বৃহস্পতিবার ২৮ নভেম্বর ২০২৪ ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

শিরোনাম: স্কুলে ভর্তির আবেদন শুরু আজ   স্কুলে ভর্তির আবেদন শুরু আজ   স্কুলে ভর্তির আবেদন শুরু আজ   ফিল্ম সিটি থেকে বাদ দেওয়া হচ্ছে ‘বঙ্গবন্ধুর’ নাম   সিলেটের সাবেক সংসদ সদস্য ইয়াহিয়া গ্রেপ্তার   অনন্য অসাধারণ শেখ হাসিনা আমাদের গর্ব   নরসিংদীতে ‘থার্টি ফার্স্ট’ উপলক্ষে চাঁদা না দেয়ায় ব্যবসায়ীকে কোপালো সন্ত্রাসীরা   
https://www.dailyvorerpata.com/ad/Inner Body.gif
বিজয় দিবসের অঙ্গীকার, রুখবো এবার মৌলবাদ
ড. কাজী এরতেজা হাসান
প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ১৭ ডিসেম্বর, ২০২০, ১০:৩১ এএম আপডেট: ১৭.১২.২০২০ ১২:৫২ পিএম | প্রিন্ট সংস্করণ

১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস। এদিন বাঙালি জাতি নতুন করে শপথ নিয়ে অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ার লক্ষে ধর্মব্যবসায়ীদের রুখে দেবার অঙ্গীকার করেছে। ১৯৭১ সালের এই দিনে বাঙালি পাক হানাদারবাহিনীর বিরুদ্ধে দীর্ঘ ৯ মাসের জীবনপণ লড়াই করে এই বিজয় ছিনিয়ে আনে। এই বিজয়ের জন্য ত্রিশলাখ  শহীদ ও দুই লাখ মা-বোনের সম্ভ্রম দিতে হয়েছে। তাদের সেই ত্যাগের বিনিময়ে আমাদের এই বিজয়।  তাই এদিন গানের সেই কলি, ‘পুর্ব দিগন্তে সূর্য উঠেছে, রক্ত লাল, রক্ত লাল, রক্ত লাল।’ এবারের ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশ বিজয়ের অর্ধশতাব্দীতে পা রাখল। তবে বিজয়ের এই মহান দিনে রয়েছে না পওয়ার যন্ত্রণা। এই সময়ে আমরা আমাদের চেতনাকে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছি। তারই সুযোগে একাত্তরের পরাজিত শক্তি ঘাতক জামায়াত নতুন করে ফনা তুলেছে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী কর্মকাণ্ডে ফের লিপ্ত হয়েছে। বিজয়কে প্রশ্নবিদ্ধ করতে এই স্বাধীনতা বিরোধী শক্তি নতুন কৌশল নিয়েছে। হেফাজতে ইসলামকে মুঠোয় নিয়ে দলটির নেতৃবৃন্দকে দিয়ে নিজেদের লক্ষ্য উদ্দেশ্য পূরণে আদাজল খেয়ে মাঠে নেমেছে।

