্য মতে শনাক্তের হার ১০ দশমিক ৩০ শতাংশ। এ পর্যন্ত মোট শনাক্তের হার ১৬ দশমিক ৩১ শতাংশ। সেই হিসেবে শনাক্ত রেটে সুস্থতার হার ৮৭ দশমিক ২০ শতাংশ এবং মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৪৫ শতাংশ। সব মিলিয়ে সুস্থতার হার ভালো দাবি করছে স্বাস্থ্য বিভাগ।
গত একদিনে যারা মারা গেছেন, পুরুষের চেয়ে নারীর মৃত্যু কম হয়েছে। যেখানে ১৭ জন পুরুষ আর নারী ৮ জন। এদের সবাই হাসপাতালে মারা যান বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতর। আর বয়েসের হিসেবে ষাটোর্ধ্ব লোকের সংখ্যা বেশি। যেখানে ১৫ জনের বয়স জানা গেছে ৬০ বছরের বেশি, ৫ জনের বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে এবং ২ জনের বয়স ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে এবং ৩ জনের বয়স ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে জানা গেছে। আর বিভাগী হিসেবে ঢাকা বিভাগে সব চেয়ে বেশি। যেখানে মৃতদের মধ্যে ১৫ জন ঢাকা বিভাগের, ৪ জন চট্টগ্রাম বিভাগের, ১ জন করে মোট ২ জন রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের এবং ২ জন করে মোট ৪ জন খুলনা ও ময়মনসিংহ বিভাগের রোগী ছিলেন বলে জানা গেছে। দেশে এ পর্যন্ত মারা যাওয়া সংখ্যায় সব চেয়ে বেশি পুরুষ মারা গেছে। যেখানে ৭ হাজার ২৪২ জনের মধ্যে ৫ হাজার ৫২২ জনই পুরুষ এবং ১ হাজার ৭২০ জন নারী।
আর বিভাগীয় মৃত্যুর পরিসংখ্যানেও ষাটোর্ধ্ব বয়স্কদের মারা যাওয়া সংখ্যা পাওয়া যায় এসব তথ্যে। যেখানে ৩ হাজার ৯২৬ জনের বয়স ছিল ৬০ বছরের বেশি। এছাড়াও ১ হাজার ৮৫২ জনের বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে, ৮৫২ জনের বয়স ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে, ৩৬৭ জনের বয়স ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে, ১৫৭ জনের বয়স ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে, ৫৫ জনের বয়স ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে এবং ৩৩ জনের বয়স ছিল ১০ বছরেরও কম। এছাড়া ৩ হাজার ৯৫৯ জন ঢাকা বিভাগের, ১ হাজার ৩৪৩ জন চট্টগ্রাম বিভাগের, ৪২৬ জন রাজশাহী বিভাগের, ৫১৬ জন খুলনা বিভাগের, ২৩১ জন বরিশাল বিভাগের, ২৮৩ জন সিলেট বিভাগের, ৩২৬ জন রংপুর বিভাগের এবং ১৫৮ জন ময়মনসিংহ বিভাগের রোগী পাওয়া গেছে।