#উন্নয়নের ফিনিক্স পাখি আমাদের শেখ হাসিনা: ড. মো. আফজাল হোসেন।
#বিশ্বের মানচিত্রে মর্যাদাশীল জাতি হিসেবে আমরা অবস্থান করছি: সাজ্জাদ আলম খান তপু।
#বাংলাদেশের অহংকার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা: মো: তোফায়েল আহমেদ খাঁন।
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এ দেশ স্বাধীন করেছেন, এ স্বাধীনতার পথ তৈরি করার জন্য তিনি তার জীবনের মহামূল্যবান সময়গুলো কারাগারের অন্ধকার কারাগারে কাটিয়েছেন কিন্তু এদেশকে মুক্ত করে গেছেন। শেখ হাসিনাও তেমনি সারা বিশ্বের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করেও এদেশের উন্নয়ন ও মানুষের অধিকার আদায়ে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। জনগণের প্রতি প্রদত্ত প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী কাজ করা এবং এদেশের সার্বিক উন্নয়নের জন্য নিজের জীবনকে বাজি রাখা। তার এ সফলতার যে কারণগুলোকে মোটাদাগে চিহ্নিত করা যায় সেগুলো হচ্ছে বাংলাদেশের সফলতা ও উন্নয়নের জন্য লক্ষ্য নির্ধারণ করা, সকল বাধা-বিপত্তিকে এড়িয়ে সেই লক্ষ্যে পোঁছানো। সর্বাঙ্গে বলা যায়, শেখ হাসিনাই বাংলাদেশের একমাত্রও উন্নয়নের প্রতীক।
দৈনিক ভোরের পাতার নিয়মিত আয়োজন ভোরের পাতা সংলাপের ১৯২তম পর্বে এসব কথা বলেন আলোচকরা। শুক্রবার (১৮ ডিসেম্বর) আলোচক হিসাবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্যুরিজম এন্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আফজাল হোসেন, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে) এর সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ আলম খান তপু, ইতালি মিলান লোম্বারদিয়া স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মো: তোফায়েল আহমেদ খাঁন (তপু)। দৈনিক ভোরের পাতা সম্পাদক ও প্রকাশক ড. কাজী এরতেজা হাসানের পরিকল্পনা ও নির্দেশনায় অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন সাবেক তথ্য সচিব নাসির উদ্দিন আহমেদ।
ড. মো. আফজাল হোসেন বলেন, ধন্যবাদ সঞ্চালক নাসির উদ্দিন আহমেদকে আজকে এমন একটি সুন্দর সংলাপে আমাকে আমন্ত্রণ জানানোর জন্য। আমি বিজয়ের এই মাসে কৃতজ্ঞচিত্তে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি শেখ মুজিবুর রহমানকে শ্রদ্ধা জানিয়ে আমার আজকের বক্তব্য শুরু করছি। সেই সাথে ৫২ এর ভাষা আন্দোলনে যারা শহীদ হয়েছিলেন, ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে যারা শহীদ হয়েছিলেন, সেই সাথে ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুর সাথে তার পরিবারের যারা শহীদ হয়েছিলেন তাদের সবার আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি। আজকে শেখ হাসিনা শুধু বাংলার গৌরব নয়, সমগ্র বিশ্বের গৌরবে পরিণীত হয়েছে। তাকে নানান দেশে নানান খেতাবে ভূষিত করা হয়েছে। আমি বলি তিনি হলো ফিনিক্স পাখি। উড়িয়ে যাওয়া ছাই হতে উড়ন্ত পাখি। