রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪ ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

শিরোনাম: স্কুলে ভর্তির আবেদন শুরু আজ   স্কুলে ভর্তির আবেদন শুরু আজ   স্কুলে ভর্তির আবেদন শুরু আজ   ফিল্ম সিটি থেকে বাদ দেওয়া হচ্ছে ‘বঙ্গবন্ধুর’ নাম   সিলেটের সাবেক সংসদ সদস্য ইয়াহিয়া গ্রেপ্তার   অনন্য অসাধারণ শেখ হাসিনা আমাদের গর্ব   নরসিংদীতে ‘থার্টি ফার্স্ট’ উপলক্ষে চাঁদা না দেয়ায় ব্যবসায়ীকে কোপালো সন্ত্রাসীরা   
https://www.dailyvorerpata.com/ad/Inner Body.gif
জেঁকে বসেছে শীত
কামাল সিদ্দিকী
প্রকাশ: শুক্রবার, ১৮ ডিসেম্বর, ২০২০, ১০:১২ এএম আপডেট: ১৮.১২.২০২০ ৫:১৪ পিএম | প্রিন্ট সংস্করণ

‘পৌষের কাছাকাছি রোদ মাখা সেই দিন, ফিরে আর আসবে কি কখনো’... গানের সেই পৌষের রোদমাখা দিন আর দেখা যাচ্ছে না। কুয়াশায় মোড়ানো মাসটি বয়ে এনেছে শৈত্যপ্রবাহ। দেশজুড়ে মৃদু শৈত্যপ্রবাহের কথা জানিয়েছে আবহাওয়া বিভাগ। গতকাল থেকেই শুরু হয়ে গেছে শৈত্যপ্রবাহ। শীতের প্রকোপে কাঁপছে উত্তরাঞ্চলসহ দেশের বিস্তীর্ণ অঞ্চল। বলা যেতে পারে শীত জেঁকে বসেছে।

গতকাল দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে তেঁতুলিয়ায়, ১০.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এছাড়া রাজারহাটে ১০.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসসহ রংপুর অঞ্চলে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১০-১২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে উঠা নামা করছে। যদিও এসময় রাজধানীর সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ২৬.৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ১৬.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল সীতাকু-ে ২৯.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তাপমাত্রা নেমে ৮ থেকে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে চলে এলে আবহাওয়াবিদরা তাকে বলেন মৃদু শৈত্যপ্রবাহ; থার্মোমিটারের পারদ ৬ থেকে ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে নেমে এলে তাকে মাঝারি ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৪ থেকে ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে হলে তীব্র শৈত্যপ্রবাহ ধরা হয়। গত ২৮ নভেম্বর তেঁতুলিয়ায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা নেমেছিল ৯.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। বাংলাদেশে শীতের দাপট মূলত চলে জানুয়ারি মাসজুড়ে। এবারে শীতের আগাম পদধ্বনি দেখতে পাওয়া যাচ্ছে। ২০১৮ সালের ৮ জানুয়ারি পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় দেশের ইতিহাসে সর্বনিম্ন ২ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। এরও আগে ২০১৩ সালের ১১ জানুয়ারি সৈয়দপুরের তাপমাত্রা ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নেমে এসেছিল। আর ১৯৬৮ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি শ্রীমঙ্গলে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ২ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আবহাওয়াবিদ মো. শাহীনুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, ‘শীত জেঁকে বসছে এখন। সারা দেশে রাতের তাপমাত্রা ১-২ ডিগ্রি সেলসিয়াস কমতে পারে; দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।’ তিনি জানান, উত্তরে কাথাও কোথাও মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে, যা চলতে পারে কয়েকদিন। ধীরে ধীরে তাপমাত্রা বাড়তে পারে দু’তিনদিন পর। ডিসেম্বরে দেশের উত্তর, উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও মধ্যাঞ্চলে মৃদু থেকে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে বলে আগেই আভাস দিয়েছিল আবহাওয়া অধিদফতর।

