বার কাউন্সিল লিখিত পরীক্ষা, কেন্দ্র ভাঙচুরের অভিযোগে আটক ১২
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: রোববার, ২০ ডিসেম্বর, ২০২০, ১০:৩৫ এএম আপডেট: ২০.১২.২০২০ ১২:৫১ পিএম | প্রিন্ট সংস্করণ
বার কাউন্সিলের লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এসময় রাজধানীর বিভিন্ন পরীক্ষাকেন্দ্রে হট্টগোল ও ভাঙচুরের ঘঠনা ঘটে। এরমধ্যে মোহাম্মদপুর সরকারি স্কুল অ্যান্ড কলেজ পরীক্ষাকেন্দ্রে ভাঙচুরের অভিযোগে এখন পর্যন্ত ১২ জনকে আটক করা হয়েছে। গতকাল শনিবার সকাল ৯টা থেকে ঢাকার ১০টি কেন্দ্রে প্রায় ১৩ হাজার পরীক্ষার্থী অংশ নেন। এর মধ্যে মোহাম্মদপুর সরকারি স্কুল অ্যান্ড কলেজ কেন্দ্রে পরীক্ষাকেন্দ্রে ভাঙচুর করা হয় এবং পরীক্ষার্থীদের খাতা ছিঁড়ে ফেলার ঘটনা ঘটে। পরীক্ষার্থীদের জোর করে কেন্দ্র থেকে বের করেও দেওয়া হয়। এদিকে, পরীক্ষা বর্জনের ঘটনা ঘটে পুরান ঢাকার লক্ষ্মীবাজার মহানগর মহিলা কলেজ কেন্দ্রেও।
গতকাল সকালে পরীক্ষার প্রশ্ন কঠিন হওয়ার অজুহাতে বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন পরীক্ষার্থীরা। অনেকে কেন্দ্র থেকে বের হয়ে যান। শিক্ষার্থীদের দাবি, এবারের প্রশ্নপত্র অনেক তুলনামূলক বেশ কঠিন করা হয়েছে। এতে ১০ শতাংশ পরীক্ষার্থীও পাস করবে না বলে তাদের দাবি। পরীক্ষার্থীরা অভিযোগ করে বলেন, করোনা মহামারির কারণে লিখিত পরীক্ষা না নিয়ে শুধু ভাইভার মাধ্যমে আইনজীবী সনদ দেওয়ার দাবিতে আন্দোলন করায় প্রশ্ন অস্বাভাবিক কঠিন করা হয়েছে। কেউ কেউ অভিযোগ করেন, নির্ধারিত বইয়ের ভেতর থেকে প্রশ্ন করা হয়নি। সকাল সোয়া ৯টার দিকে পুরান ঢাকার মহানগর মহিলা কলেজ কেন্দ্রে দেখা গেছে, সব রুমের পরীক্ষার্থীরা শুরুতে হট্টগোল করতে থাকে। এক পর্যায়ে তারা রেগে গিয়ে রুম থেকে বের হয়ে যান। এতে কেন্দ্রজুড়ে আতঙ্ক তৈরি হয়। একই ধরনের ঘটনা ঘটেছে মোহাম্মদপুর সরকারি স্কুল অ্যান্ড কলেজ পরীক্ষা কেন্দ্রে। পরে সেখানে বিক্ষুব্ধ পরীক্ষার্থীরা কেন্দ্র ভাঙচুরও করেন। এদিকে, রাজধানীর পুরান ঢাকার লক্ষ্মীবাজারে ঢাকা মহানগর মহিলা কলেজ কেন্দ্র পরীক্ষা শুরু হলে প্রথমেই কিছু শিক্ষার্থী ‘প্রশ্ন ঠিক হয়নি’ বলে অভিযোগ করেন। এরপর তাদের সঙ্গে অনেকেই যুক্ত হন। এক পর্যায়ে তারা সিট থেকে উঠে পড়েন। এ নিয়ে পরীক্ষা হলে হট্টগোল শুরু হয়। এ সময় কিছু পরীক্ষার্থী পরীক্ষা দেওয়ার চেষ্টা করলেও বাকিরা তাদের অনুৎসাহিত করে। তারা পরীক্ষার্থীদের খাতা টেনে নিয়ে বাইরে চলে যান।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন পরীক্ষার্থী জানিয়েছেন, ‘বার কাউন্সিল যে প্রশ্ন করেছে তা কোন প্রশ্নের মাপকাঠিতেই পড়ে না। এটা কোনো প্রশ্নই হয়নি। জুডিশিয়ারির পরীক্ষায় এমন প্রশ্ন হতেই পারে না। এ কারণে আমরা পরীক্ষা না দিয়ে বের হয়ে গেছি। কিছু শিক্ষার্থী পরীক্ষা দিতে চাইলেও তাদেরকে বাকিরা ধরে বের করে দিয়েছে। এখন শিক্ষার্থীরা হলের বাইরে অবস্থান করছে।’ বাংলাদেশ বার কাউন্সিলে আইনজীবীদের সনদ পেতে নৈর্ব্যক্তিক, লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হয়। আবার ওই তিন ধাপের যেকোনো একটি পরীক্ষায় শিক্ষার্থীরা একবার উত্তীর্ণ হলে পরবর্তী পরীক্ষায় তারা দ্বিতীয় ও শেষবারের মতো অংশগ্রহণের সুযোগ পান। তবে দ্বিতীয়বারেও অনুত্তীর্ণ হলে তাদের পুনরায় শুরু থেকেই পরীক্ষায় অংশ নিতে হয়। সেই হিসেবে ২০১৭ সালের ৩৪ হাজার শিক্ষার্থীর মধ্যে থেকে লিখিত পরীক্ষায় দ্বিতীয় ও শেষবারের মতো বাদ পড়া তিন হাজার ৫৯০ জন শিক্ষার্থী এবং ২০২০ সালে প্রায় ৭০ হাজার শিক্ষানবিশ আইনজীবীর মধ্যে নৈর্ব্যক্তিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ আট হাজার ৭৬৪ শিক্ষার্থীসহ সর্ব মোট ১২ হাজার ৮৫৮ জন সনদপ্রত্যাশী এবার লিখিত পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছেন।