প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ১৭ ডিসেম্বর, ২০২০, ১:০৮ পিএম | প্রিন্ট সংস্করণ
নাইজেরিয়ায় ছাত্র অপহরণের প্রতিবাদে রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ দেখিয়েছে দেশটির জনগণ। একই সঙ্গে তারা সরকারের ব্যর্থতার জন্য পদত্যাগ দাবি কওে বিভিন্ন শ্লোগান দেয়। বিক্ষুদ্ধ দেশবাসী অপহৃতদের উদ্ধারের দাবি জানান। এদিকে ঘটনার দায় স্বীকার কওে বোকো হারম এক অডিও বার্তা প্রকাশ করেছে। বার্তায় তারা আগামীতে এই ধরনের অপহরণ অব্যাহত রাখার কথা জানায়।অডিও বার্তায় নাইজেরিয়ার জঙ্গি গোষ্ঠী বোকো হারামের নেতা পরিচয় দেওয়া এক ব্যক্তি দেশটির উত্তরপশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্য কাটসিনার একটি সরকারি বোর্ডিং স্কুলের তিন শতাধিক ছাত্রকে অপহরণ করার দায় স্বীকার করেছে।ওই অডিও বার্তাটি একটি হোয়াটসঅ্যাপ বার্তার মাধ্যমে রয়টার্সের কাছে পৌঁছেছে, এতে এক ব্যক্তি নিজেকে বোকো হারামের নেতা আবুবকর শেকাউ দাবি করে বলেন, ‘কাটসিনায় যা হয়েছে তার পেছনে আমরা আছি।’ তিনি বলেন, ‘কাটসিনায় যা হয়েছে তা ইসলামকে তুলে ধরার জন্য ও অনৈসলামিক অনুশীলন বন্ধ করার জন্য, কারণ আল্লাহ ও তার পবিত্র নবী যে শিক্ষা অনুমোদন করেছেন পশ্চিমা শিক্ষা সে ধরনের নয়।’তবে নিখোঁজ বালকদের কোনো ভিডিও ফুটেজ প্রকাশ করা হয়নি। নিজের বক্তব্যের পক্ষে ওই ব্যক্তি কোনো প্রমাণও দাখিল করেননি। রয়টার্সও অডিওটি যাচাই করতে পারেনি এবং নাইজেরিয়ার কর্তৃপক্ষও তাৎক্ষণিকভাবে কোনো মন্তব্য করেনি।মন্তব্যের জন্য অনুরোধ করা হলেও নাইজেরিয়ার প্রেসিডেন্ট দপ্তর, পুলিশ ও সেনাবাহিনীর মুখপাত্ররা তাৎক্ষণিভাবে সাড়া দেননি।ওই অঞ্চলের নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, অপহরণের ঘটনায় বোকো হারাম হয়তো জড়িত ছিল না, কিন্তু অপহরণকারীরা ওই বালকদের তাদের কাছে বিক্রি করে দিতে পারে।কাটসিনা রাজ্যর সরকারি মাধ্যমিক বিজ্ঞান স্কুলটির যে ছাত্ররা গত শুক্রবারের ওই অপহরণ এড়াতে পেরেছেন, তারা জানিয়েছেন, হামলাকারীদের কাছে একে-৪৭ রাইফেল ছিল, তারা ছাত্রদের জড়ো করার পর সবাইকে হাঁটিয়ে নিয়ে চলে যায়।কাটসিনা রাজ্য কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, প্রায় ৩২০ জন ছাত্র নিখোঁজ রয়েছেন। অন্তত একজন অভিভাবকের কাছে মুক্তিপণ চাওয়া অপহরণকারীদের সঙ্গে তারা কথা বলেছে বলে জানিয়েছে নাইজেরিয়া সরকার।হামলাকারীদের উদ্দেশ্য জানা না থাকায় রাজ্যের সব স্কুল বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছেন কাটসিনার কর্মকর্তারা। গতসোমবার প্রতিবেশী জামফারা রাজ্যও সরকারি সব বোর্ডিং স্কুল বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে বলে প্রচারিত এক বিজ্ঞপ্তির বরাতে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। স্থানীয় হাউসা ভাষায় ‘বোকো হারাম’ এর অর্থ ‘পশ্চিমা শিক্ষা নিষিদ্ধ’। এই জঙ্গি গোষ্ঠীটি ২০০৯ সাল থেকে নাইজেরিয়ার উত্তরপূর্বাঞ্চলে বিদ্রোহ শুরু করলেও এর আগে কখনও উত্তরপশ্চিমাঞ্চলে হামলার দাবি করেনি।রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলেছেন, অডিও টেপটির দাবি সত্য হলে নাইজেরিয়ার উত্তরপূর্বাঞ্চলে তৎপর জঙ্গিদের প্রভাব বিস্তৃত হওয়ার বিষয়টি সামনে আসবে। এতে বোকো হারামের সঙ্গে সাহেল অঞ্চলে তৎপর জঙ্গি গোষ্ঠীগুলোর জোট গঠনের ইঙ্গিতও পাওয়া যেতে পারে, আর তাতে নাইজেরিয়ার উত্তরাঞ্চলের পরিস্থিতি আরও অস্থিতিশীল হয়ে পড়তে পারে।