প্রকাশ: শুক্রবার, ১৮ ডিসেম্বর, ২০২০, ১০:১২ এএম আপডেট: ১৮.১২.২০২০ ৫:১৩ পিএম | প্রিন্ট সংস্করণ
দাবি আদায়ে কৃষকরা যে অনড় সেটা প্রমাণ করতে নিজেদের তৈরি রেখেছেন। এরই মধ্যে গতকাল বৃহস্পতিবার মারা গেছেন আরও একজন কৃষক। হাড়হিম করা ঠা-ার জেরেই ৩৭ বছরের ওই কৃষকের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গেছে। তারপরেও আপসের রাস্তায় হাটতে নারাজ বিক্ষুব্ধ কৃষকরা। গত ২৩দিন ধরে কৃষি আইন প্রত্যাহারের দাবিতে দিল্লি সীমানায় অবস্থান বিক্ষোভে সামিল হয়েছে হাজার হাজার কৃষক। তীব্র ঠা-ার মধ্যেও তারা নিজেদের দাবিতে অনড়। প্রতিকূল আবহাওয়ার জেরে এর আগেও আন্দোলনরত বেশ কয়েকজন কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। কৃষক সংগঠনগুলোর দাবি, নভেম্বর থেকে এখন পর্যন্ত আন্দোলনকারী প্রায় ২০ জন কৃষক প্রাণ হারিয়েছেন। তারপরেও ঠা-া উপেক্ষা করে খোলা ছাদের নিচেই বসে রয়েছেন বিক্ষোভরত কৃষকরা। খবর ভারতীয় গণমাধ্যমের।
এদিকে বেশ কয়েকবছরের রেকর্ড ভেঙে জাঁকিয়ে ঠা-া পড়েছে দিল্লিতে। সর্বনিম্ন গড় তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রিরও নিচে। চলতি সপ্তাহে ভোরে দিকে সেই তাপমাত্রা নেমে যায় পাঁচ ডিগ্রির কাছাকাছি। যা স্বাভাবিকের থেকে চার ডিগ্রি কম। সেই মাত্রাতিরিক্ত ঠা-ার জেরেই মৃত্যু হলো আরও এক কৃষকের। ইতিমধ্যেই কৃষক বিক্ষোভকে সমর্থন জানিয়ে অনেকেই পুরস্কার ফিরিয়ে দিয়েছেন। গত বুধবার এই ইস্যুতে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে অবিচারের অভিযোগ তুলে আত্মহত্যা করেছেন এক শিখগুরু। প্রতিবাদস্থল থেকে প্রায় ২০ কিলোমিটার দূরে হরিয়ানার এক গুরুদ্বারে আত্মঘাতী হয়েছেন তিনি। সেই ঘটনার কয়েক ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই ফের এক কৃষকের মৃত্যু। এই ঘটনার পরেও গাজীপুর সীমান্তে অবস্থানরত এক কৃষক জানিয়েছে, ‘যাই হয়ে যাক আমরা প্রতিবাদস্থল ছেড়ে যাব না। এমন কী বৃষ্টি পড়লেও না, কোন অবস্থাতেই না।’
কী বলছে সুপ্রিম কোর্ট :কৃষক আন্দোলন নিয়ে বেশ কয়েকটি মামলা দায়ের হয় সুপ্রিম কোর্টে। কৃষক আন্দোলনের জেরে রাজধানীতে যাতায়াতের পথে সমস্যা-সহ নানা অভিযোগ তুলে একাধিক জনস্বার্থ মামলা করা হয়। উল্টো দিতে, নতুন তিনটি কৃষি আইন বাতিলের দাবি তুলে মামলা দায়ের করেছিল কৃষক সংগঠনগুলোও। সেই মামলাগুলো একত্রিত করে শুনানি চলছে প্রধান বিচারপতির সুপ্রিম কোর্টে। গতকালের শুনানিতে সুপ্রিম কোর্ট প্রথমেই নির্ধারিত করে দেয়, কৃষি আইনের বৈধ কি না, এখন সেটা বিচার করবে না শীর্ষ আদালত। এ নিয়ে বেঞ্চের মন্তব্য, ‘কৃষকদের আন্দোলনের মৌলিক অধিকারই প্রথম এবং একমাত্র বিচার্য। আইনের বৈধতা পরেও বিচার করা যাবে।’ প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘আমরা মনে করি কোনও আইনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার মৌলিক অধিকার রয়েছে এবং তা খর্ব করার কোনও প্রশ্নই নেই। শুধু দেখতে হবে, এতে যেন কারও জীবন বা সম্পত্তির ক্ষতি না হয়।’ এই রায়ের মাধ্যমে কার্যত সুপ্রিম কোর্ট বিক্ষুব্ধ কৃষকদের পাশেই দাড়ালো বলে মনে করেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। একই সঙ্গে মোদি সরকারের মুখও পুড়লো বলে তাদের মন্তব্য।