তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘গত এক যুগে দেশের প্রতিটি মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন মির্জা ফখরুল সাহেবরা দেখেও দেখেন না’।
বৃহস্পতিবার (১৭ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজধানীর কাকরাইলে তথ্যভবন মিলনায়তনে বাংলাদেশ সংবাদপত্র পরিষদ আয়োজিত প্রধান অতিথির বক্তৃতায় সমসাময়িক প্রসঙ্গে তিনি এ কথা বলেন।
বিএনপি মহাসচিবের সাম্প্রতিক মন্তব্য ‘বিজয় মিললেও মুক্তি মিলেনি’ এর জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘আসলে তারা (বিএনপি) সবসময় বিভ্রান্তির মধ্যে ভোগেন এবং তা থেকে মানুষকেও বিভ্রান্ত করার অপচেষ্টা চালান। উন্নয়নের বিষয়ে তাদেরকে আমি আইএমএফ এবং এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের পরিসংখ্যান দেখার অনুরোধ জানাচ্ছি। বাংলাদেশের মানুষের মাথাপিছু আয় ৬০০ থেকে থেকে ২ হাজার ৬৪ ডলারে উন্নীত হয়েছে এবং দারিদ্র্যসীমার নিচে থাকা মানুষের হার ৪১ থেকে ২০ শতাংশের নিচে নেমে এসেছে- এগুলো পড়লে বিভ্রান্তি কেটে যাবে। অবশ্যই সমালোচনা করবেন কিন্তু নিজের বিভ্রান্তি থেকে জনগণকে বিভ্রান্ত করার অপচেষ্টা কখনোই দেশ ও জাতির জন্য শুভ নয়।’
হাছান মাহমুদ বলেন, ‘প্রতিদিন সকাল বেলা ফখরুল সাহেব একবার কথা বলেন, বিকেল বেলা রিজভী সাহেব কথা বলেন। আর গয়েশ্বর বাবুও মাঝেমধ্যে কথা বলেন। তারা দিনে তিনবার সমালোচনা করেন আর বলেন যে, তাদের কথা বলার কোনো অধিকার নেই। আমরা যখন বিরোধী দলে ছিলাম, একটি মিছিল বের করতে চাইলে আমাদের ওপর লাঠিপেটা করা হতো। বহু লাঠির বাড়ি আমার ঘাড়ে-পিঠে আছে, পল্টু ভাইয়েরও আছে। জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বেই এ দেশে গণতন্ত্রের যাত্রা অব্যাহত আছে। বিএনপি এই গণতন্ত্রকে নস্যাৎ করতে ২০১৩-১৪-১৫ সালে আগুন সন্ত্রাস চালিয়েছিল, নির্বাচন বর্জন করেছিল। আর ২০১৮ সালে নির্বাচনে অংশ নিয়েও নেয়নি, তাদের মূল উদ্দেশ্য ছিল গণতন্ত্রকে ব্যাহত করা।’
তথ্যমন্ত্রী বলেন, দেশকে আরো এগিয়ে নিতে, ২০৪১ সাল নাগাদ বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের ঠিকানায় পৌঁছে দিতে রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ গণমাধ্যমের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ মানুষের মনন তৈরিতে, তৃতীয় নয়ন খুলে দেওয়ার ক্ষেত্রে এবং দায়িত্বশীলদের আরো দায়িত্ববান করার ক্ষেত্রে, সংবাদপত্র তথা গণমাধ্যমের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
এ সময় দেশে গণমাধ্যমের বিকাশের ওপর আলোকপাত করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ১২ বছর আগে দৈনিক সংবাদপত্র ছিল ৪৫০টি এখন সাড়ে ১২শ’। অর্থাৎ প্রায় তিন গুণ। টেলিভিশন ছিল ১০টি এখন ৩৫টি, একইভাবে অনলাইন মাধ্যম আইপিটিভি থেকে শুরু করে সব গণমাধ্যমের ক্ষেত্রে ব্যাপক বিপ্লব ঘটেছে।
তিনি বলেন, ‘এই সমস্যাগুলো আমাদের সম্মিলিতভাবে মোকাবিলা করতে হবে। সংবাদপত্রের মান, সংবাদের গুণগতমান ধরে রাখা এবং যে কারো হাতে যেন সাংবাদিকতার পরিচয়পত্র না যায়, সে নিয়েও আমাদের সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।’
তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য মোজাফফর হোসেন পল্টু সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন।
বিএসপি সভাপতি মো. শাহজালালের সভাপতিত্বে সভায় আরও বক্তব্য রাখেন চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদফতরের মহাপরিচালক স.ম. গোলাম কিবরিয়া, বিএসপির সাধারণ সম্পাদক এমজি কিবরিয়া চৌধুরী ও যুগ্ম সম্পাদক শেখ মঞ্জুর বারী মঞ্জু, বীর মুক্তিযোদ্ধা শাহজাহান আলী, বীর মুক্তিযোদ্ধা শফিকুল ইসলাম ইউনুস প্রমুখ।
এর আগে তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বিজয় দিবস উপলক্ষে চলচ্চিত্র প্রকাশনা অধিদফতর আয়োজিত আলোকচিত্র প্রদর্শনী উদ্বোধন করেন এবং প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান এবং অধিদফতরের মহাপরিচালক স. ম. গোলাম কিবরিয়াসহ অতিথিদের সঙ্গে নিয়ে প্রদর্শনীটি ঘুরে দেখেন।