প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ১৭ ডিসেম্বর, ২০২০, ১২:৫৫ পিএম | প্রিন্ট সংস্করণ
স্বাধীন বাংলা বেতারকেন্দ্রের শিল্পী শাহীন সামাদ। মাত্র ১৮ বছর বয়সে যুদ্ধে অংশগ্রহন করেন তিনি। মহান মুক্তিযুদ্ধ ও নানা বিষয়ে কথা হলো তার সঙ্গে...
কেমন কাটছে করোনা এই সময়?
ঘর থেকে বের হচ্ছি না। গেল নয় মাসে শুধু তিনবার জরুরী কাজে আমাকে বের হতে হয়েছে। পরিস্থিতি ভালো না হওয়া পর্যন্ত এভাবেই বাসায় থাকতে চাই। আমার নিজেরও বয়স হয়েছে। এছাড়া বাসায় আমার ছোট একটা শিশু আছে। এই সময়ে সতর্ক থাকা জরুরী আমাদের সকলের।
আজ মহান বিজয় দিবস। দিনটি নিয়ে আপনার উপলব্ধি কী?যুদ্ধ করে আমরা দেশটাকে স্বাধীন করেছি। এর চেয়ে আনন্দের আর কী হতে পারে? যে স্বাধীনতার জন্য যুদ্ধ করেছি সেটি আমাদের অর্জন হয়েছে। এখন আমাদের এই বিজয় অক্ষুন্ন রাখতে হবে। পাকিস্তানি পেতাত্মা বরাবরই সুযোগ খুঁজছে আমাদের বিজয় ছিনিয়ে নিতে।
কীভাবে স্বাধীন বাংলা বেতারকেন্দ্রে জড়ালেন? মাত্র ১৩ বছর বয়সে আমি আমার বাবাকে হারিয়েছি, মাকে একা ফেলে চলে গিয়েছিলাম। যোগাযোগের কোনো উপায় ছিল না। চিঠিপত্র লেখার ব্যবস্থা ছিল না। জীবনের কোনো নিশ্চয়তা ছিল না, তবু কী এক আকর্ষণে সবকিছুকে তুচ্ছ করে যুদ্ধে, দেশের গান গাইতে গিয়েছিলাম। আজ নিজে মা হয়ে বুঝতে পারছি মাকে কত কষ্ট দিয়েই তখন দেশমাতার কাজে গিয়েছিলাম।
মুক্তিযুদ্ধের দিনগুলোর কথা কী মনে পড়ে?আমরা তখন বিভিন্ন জায়গায় গান গাইতাম, স্টেজ করতাম। সাধারণ মানুষের সম্পৃক্ততা, তাদের সহযোগিতা ছিল অসাধারণ। যখন কোনো স্টেজে গান গাইতাম সেখানে পিনপতন নীরবতা বিরাজ করত। আমাদের স্টেজ শো করতে সাহায্য করতেন সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে বুদ্ধিজীবীরা পর্যন্ত। স্টেজ শোর অর্থ দিয়ে আমরা মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য কাপড়চোপড়, কম্বল থেকে শুরু করে খাদ্যদ্রব্য, এমনকি নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যও কিনতাম। তাদের মধ্যে গোপনে বিলি করতাম, শরণার্থী ক্যাম্পে দিয়ে আসতাম।