শনিবার ২৩ নভেম্বর ২০২৪ ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

শিরোনাম: স্কুলে ভর্তির আবেদন শুরু আজ   স্কুলে ভর্তির আবেদন শুরু আজ   স্কুলে ভর্তির আবেদন শুরু আজ   ফিল্ম সিটি থেকে বাদ দেওয়া হচ্ছে ‘বঙ্গবন্ধুর’ নাম   সিলেটের সাবেক সংসদ সদস্য ইয়াহিয়া গ্রেপ্তার   অনন্য অসাধারণ শেখ হাসিনা আমাদের গর্ব   নরসিংদীতে ‘থার্টি ফার্স্ট’ উপলক্ষে চাঁদা না দেয়ায় ব্যবসায়ীকে কোপালো সন্ত্রাসীরা   
https://www.dailyvorerpata.com/ad/Inner Body.gif
বঙ্গবন্ধুর একখানা সহানুভূতি পত্রছাড়া স্বাধীনতার ৪৯ বছরেও মেলেনি রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি!
মোহাম্মদ শফিক, কক্সবাজার জেলা প্রতিনিধি
প্রকাশ: মঙ্গলবার, ১৫ ডিসেম্বর, ২০২০, ১১:৩৮ পিএম আপডেট: ১৫.১২.২০২০ ১১:৪৫ পিএম | অনলাইন সংস্করণ

স্বাধীনতার ৪৯ বছরেও রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি পাননি বীরাঙ্গনা আলমাছ খাতুন। তিনি কক্সবাজার শহরের নতুন বাহারছড়ার তৎকালীন পাকবাহিনীর হাতে প্রথম শহীদ হওয়া মুক্তিযোদ্ধা ডা.কবির আহম্মদের স্ত্রী। তাকে নিয়ে টেলিভিশন পত্র-পত্রিকাসহ বিভিন্ন মিডিয়া মাধ্যমে ঢালাউভাবে প্রতিবেদন প্রকাশ হলেও মহান মৃক্তিযুদ্ধে নিজের পরিবারের আতœদানের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি মিলেনি এখনো। শুধু মাত্র দেশ স্বাধীন হওয়ার পর তৎকালীন বঙ্গবন্ধুর দেওয়া একখানা সহানুভূতি পত্র ও একটি চেক পেয়েছেন তিনি। তবে বিষয়টি কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের নজরে আসলে, শহীদ পরিবারটির পুর্ণবাসন করার প্রতিশ্রæতি দেন। কিন্তু এখনো তা ফলপ্রসূ হয়নি। পায়নি মহিলা মুক্তিযোদ্ধা (বীরাঙ্গনা) রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি এবং সরকারি সুযোগ-সুবিধা। যদিও বা সরাকার ঘোষণা দিয়েছে মুজিব বর্ষে কেউ ভূমিহীন-গৃহহীন থাকবে না। মানুষের জন্য মানীয় প্রধানমন্ত্রীর এ অনন্য উদ্যোগ।   

বীরাঙ্গনা আলমাছের সাথে কথা বলে জানা যায়, তাঁর স্বামী ডা. কবির আহম্মদ ছিলেন বঙ্গবন্ধু পাগল ও মুক্তিযুদ্ধের একজন নিভৃতচারী সৈনিক ছিলেন তিনি। বঙ্গবন্ধুর ছবি যুক্ত কবিরাজি ঔষধ বিক্রি করে সংসার চালাতেন তিনি। এ কারণে তাঁর প্রতি ক্ষুদ্ধ ছিল স্থানীয় কিছু রাজাকার। এরই ধারাবাহিকতায় রাজাকারদের প্ররোচনায় ১৯৭১ সালের ১২ মে শুক্রবার  বিকালে রিক্সসা যোগে বাসায় যাওয়ার পথিমধ্যে পাকবাহিনীরা ধরে নিয়ে তাকে নির্মমভাবে হত্যা করে, বর্তমান কক্সবাজার শহরের পুরোনো সিভিল রেস্টহাউস পাকিস্তানি ক্যাম্পে। পরে খবর পেয়ে ৪ বছর বয়সী শাহেনা আকতার ও ৯ মাসের ছেলে নাছির উদ্দিনকে নিয়ে ছুটে যান, কক্সবাজার শহরের পুরোনো সিভিল রেস্টহাউস পাকিস্তানি ক্যাম্পে। সেখানে স্বামীর সাথে কথা বলার তো দূরের কথা! লাশটাও দেখতে দেয়নি হানাদার বাহিনী। বরং সশস্ত্র রাজাকারদলের নৃশংসতা ও পাশবিক নির্যাতনের শিকার হন তিনি। পরে তাদের হাতে-পায়ে ধরে কৌশলে নিজের জীবন ভিক্ষা পেলেও, বাঁচাতে পারেনি স্বামীর জীবন। ঐদিন স্বামীকে নির্মমভাবে হত্যা করে পাকবাহিনীরা।

