প্রকাশ: শনিবার, ১৯ ডিসেম্বর, ২০২০, ১০:৫৪ এএম | অনলাইন সংস্করণ
কিশোরগঞ্জের নিকলী উপজেলার একমাত্র নারী মুক্তিযোদ্ধা সখিনা বেগমের (৭২)। ১৯৭১ সালে যেসব নারী বীরত্বের সঙ্গে রণাঙ্গনে লড়াই করে সাহসিকতার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন সখিনা বেগম তাদের মধ্যে একজন। ১৯৭১ সালে রামদা দিয়ে পাঁচ রাজাকারকে হত্যা করেন এই নারী মুক্তিযোদ্ধা।
‘সেদিন যারা ধর্ষণ করেছে, গণহত্যা করেছে, দেশের সম্পদ লুট করেছে, সেই রাজাকাররা যখন সদর্পে ঘুরে বেড়ায়। এ কথা মনে হলে মাথা গরম হয়ে যায় সখিনা বেগমের। সখিনা বেগমের ইচ্ছে করে একাত্তরের রামদাটি আবার হাতে নিই।’
সখিনা বেগমের জন্ম নিকলী উপজেলার গুরুই গ্রামে। ১৯৭১ সালে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা বসু বাহিনীর অধীনে প্রশিক্ষণ নিয়ে সখিনা বেগম বিভিন্ন স্থানে সমুখযুদ্ধে অংশ নেন। ১৯ অক্টোবর নিকলীকে মুক্ত করতে গিয়ে তার বোনের ছেলে মতিউর রহমান পাকিস্তানি বাহিনীর সঙ্গে সম্মুখযুদ্ধে শহীদ হন। অক্টোবরের শেষের দিকে মুক্তিযোদ্ধারা পাকিস্তানি বাহিনীর ওপর হামলা চালান। যুদ্ধে বহু পাকিস্তানি সেনা ও রাজাকার নিহত হয়। সখিনা বেগম সেই যুদ্ধে একাই পাঁচ রাজাকারকে রামদা দিয়ে হত্যা করেন। তার ব্যবহার করা ওই রামদা মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে সংরক্ষিত রয়েছে। একাত্তরে সখিনা বেগমের সাহসিকতার কথা শুনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৯৯৮ সালে তাকে ৫০ হাজার টাকা অনুদান দেন। ১৯৯৮ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গুরুই গ্রামে তাকে তিন শতাংশ খাসজমিও বরাদ্দ দেয়। কিন্তু টাকার অভাবে সেই জমিও বিক্রি দেন। তাই বরমাইপাড়ায় খালার বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন বীরাঙ্গনা সখিনা বেগম। নিঃসন্তান সখিনা বেগমের স্বামী মারা গেছেন পাকিস্তান আমলেই।
সখিনা বেগম বলেন, দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তানদের হত্যার বদলা নেওয়ার সময় এসেছে। রাজাকারদের বিচার বর্তমান সরকার শুরু যখন করেছে। আশা করি এ সরকারই এর বিচার শেষ করেই ছাড়বে। এ বিচার কাজ শেষ করতে এখন নতুন প্রজন্মের সময়ের দাবি।
জানা যায়, সখিনা বেগম ছিলেন একজন দুঃসাহসিক নারী মুক্তিযোদ্ধা। দেশ স্বাধীন হওয়ার পরও স্থানীয় রাজাকাররা তার ভয়ে অনেক দিন পালিয়ে ছিল।