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বরে আগে আমাদের কিছুই ছিলো না। যেটুকু ইন্সট্রাক্টার ও রাস্তাঘাট ছিলো সেগুলো সব ধ্বংস অবস্থায় ছিল। কিন্তু যেটুকু অবস্থায় ছিল সেখান থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তার সাড়ে তিন বছরের আমলে তা আরও স্বয়ংসম্পূর্ণ করে গিয়েছিলেন। কিন্তু তার শাসনামলের পথি মধ্যে ১৯৭১ সালের পরাজিত শক্তি, সেই পাকিস্তানের প্রেতাত্মারা আমার বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করেছিলেন। আজকে তার রয়ে যাওয়া দুই কন্যার মধ্যে শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর রেখে যাওয়া অসমাপ্ত স্বপ্ন গুলো একটু একটু করে পূর্ণ করে যাচ্ছেন। এবং এই ব্যাপারে জননেত্রী শেখ হাসিনা ব্যাপক অগ্রসর হয়েছে। আমরা যদি দেশের সকল অর্থনৈতিক সূচক, মানবিক সূচক, সামাজিক সূচক, শিক্ষা সূচক, ইন্ডাস্ট্রিয়ালের সূচক, কৃষিস্বয়ংসম্পূর্ণার দিকে তাকাই তাহলে সকল ক্ষেত্রেই শেখ হাসিনার ভিশনারি নেতৃত্বের সুফলতা দেখতে পাবো। আজ দেশের সর্বশেষ ও সর্ববৃহৎ বিজয় হচ্ছে পদ্মা বিজয়। এই পদ্মা সেতু নিয়ে ঘটেছে নানা ঘটনা। দেশি-বিদেশি বহু ষড়যন্ত্রও হয়েছে। হয়েছে রাজনৈতিক নোংরা খেলা আর নোংরা বক্তব্য। সকল সমালোচনার মধ্যেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার স্বভাবসুলভ দৃঢ়তা দিয়ে সেদিন এমন এক ঐতিহাসিক ঘোষণা দিয়ে বসলেন, যা শুনে বাংলার মানুষ আশ্চর্য হয়ে গেল। তিনি পরিষ্কার ঘোষণা দিলেন, ‘পদ্মা সেতু নিজেদের অর্থায়নেই হবে।’ এবং আজ তাই হয়েছে। যে জাতি বিশাল পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই করে ৯ মাসের মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে ১৬ ডিসেম্বর বিজয়ের পতাকা ছিনিয়ে এনেছিল সেই জাতির পদ্মা সেতুর বাস্তবায়ন নতুন বিজয়। আমরা যতটুকু স্বপ্ন দেখেছিলাম তার থেকে বেশি আজ আমরা পেয়ে গিয়েছি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে।
সাজ্জাদ আলম খান তপু বলেন, এই যে আমরা ১৫ ডিসেম্বরে খবর পেলাম বাংলাদেশের রিজার্ভ ৪২ দশমিক ০৯ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে গিয়েছে। অর্থনীতির এই সূচক দিয়ে আমি বোঝাতে চাই, আমাদের অর্থনীতির সুনিপুণ বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে আমাদের দেশে। একসময় উন্নত বিশ্বের দেশের মধ্যে চীন-হংকংয়ের মত দেশ ভাবতো কিভাবে নিজের দেশের রিজার্ভকে উন্নয়নের অগ্রগতিতে কিভাবে ব্যবহার করা যায়। বাংলাদেশেরও কিন্তু একসময় এমন দিন গিয়েছে যে আমাদের আমদানির ব্যয় মেটাতে পারবো কিনা। উদ্বিগ্ন থাকতে হতো তখনকার সরকারের নীতি নির্ধারকদের। এখন কিন্তু সময় পাল্টে গিয়েছে। এখন ১০ থেকে ১১ মাসের আমদানির সকল ব্যয় মিটানোর সক্ষমতা অর্জন করেছি এই রিজার্ভ দিয়ে। এখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দিক নির্দেশনা দিয়েছেন এই রিজার্ভের অর্থ একটি ভালো ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে এই অর্থনীতির গতিকে আরও উল্লম্ফনের দিকে নেওয়ার জন্য। আমরা বাংলাদেশের ৫০ বছর পালন করতে যাচ্ছি। আগামী বছর হবে বাংলাদেশের ৫০ বছর। এই পঞ্চাশ বছরে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের একটি চিত্র আমরা ইতিমধ্যে অধ্যাপক আফজাল হোসেনের বক্তব্যে জানতে পেরেছি। আমি শুধু পরিসংখ্যানের দিকে তাকাবো না, আমাদের কর্মসংস্থান, পরিবেশ, স্বাস্থ্য সেবা, দেশ-বিদেশে আমাদের মর্যাদা দিক দিকেও যদি আমি বলি এই পরিসংখ্যান বাদে তাহলে আমরা একটি আশাজাগানিয়া অবস্থায় আছি। আমরা আজ মর্যাদাশীল জাতি হিসেবে বিশ্বের মানচিত্রে অবস্থান করছি। ১৯৭১ সালের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মাধ্যমে আমাদের দেশের যখন জন্ম হয় তখন আমরা গরীব দেশের তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে ছিলাম। কিন্তু আজকে আমরা দেখছি, বিশ্বের ৩৪টি শক্তিশালী দেশের তালিকায় আছি আমরা। আজকে সারা বিশ্বের যখন করোনা মহামারি চলছে সেখানে অন্যান্য দেশ যখন অর্থনীতির মন্দার অবস্থানে আছে, সেখানে যেসব দেশ অর্থনীতির অগ্রগতির দিকে আছে সেসব দেশের তালিকায় আছে আমাদের বাংলাদেশ। আমাদের জিডিপি গ্রোথ ধরে রাখতে পেরেছি, আমাদের সামাজিক সক্ষমতা ধরে রাখতে পেরেছি। ইউরোপ-আমেরিকার স্বাস্থ্য ব্যবস্থার যে ভঙ্গুর দশা তা আমরা সবাই দেখেছি, সে তুলনায় আমাদের দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা মান দিয়ে এই করোনা কালে যেভাবে যুদ্ধ করেছে সেটিও কিন্তু একটি আশাজাগানিয়া অবস্থায় রয়েছে। এবং এটি একমাত্র সম্ভব হয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ধারাবাহিক নেতৃত্বের কারণে।
মো: তোফায়েল আহমেদ খাঁন (তপু) বলেন, আজকে আমাকে এই সংলাপ অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানোর জন্য ভোরের পাতাকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি যে আমাকে এমন একটি প্লাটফর্মে দেশ-বিদেশের সকল দর্শক শ্রোতাদের সামনে বাংলাদেশকে নিয়ে কিছু কথা বলার জন্য। আমি আমার বক্তব্যের শুরুতে হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাচ্ছি, এবং আরও শ্রদ্ধা জানাচ্ছি এই বিজয় দিবস পাওয়ার জন্য যেসব বীর বাঙালি জীবন দিয়েছেন তাদের প্রতি ও দুই লক্ষ মা-বোনদের প্রতি যাদের আত্মত্যাগে আমরা এই স্বাধীন বাংলা পেয়েছি। আমি ১৯৯৬ সালে ইউরোপে এসেছি এবং তখন থেকে বিভিন্ন দেশের মানুষের সাথে চলা ফেরা করছি। আমি বঙ্গবন্ধুকে দেখেনি, আমি স্বাধীনতা দেখেনি, তার মত এমন বড় মাপের হিম্মতের অধিকারী মানুষ আর দেখেনি। বঙ্গবন্ধুর শেখ মুজিবুর রহমানের এতো বড় ইতিহাস, তিনি যে কত বড় মাপের একজন দুঃসাহসিক মানুষ ছিলেন, সেটা আমি এখন পর্যন্ত কোথাও দেখতে পাইনি তাকে বাদে। সে জন্যই আমি আওয়ামী লীগ করি, বঙ্গবন্ধুর আদর্শে নিজের মধ্যে ধারণ করি। এই বাংলাদেশকে স্বাধীন করার জন্য তিনি সহ তার পুরো পরিবার রক্ত দিয়েছেন। তাই বঙ্গবন্ধু ও তার সুযোগ্য কন্যার প্রশংসা বলে শেষ করা যাবেনা। যুদ্ধের সময় সৌদি আরব, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও চায়নার মতো সেদিন যারা আমাদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিল, তাদের অনেকেই আজ আমাদের বন্ধু। এটা বঙ্গবন্ধুর উদারতা ও 'সকলের সাথে বন্ধুত্ব, কারও সাথে শত্রুতা নয়' - নীতির ফসল।