ক-দিন ধরেই লক্ষ্য করা যাচ্ছে, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নির্মাণের বিরোধীতা করে আসছে, ধর্মকে পুঁজি করে রাজনীতি করা তথাকথিত কয়েকটি দল। এর মধ্যে হেফাজতে ইসলামের দুই শীর্ষ নেতাও রয়েছে। এই দুই নেতার আস্ফালন ও বাগাড়ম্ব নিয়ে সমালোচনার ঝড় উঠেছে। কার্যত হেফাজতে ইসলামের ছদ্মবেশে জামায়াতে ইসলাম দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে। ধর্মীয় উগ্রবাদ ছড়িয়ে দেওয়ার কাজেও লিপ্ত আছে। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় পরাজিত বর্বর পাকিস্থান হানাদার বাহিনীর দোসর হয়ে কাজ করেছিল জামায়েতে ইসলাম। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী সঙ্গে ঘাতক জামায়াত বহু মুক্তিকামী মুক্তিযোদ্ধাকে হত্যা করেছে। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর জাতির পিতা রাষ্ট্রক্ষমতায় এসে জামায়াতসহ ধর্মআশ্রিত রাজনৈতিক দলসমূহ নিষিদ্ধ করেন। পদক্ষেপ নেন স্বাধীনতা বিরোধী জামায়াতের নরপশুদের বিচারের। কিন্তু পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু সপরিবারে হত্যা করে রাষ্ট্রক্ষমতায় আসে বর্বর পাকিস্তানের প্রেত্মারা। সেনা শাসক জিয়া অবৈধভাবে ক্ষমতায় এসে জামায়াতকে রাজনীতি করার অনুমতি দেয়। নিজে  তথাকথিত বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রবক্তা সাজেন। এরপর থেকে নতুনভাবে জামায়াত বাংলাদেশের ঘাড়ে চেপে বসে। এখনো তারা তাদের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে। একদিনের জন্য জামায়াত বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে মেনে নেয়নি। এবং প্রতিনিয়ত পাকিস্তানের দাসনুদাস হয়ে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে। এতে পৃষ্ঠপোষকতার ভূমিকায় আছে বিএনপি। একই সঙ্গে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নিয়ে মনগড়া ব্যাখ্যা দিয়ে বিষয়টি ধর্মের প্রতিপক্ষ হিসাবে দাঁড় করানো।  এর থেকে তারা সুবিধা আদায় করতে চায়। এখনই এদের সমূলে রুখে দিতে না পারলে বাংলাদেশের জন্য যা হবে অশণিসংকেত। তবে বাঙালি জাতি ধর্মব্যবসায়ী দলগুলোর কোনো অপচেষ্টাই সফল হতে দেবে না, এটাও নিশ্চিত। কুষ্টিয়ায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভেঙে দেওয়া গোটা দেশের মানুষ ধর্মব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে গর্জে উঠেছে। ধর্মকে পুঁজি করে পাকিস্তানের সেবাদাশ তথাকথিত দলগুলোর দর্প ও দম্ভভরা কথাবার্তা মোটেই গহণযোগ্য নয়। এরা বর্বর পাকিস্থান, বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামের এজেন্ডা বাস্তবায়নে নতুনভাবে মাঠে নেমেছে। এদের কঠোরভাবে মোকাবিলা ও শায়েস্তার কোনো বিকল্প পথ খোলা আছে বলে আমরা মনে করি। কেউ যদি মনে করে এদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে জাতির পিতার ভাস্কর্য স্থাপনের একটি সুষ্ঠু সুরাহা হবে, তাহলে তারা মূর্খ ও বোকার স্বর্গে বাস করছেন বলে আমরা ধরে নেব।

বিশ্বনেতা-রাষ্ট্রনায়ক-প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতির উদ্দেশে ভাষণে দেশে যেসব পাকিস্থানপন্থি সেবাদাস, পাকিস্থানের দোসর ধর্মকে রাজনীতির হাতিয়ার করে অপকর্ম করে বেড়াচ্ছে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। আমি মনে করি, এযাবতকালে প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনার এই অবস্থান বাংলাদেশকে বাঙালি জাতিকে সামনের পানে এগিয়ে নিতে বেশ সহায়তা করবে। তার এই ভাষণের মাধ্যমে গোটা বাঙালি জাতি সঠিক নির্দেশনা পেয়ে গেছে। এবার তারা আর কোনোভাবেই হেফাজতে ইসলাম, জামায়াতে ইসলাম এবং অন্যান্য ধর্মব্যবসায়ী দলগুলোর অপকর্ম করার সুযোগ দেখবে না এবং এও জোর দিয়ে বলা যায়, বিএনপি আদতে জামায়াতের ছদ্মবেশ ধরে আছে। এটা হয়তো অনেকেই বুঝতে সক্ষম নন। জামায়াতের ছদ্মবেশে বিএনপি মুখে মুক্তিযুদ্ধের কথা বললেও শতভাগ মুক্তিযুদ্ধের চেনতাবিরোধী কাজ করে আসছে শুরু থেকেই। বিএনপি রাষ্ট্রক্ষমতায় থাকা অবস্থায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু এবং আওয়ামী লীগের নাম-নিশানা মুছে ফেলার অপ্রয়াস চালিয়েছে। একাত্তরের ঘাতক জামায়াতকে দুধ-কলা খাইয়ে পুষ্ট করেছে। টানা ক-বছর রাষ্ট্রক্ষমতার বাইরে থেকে বিএনপি পাগলপারা হয়ে পড়েছে। বাংলাদেশের হৃদয় ক্ষত-বিক্ষত করে বিএনপি-জামায়াত ফের রাষ্ট্রক্ষমতায় যাবার স্বপ্নে বিভোর। বস্তুত:জাতির উদ্দেশে বিশ্বনেতা-রাষ্ট্রনায়ক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যথার্থ বক্তব্য রেখেছেন। তিনি বলেছেন, ‘একাত্তরের পরাজিত শক্তির একটি অংশ মিথ্যা, বানোয়াট ও মনগড়া বক্তব্য দিয়ে সাধারণ ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের বিভ্রান্ত করতে ইদানিং মাঠে নেমেছে। সমাজে অশান্তি সৃষ্টি করতে চাচ্ছে। জাতির পিতা ১৯৭২ সালে বলেছিলেন, ধর্মকে রাজনীতির হাতিয়ার না করতে। কিন্তু পরাজিত শক্তির দোসররা দেশকে আবার ৫০ বছর আগের অবস্থায় ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার স্বপ্ন দেখছে।

