প্রকাশ: শনিবার, ১৯ ডিসেম্বর, ২০২০, ১০:৪৭ এএম আপডেট: ১৯.১২.২০২০ ১:১৯ পিএম | প্রিন্ট সংস্করণ
পাবনার ভাঙ্গুরায় ট্রাকের ধাক্কায় অটোভ্যানচালক ও ৪ যাত্রীসহ সারা দেশে ১০ জন নিহত হয়েছেন। গতকাল শুক্রবার সড়কে এসব দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন প্রায় অর্ধশতাধিক। এরমধ্যে দুপুর দেড়টার দিকে উপজেলার ভেড়ামারা-পাথরঘটা সড়কের রাঙ্গালিয়া লিঙ্ক রোডে ট্রাকের ধাক্কায় অটোভ্যানচালকসহ ৪ যাত্রী নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে তিনজন একই পরিবারের সদস্য বলে জানা গেছে। তাদের গ্রামের বাড়ি চর ভাঙ্গুরা। তাৎক্ষণিকভাবে তাদের পরিচয় জানা যায়নি। ভাঙ্গুরা থানার ওসি আনোয়ার হোসেন দুর্ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, যাত্রীবাহী একটি অটোভ্যানকে দ্রুতগতির ট্রাক ধাক্কা দিলে ঘটনাস্থলেই তিন যাত্রী নিহত হন। গুরুতর আহত হন ভ্যানচালক। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকেও মৃত ঘোষণা করেন।
এদিকে হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জে পিকআপ ভ্যানের সঙ্গে সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও ইজিবাইকের সংঘর্ষে এক চিকিৎসকসহ দুইজন নিহত হয়েছে। গতকাল শুক্রবার বেলা ১২টার দিকে উপজেলার কলিমনগর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এতে আহত হয়েছেন চারজন। নিহতরা হলেন-হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালের চিকিৎসক দিপংকর পোদ্দার ও ময়মনসিংহ জেলার গফরগাঁও উপজেলার শ্রীপান গ্রামের জিলহাজ উদ্দিন। শায়েস্তাগঞ্জ থানার ওসি অজয় চন্দ্র দেব জানান, শায়েস্তাগঞ্জ থেকে একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও টমটম ইজিবাইক হবিগঞ্জ যাওয়ার পথে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি পিকআপের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলেই দু’জন নিহত হন। আহত হন চারজন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে হতাহতদের উদ্ধার করে। আহতদের হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এছাড়া খুলনার তেরখাদায় দুই মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষে এক কলেজ শিক্ষক নিহত হয়েছেন। নিহত সেলিম আহমেদ (৩৫) তেরখাদার চিত্রা মহিলা ডিগ্রি কলেজের প্রভাষক। উপজেলার আজগড়ার গাউচবাড়ী এলাকায় শুক্রবার সকালে তিনি মারা যান বলে তেরখাদা থানার ওসি মোহাম্মদ গোলাম মোস্তফা জানান। তিনি বলেন, খুলনা থেকে তেরখাদায় ফিরছিলেন সেলিম আহমেদ। পথে তার মোটরসাইকেলের সাথে আরেকটি মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষে তিনি আহত হন। স্থানীয়রা তাকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ট্রাক্টরের ধাক্কায় এক রিকশাচালক নিহত হয়েছেন। শুক্রবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে সদর উপজেলার শেরপুর এলাকার কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত মিলন মিয়া (৪০) সরাইল উপজেলার নোয়াগাঁও ইউনিয়নের আঁখিতারা গ্রামের বুলা মিয়ার ছেলে। প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে খাঁটিহাতা হাইওয়ে থানা পুলিশের ওসি মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘সকালে রিকশা নিয়ে মহাসড়কের পাশে একটি চায়ের দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে চা পান করছিলেন মিলন। ‘এ সময় একটি বালুবোঝাই একটি ট্রাক্টর এসে মিলনকে ধাক্কা দিলে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।’ পরে স্থানীয়দের সহায়তায় ট্রাক্টরটিকে আটক করা হলেও চালক ও তার সহকারী পালিয়ে গেছে বলে জানান ওসি। হাটহাজারীতে মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় হোসেন তারেক বাপ্পা (২৪) নামের এক যুবক নিহত ও আহাদ নামের একজন গুরুতর আহত হয়েছে। নিহত বাপ্পা উপজেলার মেখল ইউনিয়নের পশ্চিম মেখলস্থ ডা. আবদুর রশিদের বাড়ির ব্যবসায়ী মো. আবুল কালামের (কনক) ২য় পুত্র। গতকাল দিনগত রাত ৩টার দিকে হাটহাজারী-রাঙামাটি মহাসড়কের সত্তারঘাট এলাকার গড়দুয়ারা মোড়ে এ দুর্ঘটনা ঘটে। সূত্রে জানা যায়, তারেক ও বাপ্পা উপজেলার পার্শ্ববর্তী রাউজানে বিয়ের অনুষ্ঠান থেকে রাতে নিজস্ব গাড়ি করে বাসায় ফেরার পথে সত্তারাঘাট ব্রিজের পশ্চিম পার্শ্বে গড়দুয়ারা সড়ক মোড়ে রাস্তার পাশে থাকা একটি বাসের সাথে সজোরে ধাক্কা লাগে। এতে তাদের বহনকারী কারটি (ঢাকা মেট্টো ভ ১১-১১৬৮)দুমড়ে মুচড়ে গেলে ঘটনাস্থলেই বাপ্পার মৃত্যু হয়। একই ঘটনায় সাথে থাকা নিহতের খালাত ভাই আহাদ গুরুতর আহত হয়। দুর্ঘটনার পর স্থানীয়রা গুরুতর আহত আহাদকে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম শহরে একটি বেসরকারি হাসপাতালে আইসিউতে নিয়ে ভর্তি করে। খবর পেয়ে হাটহাজারী মডেল থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে দুর্ঘটনা কবলিত গাড়ি থানা হেফাজতে নিয়ে আসে। তারা দীর্ঘদিন ধরে সপরিবারে হাটহাজরী পশু হাসপাতালের পাশে কনক বিল্ডিংয়ে বসবাস করে আসছেন। এদিকে একইদিন বাদে জুমা জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়। হাটহাজারী মডেল থানা পুলিশ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, এ ঘটনায় আইনানুগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে ইজিবাইক (টমটম) খাদে পড়ে ১ জন নিহত ও আরো ৪ যাত্রী আহত হয়েছেন। ঘটনাটি ঘটেছে জগন্নাথপুর উপজেলার চিলাউড়া-হলদিপুর ইউনিয়নের ভূরাখালি গ্রাম এলাকার রাস্তায়। নিহত যাত্রীর নাম আরশ মিয়া (৫৫)। তিনি দিরাই উপজেলার মাটিয়াপুর গ্রামের নিয়ামত উল্লার ছেলে। জানা গেছে, ১৭ ডিসেম্বর রাতে একটি যাত্রীবাহী ইজিবাইক (টমটম) জগন্নাথপুর থেকে ভূরাখালি যাওয়ার পথে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে গেলে এ দুর্ঘটনা ঘটে। এ সময় গাড়িতে থাকা যাত্রী আরশ মিয়া, লিংকন মিয়া, শাহিন মিয়া, কামরুল ইসলাম ও সুরমা বেগম সহ ৫ জন আহত হন। আহতদের আশঙ্কাজনক অবস্থায় ভোররাত পৌণে ৪ টার দিকে জগন্নাথপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসা হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক সবাইকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করেন। এর মধ্যে সিলেটে গিয়ে আহত আরশ মিয়ার মৃত্যু হয়।