রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪ ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

শিরোনাম: স্কুলে ভর্তির আবেদন শুরু আজ   স্কুলে ভর্তির আবেদন শুরু আজ   স্কুলে ভর্তির আবেদন শুরু আজ   ফিল্ম সিটি থেকে বাদ দেওয়া হচ্ছে ‘বঙ্গবন্ধুর’ নাম   সিলেটের সাবেক সংসদ সদস্য ইয়াহিয়া গ্রেপ্তার   অনন্য অসাধারণ শেখ হাসিনা আমাদের গর্ব   নরসিংদীতে ‘থার্টি ফার্স্ট’ উপলক্ষে চাঁদা না দেয়ায় ব্যবসায়ীকে কোপালো সন্ত্রাসীরা   
https://www.dailyvorerpata.com/ad/Inner Body.gif
কোন পথে এগোবে ভারত-বাংলাদেশ কূটনৈতিক সম্পর্ক?
ভোরের পাতা ডেস্ক
প্রকাশ: রোববার, ২০ ডিসেম্বর, ২০২০, ১০:৩৫ এএম আপডেট: ২০.১২.২০২০ ১২:৫১ পিএম | প্রিন্ট সংস্করণ

১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে বড় একটি ভূমিকা পালন করেছিল প্রতিবেশী দেশ ভারত। এই সূত্রেই গড়ে উঠা সম্পর্ক আবারো সামনে এসেছে  বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মধ্যে গত ১৭ ডিসেম্বর দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের মধ্য দিয়েছে। দু’দেশেরই কিছু টানপোড়ন রয়েছে। কখনো সীমান্ত হত্যা, কখনো পানি বণ্টন চুক্তি, কখনো সীমান্তের অপরাধ ও অবৈধ বাণিজ্যে নিয়ে তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছে দু’দেশেরই। সে তিক্ত অভিজ্ঞতার সমাধান করে দু’দেশ কি তাদের মধুর সম্পর্ক ধরে রাখতে পারবে- এ নিয়ে দীর্ঘ জল্পনা কল্পনা রয়েছে কূটনৈতিক বিশ্লেষক মহলে। বিশ্লেষকদের অনেকেই এর মধ্যে গত ১৭ ডিসেম্বর হওয়া দু’দেশের দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে দেখতে শুরু করেছেন সম্পর্কের ইতিবাচক দিক হিসেবে। এ বৈঠকের পরপরই নতুন করে আলোচনায় আসে তিস্তা চুক্তি। দু’দেশের যৌথ বিবৃতিতে স্পষ্ট করা হয়েছে, ২০১১ সালে দুই দেশের সরকার তিস্তার পানি বণ্টন সংক্রান্ত যে চুক্তিতে সম্মত হয়েছিল, সেটি দ্রুত সই করা প্রয়োজন। যৌথ বিবৃতির মাধ্যমে পশ্চিবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দোপাধ্যয়ের প্রস্তাবিত বিকল্প তিস্তা চুক্তির সঙ্গে বাংলাদেশ তো নয়ই, ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারও একমত নয়। বরং দু’দেশের সম্মতিতে হওয়া ২০১১ সালের চুক্তিটি বাস্তবায়নে মোদি সরকার ধারাবাহিকভাবে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। বিবৃতিতে বলা হয়, দুই দেশের সরকার ২০১১ সালে তিস্তার পানি বণ্টনের প্রশ্নে অন্তর্বর্তী চুক্তিতে রাজি হয়েছিল। সেটি এবার দ্রুত সই করার দিকে জোর দিয়েছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। জবাবে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি জানিয়েছেন, ভারত সরকারের ধারাবাহিক প্রয়াস চলছে। এ ব্যাপারে ভারতের প্রতিশ্রুতি অটুট। পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচনের ঠিক আগ মুহূর্তে শেখ হাসিনা ও নরেন্দ্র মোদির বৈঠক ও যৌথ বিবৃতির পর দেশ দু’টির রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচনা উঠেছে, তৃণমূলকে হটিয়ে রাজ্যে বিজেপি ক্ষমতায় এলেই তিস্তা চুক্তি সই হওয়ার ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে। তবে অনেক কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, ২০১১ সালে তিস্তা চুক্তিতে সম্মতির পরেও তা বাস্তবায়িত হয়নি। ২০১৭ সালে শেখ হাসিনা ভারত সফরকালে তিস্তা চুক্তির বিকল্প পানি বণ্টন চুক্তি প্রস্তাব করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা। সেই প্রস্তাবে- তোর্সা-জলঢাকা-রায়ডাক নিয়ে নদী কমিশন গড়ে তোলার কথা বলা হয়। তবে বাংলাদেশ বরাবরই বলে আসছে, তিস্তা ও তোর্সার অববাহিকা এক নয়। এছাড়া ভূ-প্রকৃতিগত কারণে তোর্সার পানি বাংলাদেশে আনাও সম্ভব নয়। ফলে তোর্সা, জলঢাকা বা রায়ডাকে ভারত অতিরিক্ত পানি দিলেও তিস্তার দুর্দশা ঘুচবে না। বিশ্লেষকরা আরও বলছেন, আসন্ন বিধানসভার ভোটই ঠিক করবে তিস্তার পানি কোন দিকে গড়াবে। কিন্তু মোদি সরকার চায় না, তিস্তাকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের ছিদ্র দিয়ে চীন ঢুকে পড়–ক। কারণ এরই মধ্যে চীনের সঙ্গে বাংলাদেশ প্রায় ১০০ কোটি ডলারের ঋণ চুক্তি নিয়ে আলোচনা করছে। চীনের পক্ষ থেকে ঋণের অর্থে তিস্তা অববাহিকার সামগ্রিক পরিচালন ব্যবস্থা এবং তিস্তা নদীর বিভিন্ন প্রকল্প পুনঃপ্রতিষ্ঠার প্রস্তাব করা হচ্ছে। ফলে পশ্চিমবঙ্গে রাজ্যসভা দখলে নিতে পারলেই বিজেপি কংগ্রেস সরকারের তিস্তা চুক্তি চূড়ান্তভাবে বাস্তবায়ন করবে বলে ব্যাপক সম্ভাবনার কথা বলছেন দু’দেশের বিশ্লেষকরা। ২০১১ সালে বাংলাদেশ সফরকালে ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং ও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তিস্তা চুক্তির ব্যাপারে একমত হন। তবে মমতা বন্দোপাধ্যয়ের একক বাধায় ঝুলে যায় চূড়ান্ত চুক্তি সই, যা এখনও সেই অবস্থাতেই রয়েছে। এদিকে, ভারতের প্রভাবশালী পত্রিকা দ্য হিন্দু’র ‘ফ্রেন্ড এন্ড নেইবার :অন ইন্ডিয়া-বাংলাদেশ ভার্চুয়াল সামিট’ শীর্ষক এক সম্পাদকীয়তে বলা হয়েছে- বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মধ্যে সম্প্রতি যে ভার্চুয়াল সামিট অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে তারা সীমান্তের সহিংসতা থেকে শুরু করে কোভিড-১৯ মোকাবিলা পর্যন্ত বিভিন্ন ইস্যুতে কথা বলেছেন। সম্প্রতি বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যকার সম্পর্ক যে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করেছে, এই সামিট বলে দেয় সেই সম্পর্ক পুনর্গঠনে তাদের সদিচ্ছা আছে। ভারতের প্রতিবেশীই প্রথম নীতির অধীনে বাংলাদেশকে একটি ‘মেজর পিলার’ বা বড় স্তম্ভ বলে অভিহিত করেছেন নরেন্দ্র মোদি। অন্যদিকে আগামী মার্চে বাংলাদেশের ৫০তম স্বাধীনতা দিবস। এ উপলক্ষে মোদিকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন শেখ হাসিনা। অনেক বিশ্লেষকরা বলছেন, বাংলাদেশের সঙ্গে বন্ধুত্ব অটুট থাকলেও সীমান্তের বিষয়টি স্পর্শকাতর হয়ে উঠেছে। একটি অধিকার বিষয়ক পর্যবেক্ষকের মতে, এ বছরের প্রথম ৬ মাসে সীমান্তে ভারতীয় বাহিনী কমপক্ষে ২৫ বাংলাদেশিকে হত্যা করেছে। এছাড়া তিস্তার পানি বণ্টন নিয়ে বিরোধ রয়েছে অনিষ্পন্ন অবস্থায়। ভারতে প্রস্তাবিত ন্যাশনাল রেজিস্টার অব সিটিজেন্স বা এনআরসি’কে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ‘অপ্রয়োজনীয়’ আখ্যায়িত করেছেন। ভারতের নাগরকিত্ব সংশোধন আইন এবং প্রস্তাবিত এনআরসি ইস্যু ভারতবিরোধী একটি নেতিবাচক