রাজনৈতিক মদদে সরকারকে ভ্রুকুটি দেখানোর ধৃষ্টতা পর্যন্ত দেখাচ্ছে। বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। মুসলমান, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান- সব ধর্ম-বর্ণের মানুষের রক্তের বিনিময়ে এদেশ স্বাধীন হয়েছে। এ বাংলাদেশ লালন শাহ, রবীন্দ্রনাথ, কাজী নজরুল, জীবনানন্দের বাংলাদেশ। এ বাংলাদেশ শাহজালাল, শাহ পরাণ, শাহ মখদুম, খানজাহান আলীর বাংলাদেশ। এই বাংলাদেশ শেখ মুজিবের বাংলাদেশ; সাড়ে ষোলো কোটি বাঙালির বাংলাদেশ। এদেশ সবার। এদেশে ধর্মের নামে কোনো বিভেদ-বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে আমরা দেব না।’ পরিশেষে বলা প্রয়োজন, গোটা বাঙালি জাতিকে ঐক্যবদ্ধভাবে দেশে অপশক্তি হায়েনা-দানবদের রুখে দিতে হবে। এরা যেন এদের বিষদাঁত দিয়ে দেশকে কামড়ে দিতে না পারে। এদের আস্ফালনের জবাব হতে হবে ভয়ানক। ধর্মব্যবসায়ী এসব পাপিষ্ট হায়েনা-দানবরা পাকিস্তানের চর। এদের ঠাঁই কি করে বাংলাদেশে হয়, সেটাও আমরা ভেবে পাই না। তবে বিজয়ের দিনে  সর্বাধিক উচ্চারিত সেøাগান, বিজয় দিবসের অঙ্গীকার রুখবো এবার মৌলবাদ।



« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
https://www.dailyvorerpata.com/ad/BHousing_Investment_Press_6colX6in20200324140555 (1).jpg
https://www.dailyvorerpata.com/ad/last (2).gif
https://www.dailyvorerpata.com/ad/431205536-ezgif.com-optimize.gif
https://www.dailyvorerpata.com/ad/agrani.gif
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ


সম্পাদক ও প্রকাশক: ড. কাজী এরতেজা হাসান
সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
সাউথ ওয়েস্টার্ন মিডিয়া গ্রুপ


©ডেইলি ভোরের পাতা ডটকম


©ডেইলি ভোরের পাতা ডটকম

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : ৯৩ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫।
ফোন:৮৮-০২-৪১০১০০৮৭, ৪১০১০০৮৬, বিজ্ঞাপন বিভাগ: ৪১০১০০৮৪, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৪১০১০০৮৫
অনলাইন ইমেইল: [email protected] বার্তা ইমেইল:[email protected] বিজ্ঞাপন ইমেইল:[email protected]