ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস বিএনপিকে উদ্দেশ্য করে বলেছেন, মেধা-বুদ্ধি তো একদম নাই তোমাদের। ছাগলের তিন নাম্বার বাচ্চার মতো ফালাইতে থাকো। শেখ হাসিনারে বুঝতে চেষ্টা করো, মেধা খাটাও, বুদ্ধি খাটাও। ওই লন্ডন থেকে ওহি নাযিল হলে বুদ্ধি-মেধা থাকে না। আর গৃহযুদ্ধের কথা আমাদের বলো না।’
বুধবার (১৬ ডিসেম্বর) বিকেলে নগর ভবনের মেয়র হানিফ অডিটোরিয়ামে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন আয়োজিত ৪৯তম বিজয় দিবসের আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে এসব কথা বলেন বলে তিনি।
মেয়র তাপস বলেন, ছাগলের দুই বাচ্চা মায়ের দুধ খায়, আর না বুইঝা তিন নাম্বার বাচ্চা খালি ফালায়। কি বলে- দেশে নাকি গৃহযুদ্ধ! আরে তুই ব্যাটা সংস্কারবাদী, তুই কস গৃহযুদ্ধ! তোর কথায় গৃহযুদ্ধ হইব? শেখ হাসিনারে দুর্বল মনে করছ? আরে, ৮১ সাল থেকে সংগ্রাম কইরা কইরা দেশটারে আজকে এই জায়গায় নিয়ে আসছে। কত কিছু হইল? জঙ্গিবাদ সৃষ্টি করলা, নিশ্চিহ্ন করে দিছি জঙ্গিবাদ, নাই বাংলাদেশের মাটিতে আর জঙ্গিবাদ। ৪০ বছর পর যুদ্ধাপরাধীদের টাইনা নিয়া আইসা ফাঁসিতে লটকাইছে, এটার নাম হলো শেখ হাসিনা।
মেয়র বলেন, তোমার নেত্রীকে এখন পর্যন্ত বের করতে পারো না, একটা উচ্চারণ করো না তোমার নেত্রীর ব্যাপারে। আর তুমি আমারে গৃহযুদ্ধের ভয় দেখাও? আমরা কি চুড়ি পরে আছি নাকি? শেখ হাসিনা তো গণতন্ত্র ও সংবিধান সমুন্নত রাখতে সব হজম করছে, সহ্য করছে। কারণ সে জাতির পিতার কন্যা। সংবিধান এবং গণতন্ত্রের বাইরে যায় নাই, নয় মাস জেল খাটছে নিজে- শুধুমাত্র গণতন্ত্রকে পুনরুদ্ধার করার জন্য।
ডিএসসিসি মেয়র ব্যারিস্টার শেখ তাপস আরও বলেন, তোমরা ২১ আগস্ট ঘটাইছিলা। পরের দিন তো ভাবছিলা- তোমরা পইরা যাবা, শেখ হাসিনা পাইতে দেয় নাই। ভাবতে থাকো ২০০৬ আসবে, ২০০৮ আসবে। এই হলো শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, চুপ কইরা সহ্য করি বইলা দুর্বল ভাইবো না। শান্তিকামী বাঙালি এক ৭ই মার্চের ভাষণে সশস্ত্রবাহিনী হয়ে গেছে, গেরিলা যুদ্ধ করছে। আমাদের বাপ গেরিলা যুদ্ধ করেছে, রণাঙ্গনে। মুক্তিযোদ্ধা সংগঠন করছে, ট্রেনিং দিছে, নিজে রণাঙ্গনে যুদ্ধ করছে। সুতরাং আমাদেরকে দুর্বল ভাইবো না। চুপ কইরা বইসা থাকি, সহ্য করি। শুধু দেশের বৃহত্তর স্বার্থে, সংবিধানের স্বার্থ, গণতন্ত্রের স্বার্থে।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাঙার প্রসঙ্গে ডিএসসিসি মেয়র বলেন, জিগাইলাম, ভাস্কর্য ভাঙছো, কেন ভাঙছো ভাই? বলে - ইসলাম। আরে ভাই, ইসলাম কি তোমার একার? মুসলমান কি তুমি একা? খৎনা কি তোমার একার হইছে, আমার হয় নাই? আরে, তোমার বাপ তোমারে পিটাইয়া মাদ্রাসায় পাঠাইছে আর আমি ঘরে বইসা আলিফ, বা, তা, ছা, জিম, হা শিখছি। তোমারে জোর করছে বইলা তুমি শিখছ। আর আমি স্বইচ্ছায় শিখছি। তো তুমি আমার চাইতে বড় মুসলমান কোথা থেকে হইলা?
তাপস বলেন, আমি তিনটা ভাষা শিখছি - বাংলা, ইংরেজি, আরবি- স্বইচ্ছায়। তুমি তো শিখছো পিঠান খাইয়া। তাইলে তুমি বড় মুসলমান হইলা কিভাবে? কথায় কথায় তারা ইসলামের কথা কয়। আরে, একটা আকাম করবে তারপর হাদিস আর কোরআন নিয়া আসবে। হাদিস আর কোরআন কি তুমি একা পড়ছ? তুমি না হয় কয়েকটা আয়াত মুখস্ত করছ। আর কোরআন শরীফ আমিও কয়েক দফা পড়ছি- তেলাওয়াত শেষ করছি, অর্থ শেষ করছি, তরজমা শেষ করছি। হ্যাঁ মুখস্ত করিনি। তুমি মুখস্থ করছ, তোমারে পিটাইয়া মুখস্ত করাইছে। কইতে থাকবি, কইতেই থাকবি, তোতাপাখির মতো কইতে থাকবি। নাইলে তোরে বেত দিয়া পিটামু, কান ধইরা উঠবস করামু।’
মেয়র বলেন, তুমি মাইরের ভয়ে মুখস্থ করছ,আর আমি সারা বিশ্বের সব কিছু শেখার জন্য তোমার মত মুখস্ত করি নাই। এই মুখস্ত শিক্ষার জন্য, পড়ার জন্য তুমি আমার চাইতে বড় মুসলমান হয়ে যাবা, আলেম হয়ে যাবা, এটা হলো? আমার পরিবারের দুজন আধ্যাত্বিক ব্যক্তি এই ভূখন্ডের পদার্পণ করেছিলেন। ইসলামের জন্য, ইসলামের প্রচারের জন্য এই ভূখণ্ডে আসছিলেন। আমার পরদাদা দরবেশ শেখ আব্দুল আউয়াল। ইসলামের জন্য জীবন দিয়ে চলে গেছেন। শেখ বোরহান উদ্দিন, তিনি ছিলেন বিজ্ঞ আলেম, ফরিদপুর এলাকায় আধ্যাত্মিক জগতের স্বনামধন্য আলেমদের একজন। আর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর যদি ঐশ্বরিক ক্ষমতা না থাকতো তাহলে জাতিকে স্বাধীনতা দিতে পারত না। আর দুই আয়াত মুখস্ত কইরা তুমি হইয়া গেলা বড় আলেম! বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাঙো?