প্রকাশ: শুক্রবার, ১৮ ডিসেম্বর, ২০২০, ১০:১২ এএম আপডেট: ১৮.১২.২০২০ ৫:১৪ পিএম | প্রিন্ট সংস্করণ
সুদূর সাইবেরিয়া থেকে ঝাঁকে ঝাঁকে উড়ে আসছে পাখির দল। আশ্রয় নিচ্ছে দেশের বিভিন্ন এলাকায়। ঢাকার পাশে সাভার ও ধামরাইয়ে তাদের এসব পাখির কলকাকলিতে মুখরিত এসব এলাকা। দলে দলে পাখি প্রেমিকরা ভিড় জমাচ্ছেন। অনেকেই এসব পাখির জীবনপ্রণালী নিয়ে গবেষণায় ব্যস্ত। সরকারিভাবে এসব পরিযায়ী পাখি শিকার বিক্রি প্রদর্শনীর নিষেধাজ্ঞা জারি রয়েছে। এমনকি কেউ যদি এই পাখি শিকার করে বা বিক্রি করে, তাহলে তাকে আইনের আওতায় এনে শাস্তি নিশ্চিত করার কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়েছে। সরকারি পদক্ষেপের ফলে এখন প্রকাশ্যে এসব পাখি শিকার ও বিক্রি বন্ধ। এ সব পরিযায়ী পাখি প্রচ- শীত থেকে বাঁচতে বাংলাদেশের মত কম শীতপ্রধান এলাকায় প্রতিবছর আসে। যাকে হিজরত বলা যেতে পারে। বেশ কয়েকবছল ধরেই তারা আসছে আবার শীত শেষে স্বদেশে প্রত্যাবর্তন করছে। তবে এই সময়ে এরা বাংলাদেশের জন্য অনেক ক্ষতিকর জীবাণুু বয়ে নিয়ে আসে। বিশেষ করে বার্ডফ্লুর মত মারাত্মক রোগের জীবাণুর বাহক এই সব পরিযায়ী পাখি।
এদের বিষ্টা থেকে এই রোগের প্রাদুর্ভাব ঘটে বলে প্রাণী বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন। এই বার্ডফ্লুর কারণে প্রতিবছরই আমাদের দেশের মুরগির খামার উজাড় হওয়ার মত ঘটনাও ঘটে। যেসব ফর্মে এই রোগটি দেখা দেয় সেই ফার্মের সমুদয় মুরগি মেরে তা প্রশাসনিকভাবে পুতে ফেলা হয়। এর ফলে যেমন আমিষের সংকট তৈরি হয় তেমনি ফার্মের মালিকও আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হন। বর্তমানে আমাদের দেশের বেশিরভাগ মানুষই মুরগির মাংসের উপর নির্ভরশীল। দেশীয় বাজারে গরু বা খাসির মাংসের সংকট রয়েছে। ছাগল এবং গরুর মাংসের দাম সাধারণের নাগালের বাইরে। বলা হয়ে থাকে দেশের গরুর মাংসের বাজার নিয়ন্ত্রণ করে ভারত। ভারতীয় গরু বন্ধ হলে দেশের বাজারে গরুর মাংস মিলবে না। যদিও ভারত সারা বিশে সবচেয়ে বড় গরুর মাংস রফতানি কারক দেশ। কিন্তু আমাদের দেশে যেসব ভারতীয় গরু আসে তার বেশিরভাগই চারাই পথে।
বর্তমানে ভারতীয় কেন্দ্রীয় সরকার গরু রফতানিতে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। গরুকে তারা দেবতার জ্ঞান করে এই পদক্ষেপ নিয়েছে। যদিও বিশে^র অনান্য দেশে ভারতীয় গরুর মাংস রফতানি অব্যাহত রয়েছে। গরুর মাংসের বিকল্প হিসাবে দেশের মানুষ মুরগির উপর নির্ভরশীল। যে কোন অনুষ্ঠানে বা অতিথি আপ্যায়নে তারা এই মাংস ব্যবহার করে থাকে। মুরগির মাংসের চালান নিশ্চিত করতে শহরে বন্দরে এমনকি পাড়া মহল্লা, গ্রামে গ্রামে ছোট বড় আকারে গড়ে উঠেছে মুরগির ফার্ম। এই ফার্ম যেমন দেশের আমিষের চাহিদা পূরণ করছে পাশাপাশি বেকারত্ব কমিয়েছে। যাকে বলা যেতে পারে কুঠির শিল্প। সেখানেই এই পরিযায়ী পাখি আমাদের আমিষের উপর মারাত্মকভাবে হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাদের বয়ে আনা রোগটির কারণে এই হুমকি দিনকে দিন বাড়ছে। কেবল দুমাস বা তিন মাসই নয় এই হুমকি সারা বছর পড়ার আশংকা করেছেন রোগ বিশেষজ্ঞরা। যদিও পরিযায়ী পাখির আগমন বন্দের কোন পথ খোলা নেই। কিন্তু সরকারকে বিষয়টি ভেবে দেখা দরকার বলে মনে করছেন দেশের স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।