সাংবাদিক কাজলের মুক্তিতে আর কোনো বাধা নেই
আদালত প্রতিবেদক
প্রকাশ: শুক্রবার, ১৮ ডিসেম্বর, ২০২০, ১০:১২ এএম আপডেট: ১৮.১২.২০২০ ৫:১৫ পিএম | প্রিন্ট সংস্করণ
ফটো সাংবাদিক শফিকুল ইসলাম কাজলের বিরুদ্ধে করা আরও দুই মামলাতে জামিনের আদেশ বহাল রেখেছেন হাইকোর্ট। এতে করে তার জন্য কারামুক্তিতে আর কোনো বাধা নেই বলে জানিয়েছেন আদালত। মামলা দুটির নথি দেখে ও তদন্তের অগ্রগতি জেনে গতকাল বৃহস্পতিবার কাজলের জামিন আদেশ মঞ্জুর করেন বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ। হাজারীবাগ ও কামরাঙ্গীরচর থানার ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে ওই মামলা দুটি করেন সংসদ সদস্য সাইফুজ্জামান শিখর। এর আগে গত ২৪ নভেম্বর শেরেবাংলা নগর থানায় সংসদ সদস্য সাইফুজ্জামান শিখরের করা মামলায় হাইকোর্টের একই বেঞ্চ কাজলকে জামিন দিয়েছিল। গতকাল বাকি দুই মামলায় জামিন হওয়াতে তার কারামুক্তিতে আর কোনো বাধা রইল না বলে জানিয়েছেন তার আইনজীবী জ্যোতির্ময় বড়ুয়া। জামিন আবেদনের পক্ষে আদালতে তিনিই শুনানি করেন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সরোয়ার হোসেন বাপ্পী।
জ্যোতির্ময় বড়ুয়া সাংবাদিকদের বলেন, ‘সাংবাদিক শফিক ইসলাম কাজলকে জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট। তার বিরুদ্ধে থাকা তিন মামলায়ই তিনি জামিন পেলেন। এখন তার কারামুক্তিতে আর কোনো বাধা নেই।’ যুব মহিলা লীগের নেত্রী শামীমা নূর পাপিয়ার ওয়েস্টিন হোটেল কেন্দ্রিক কারবারে ‘জড়িতদের’ নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হলে গত ৯ মার্চ ঢাকার শেরেবাংলা নগর থানায় মানবজমিনের প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরীসহ ৩২ জনের বিরুদ্ধে এই মামলা করেন মাগুরা-১ আসনের সরকার দলীয় সংসদ সদস্য সাইফুজ্জামান শিখর। পরে একই ঘটনায় ১০ ও ১১ মার্চ হাজারীবাগ ও কামরাঙ্গীর চর থানায় আরও দুটি ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা হয়। যার মধ্যে একটির বাদী যুব মহিলা লীগের নেত্রী ইয়াসমিন আরা ওরফে বেলী। মামলা হওয়ার পর আসামির তালিকায় থাকা শফিকুল ইসলাম কাজল প্রায় দুই মাস নিখোঁজ ছিলেন। পরে গত মে মাসের দুই তারিখ যশোরের বেনাপোল সীমান্ত থেকে তাকে গ্রেফতার করে বিজিবি। যশোর থেকে ঢাকায় আনার পর গত ২৩ জুন কাজলকে শেরেবাংলা নগর থানার ওই মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বিচারকের মুখোমুখি করা হয়। হাকিম আদালত সেদিন কাজলের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে। এরপর গত ২৪ আগস্ট ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতও কাজলের জামিন আবেদন নাকচ করলে তিনি ৮ সেপ্টেম্বর হাইকোর্টে আবেদন করেন। শুনানি নিয়ে গত ১৯ অক্টোবর কেন কাজলকে জামিন দেওয়া হবে না, জানতে চেয়ে রুল জারি করে হাইকোর্ট। দুই সপ্তহের মধ্যে রাষ্ট্রপক্ষকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়। সেই সঙ্গে এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তাকে মামলার কেইস ডকেট (সিডি) নিয়ে আদালতে হাজির থাকতে বলা হয়। তদন্তকারী কর্মকর্তার কাছ থেকে ব্যাখ্যা শোনার পর ২৪ নভেম্বর আদালত রুলটি যথাযথ ঘোষণা করে শেরেবাংলা নগর থানার মামলায় কাজলকে জামিন দেয়।
সেদিন কামরাঙ্গীর চর ও হাজারীবাগের দুই মামলায় তার জামিন প্রশ্নে জারি করা রুল ১৫ ডিসেম্বর শুনানির জন্য দিন ধার্য করেন আদালত। দুই মামলার তদন্ত কর্মকর্তাকে কেস ডকেট (মামলার নথি) নিয়ে হাজির থাকতে বলা হয়। তবে মঙ্গলবার মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা হাজির না হওয়ায় অসন্তোষ প্রকাশ করেন হাইকোর্ট। পরে গতকাল তাকে ফের তলব করা হয়। সে অনুযায়ী মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা রাসেল মোল্লা আদালতে হাজির হয়ে জানান, অসুস্থ থাকায় গত মঙ্গলবার তিনি হাজির হতে পারেননি। এরপর মামলার তদন্তের অগ্রগতি জানান। পরে রুল যথাযথ ঘোষণা করে সাংবাদিক কাজলকে জামিন দেন হাইকোর্ট।