কেমন আছেন উত্তরাঞ্চলের মানুষ :প্রতিবছরই শীতের কামড়ে অতীষ্ঠ হয়ে পড়েন উত্তরাঞ্চলের দরিদ্র আয়ের মানুষগুলো। এসময় তারা সীমাহীন দুর্ভোগে পড়েন। ফুটপাতের দোকানে নিম্ন আয়ের ক্রেতাদের ভিড় জমে ওঠে। শুধু নিম্নবিত্ত নয় মধ্যবিত্ত ক্রেতারাও ভিড় জমান এই সব দোকানে। এবারেও তেমন দৃশ্য দেখা যাচ্ছে। এসময় চাহিদা বাড়ে জ্যাকেট, সোয়েটার, চাঁদর, লং কোর্ট, মাফলার, হাত মোজা ও পা মোজার। এবছর শীত পড়ার সঙ্গে সঙ্গেই এসব দোকানে ভিড় বাড়ছে ক্রেতাদের। কৃষি দিনমজুর, তাঁতশ্রমিক, নির্মাণ শ্রমিক, রিকশা-ভ্যান চালকরাই সবাই শীত থেকে নিজে ও পরিবারকে বাঁচাতে পুরাতন কাপড়ের দোকানই বেছে নিচ্ছেন। তবে গতবারের তুলনায় দাম অনেকটাই বেশি। এমনি জানালেন  সিরাজগঞ্জ  পৌর হকার্স মার্কেট থেকে একটি পুরাতন জ্যাকেট কেনা রিকশাচালক জোবদুল শেখ। তিনি বলেন, ‘কুয়াশার মইধ্যে ভোরবেলায় রিকশা নিয়্যা বাইর অই। শীতে কাহিল অইয়া যাই। ভাবছিলাম দুই থেকে আড়াইশোর মধ্যে একটো জ্যাকেট কিনমু। এহেনে আইস্য দেহি ডবল দাম। শীতের মধ্যেও কাম করাই লাইগবো। তাই ৪শ ট্যাহা দিয়্যা জ্যাকেটটো কিনা নিয়্যা যাইত্যাছি’। 

শীতবস্ত্র বিতরণের উদ্যোগ নেই :শীত বাড়লেও কোন ব্যক্তি সরকার বা প্রতিষ্ঠান থেকে শীত বস্ত্র বিতরণের কোন উদ্যোগ নেই। ফলে ফুটপাতের মানুষদের কষ্ট আরও বাড়ছে। দুর্ভোগে পড়েছেন আয়হীন, কর্মহীন মানুষ। বয়স্ক লোকদের অবস্থা আরও শোচনীয়। শীতবস্ত্র না থাকায় এসব লোকদের নির্ভর করতে হচ্ছে খড়কুটো দিয়ে জ¦ালানো আগুনের উপর। সেই আগুণের উত্তাপে শরীরটাকে গরম করে নিচ্ছে। যদিও প্রতিবছর এই ধরনের আগুণ থেকে বড় বড় দুর্ঘটনা ঘটেছে। এবারেও সে আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যায় না। এভাবে শৈত্যপ্রবাহ চললে সাধারণ মানুষকে বাঁচতে এসব বিকল্প ব্যবস্থা বেছে নিতেই হবে। এখানে প্রয়োজন অসহায়দের ভেতরে শীতবস্ত্র বিতরণ। যদি সরকারিভাবে শীত বস্ত্র বিতরণ করা যায় তাহলে এসব অসহায় মানুষের জীবন অনেকটাই নিরাপদ হবে। প্রতিবছরই আমাদের দেশে শীত বস্ত্র বিতরণ করা হয়। তবে অনেক সময় তা শীত চলে যাওয়া বা শীতের পর হয়ে থাকে। বিশিষ্ট দানবীররা মিডিয়াকে হাজির করে নিজেদের কৃতিত্ব দেখাতে এসব উদ্যোগ নিয়ে থাকেন। কিন্তু অসহায় মানুষের কাছে যা একধরনের উপহাস বলেই মনে হয়। এবারেও সেই অবস্থা হতে যাচ্ছে। তীব্র শীতে যদি বস্ত্র বিতরণ করা না হয় তাহলে উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যায়। এজন্য ভুক্তভোগীরা পুরাতন সেই প্রবাদকেই সামনে আনতে চান ‘কারো পৌষ মাস আর কারো সর্বনাশ’।



« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
https://www.dailyvorerpata.com/ad/BHousing_Investment_Press_6colX6in20200324140555 (1).jpg
https://www.dailyvorerpata.com/ad/last (2).gif
https://www.dailyvorerpata.com/ad/431205536-ezgif.com-optimize.gif
https://www.dailyvorerpata.com/ad/agrani.gif
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ


সম্পাদক ও প্রকাশক: ড. কাজী এরতেজা হাসান
সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
সাউথ ওয়েস্টার্ন মিডিয়া গ্রুপ


©ডেইলি ভোরের পাতা ডটকম


©ডেইলি ভোরের পাতা ডটকম

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : ৯৩ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫।
ফোন:৮৮-০২-৪১০১০০৮৭, ৪১০১০০৮৬, বিজ্ঞাপন বিভাগ: ৪১০১০০৮৪, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৪১০১০০৮৫
অনলাইন ইমেইল: [email protected] বার্তা ইমেইল:[email protected] বিজ্ঞাপন ইমেইল:[email protected]