প্রকাশ: রোববার, ২০ ডিসেম্বর, ২০২০, ১২:৪৪ পিএম আপডেট: ২০.১২.২০২০ ১২:৪৭ পিএম | প্রিন্ট সংস্করণ
কয়া
মহাবিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে দ্বন্দ্বের জেরেই বাঘা যতীনের ভাস্কর্য
ভাঙা হয়েছে বলে দাবি করেছেন কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার (এসপি) তানভীর আরাফাত।
গতকাল শনিবার দুপুরে তার কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ দাবি করেন।
তিনি বলেন, এ ভাস্কর্যটি ভাঙচুরের সঙ্গে ধর্মীয় কোনও সম্পর্ক নেই।
ব্যক্তিগত আক্রোশেই এটি ভাঙচুর করা হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার রাতের আঁধারে
কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার কয়া গ্রামে বাঘা যতীনের ভাস্কর্যটি ভাঙচুরের
ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় শুক্রবার বিকেলে কয়া কলেজের অধ্যক্ষ হারুন অর রশীদ বাদী
হয়ে বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা করেন। ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় ডেকে
নেওয়া হয় কয়া ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি যুবলীগ নেতা আনিসুর রহমানকে। এছাড়া
আটক করা হয় তার সহযোগী সবুজ হোসেন (২০) ও হৃদয় আহমেদকে (২০)। এ মামলায়
যুবলীগ নেতা আনিসুরসহ আটকদের গ্রেফতার দেখানো হয়েছে জানিয়ে এসপি তানভীর
আরাফাত জানান, বাচ্চু (৩২) নামে আরেক যুবককে গ্রেফতারে অভিযান চলছে।
তিনি
বলেন, আনিসুরের সঙ্গে কয়া মহাবিদ্যালয় (কলেজ) কর্তৃপক্ষের আগে থেকেই
দ্বন্দ্ব আছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে সহযোগিদের নিয়ে তিনি কলেজের প্রধান ফটকের
সামনে সড়কের পাশে স্থাপিত বাঘা যতীনের ভাস্কর্যটি ভাঙচুর করেন। এ
ভাস্কর্যটি ভাঙচুরের ঘটনার সঙ্গে ধর্মীয় কোনও সম্পর্ক নেই। ব্যক্তিগত
আক্রোশেই এটি ভাঙচুর করা হয়েছে। তবে এ ঘটনার মাধ্যমে হীন উদ্দেশ্য সাধনের
ষড়যন্ত্র ছিল কি না তা তদন্তের মাধ্যমে খুঁজে দেখা হবে। এর আগে গত শুক্রবার
রাত পৌনে ৯টার দিকে কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মজিবুর
রহমান নিশ্চিত করেন, বিপ্লবী বাঘা যতীনের ভাস্কর্য ভাঙচুরের ঘটনায়
জিজ্ঞাসাবাদের জন্য কয়া ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি আনিসুর রহমানসহ কয়া
মহাবিদ্যালয়ের সভাপতি নিজামুল হক, অধ্যক্ষ হারুন অর রশীদ, নৈশপ্রহরী খলিলুর
রহমানকে থানায় নেওয়া হয়। সেখানেই জিজ্ঞাসাবাদের মাধ্যমে যুবলীগ নেতা ও তার
সহযোগীদের নংশ্লিষ্টতার ব্যাপারে নিশ্চিত হয় পুলিশ।
এদিকে ভাস্কর্য
ভাঙচুরের ঘটনা খতিয়ে দেখতে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে তিন
সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এর আগে, গত ৪ ডিসেম্বর দিনগত রাত
২টার দিকে কুষ্টিয়া শহরের পাঁচ রাস্তার মোড়ে বঙ্গবন্ধুর নির্মাণাধীন
ভাস্কর্য ভাঙচুর করে দুর্বৃত্তরা। এসময় ভাস্কর্যের মুখ ও হাতের অংশ ভেঙে
ফেলে তারা। পরে পুলিশ সিসি ক্যামেরার ছবি দেখে ভাঙচুরের সঙ্গে জড়িত দুই
মাদরাসাছাত্রকে শনাক্ত ও গ্রেফতার করে। ঘটনার পরে মাদরাসার ওই দুই ছাত্রকে
সহযোগিতা করার জন্য মাদরাসার দুই শিক্ষককেও গ্রেফতার করা হয়। মাদরাসার দুই
শিক্ষার্থী ও দুই শিক্ষক বর্তমানে কারাগারে আছেন।