মনোভাব সৃষ্টি করেছে। সর্বোপরি, অবকাঠামো খাতে বিনিয়োগ বৃদ্ধি এবং অর্থনৈতিক সহযোগিতা বিস্তৃত করার মাধ্যমে বাংলাদেশের গভীরে প্রবেশ করছে চীন। তাই ভারতের জন্য সব সময়ের এই বন্ধুর সঙ্গে সম্পর্ক বৃদ্ধি করা অপরিহার্য। বাংলাদেশ তার স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন করতে যাচ্ছে। তাই এই সম্পর্ক বৃদ্ধি করার জন্য এর চেয়ে ভালো সময় আর হতে পারে না। সংকটের মধ্য দিয়েও বাংলাদেশকে তুলনামূলকভাবে ভালোভাবে চালিয়ে নিচ্ছেন শেখ হাসিনা। আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে দক্ষিণ এশিয়ায় ভারতের সবচেয়ে বড় বাণিজ্যিক অংশীদার বাংলাদেশ তার অর্থনৈতিক কর্মকা- বিস্তৃত করেছে। উন্নতি করেছে সামাজিক কল্যাণে। আওয়ামী লীগ প্রশাসনকে কঠোরভাগে আঁকড়ে থাকা সত্ত্বেও ইসলামপন্থিদের পক্ষ থেকে অব্যাহত চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করছেন শেখ হাসিনা। যুদ্ধাপরাধ ও দুর্নীতির বিচারে বিরোধী দল- বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি এবং পাকিস্তানপন্থি তার মিত্রদল জামায়াতে ইসলামীকে দুর্বল করে দিয়েছে। কিন্তু হেফাজতে ইসলাম নামে আরেকটি ইসলামপন্থি গ্রুপ সংবাদ শিরোনাম হয়েছে সম্প্রতি, যখন তারা ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রনের বিরুদ্ধে বড় ধরনের আন্দোলন করে এবং বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য স্থাপনে সরকারি পরিকল্পনার বিরোধিতা করে। হেফাজত বলেছে, ইসলামে মূর্তি স্থাপন নিষিদ্ধ এবং এসব মূর্তি ভেঙে ফেলা হবে। কিন্তু সরকার দৃশ্যত তার পরিকল্পনা নিয়ে অগ্রসর হবে বলেই মনে হচ্ছে। ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসে প্রধানমন্ত্রী হাসিনা বলেছেন, ধর্মের ভিত্তিতে তিনি দেশকে বিভক্ত করতে দেবেন না। এর মধ্য দিয়ে হেফাজতের দিকে পরোক্ষভাবে ইঙ্গিত করা হয়েছে। ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে সম্পর্ক ঐতিহাসিক। এই সম্পর্ককে নষ্ট করতে দেওয়া উচিত নয়। নয়া দিল্লির উচিত দক্ষিণ এশিয়ায় পরিবর্তিত পরিস্থিতি এবং ক্রমবর্ধমান প্রতিদ্বন্দ্বিতার দিকে বিস্তৃত দৃষ্টি দেওয়া এবং ঢাকার জন্য মুক্তমনে অগ্রসর হওয়া।




« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
https://www.dailyvorerpata.com/ad/BHousing_Investment_Press_6colX6in20200324140555 (1).jpg
https://www.dailyvorerpata.com/ad/last (2).gif
https://www.dailyvorerpata.com/ad/431205536-ezgif.com-optimize.gif
https://www.dailyvorerpata.com/ad/agrani.gif
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ


সম্পাদক ও প্রকাশক: ড. কাজী এরতেজা হাসান
সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
সাউথ ওয়েস্টার্ন মিডিয়া গ্রুপ


©ডেইলি ভোরের পাতা ডটকম


©ডেইলি ভোরের পাতা ডটকম

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : ৯৩ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫।
ফোন:৮৮-০২-৪১০১০০৮৭, ৪১০১০০৮৬, বিজ্ঞাপন বিভাগ: ৪১০১০০৮৪, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৪১০১০০৮৫
অনলাইন ইমেইল: [email protected] বার্তা ইমেইল:[email protected] বিজ্ঞাপন ইমেইল:[email protected]