এর মধ্যেই স্বাধীন হয়ে যায় দেশ। পঁচাত্তরের পর আবার বিজয়ের বেশে এলাকায় ফিরে দালাল রাজাকাররা। একাত্তরের নির্মমতার কথা স্মরণ করে আলমাছ খাতুন চুপসে যান। শুরু হয় তাঁর নতুন জীবন সংগ্রাম। প্রতিবেশিদের সহায়তায় স্বাধীন দেশে স্বামীর স্মৃতি নিয়ে বাঁচতে খুপরিঘর করে বসবাস করেন। স্বামীকে হারানোর শোকে বহুবছর পাগল হয়ে গিয়েছিলেন তিনি। সেই থেকে স্বামী হারানোর পর আয়ের আর কোনও ব্যবস্থা না থাকায় অনাহারে অর্ধাহারে জীবন কাটছে তাঁর। ছেলে-মেয়ে থাকলেও খোঁজ খবর রাখেনা।  তাই বেঁচে থাকার তাগিদে ৭১ বছর বয়সেও এখনো অসুস্থ শরির নিয়ে ঝিনুক বিক্রি করে তার সংসার। বর্তমানে অসুস্থ রয়েছেন আলমাছ খাতুন। অর্থাভাবে চিকিৎসা করানো কঠিন হচ্ছে তার। 

তিনি আরো জনান, তখন বঙ্গবন্ধর দেওয়া একখানা সমবেদনা পত্র আর অনুদানের ২হাজার টাকার একটি চেক  (যার নং ০০৫৯৩৪) ছাড়া ৪৯ বছরেও কিছু পাননি। শধুমাত্র  বঙ্গবন্ধু’র দেওয়া সেই সমবেদনা পত্রটা ছাড়া আর কিছু নেই। ভাঙ্গা কুঁড়েঘরে অনাহারে অর্ধাহারে দিন কাটছে তাঁর।  এখনো পর্যন্ত সোনার হরিনের মতো সংরক্ষন করে রেখেছেন সেই পত্রটি। বহুবার স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাদের দ্বারস্থ হয়েছিলেন তিনি। তাঁরা স্বীকৃতি ও সবধরনের সরকারি সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার আশ^াস দিলেও আজা-কাল কালক্ষেপণ করে এখনো রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি মিলেনি। অন্তত মৃত্যুর আগে হলেও শহীদ পরিবারের মর্যদা এবং স্বামী স্বাধীনতা বিরোধী, রাজাকার ও তাদের দুসরদের ধারাবাহিকভাবে বিচার হবে বাংলার মাটিতে, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছেই সেটাই তাঁর প্রত্যাশা।

কক্সবাজার মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব মো: আলী জানান, বীরাঙ্গনা আলমাছ খাতুন এর স্বামী শহীদ ডা. কবির আহম্মদ ছিলেন বঙ্গবন্ধু পাগল একজন মানুষ। বঙ্গবন্ধুর ছবি যুক্ত ঔষধ বিক্রি করে সংসার চালাতেন তিনি। এ কারণে তাঁর প্রতি ক্ষুদ্ধ ছিল স্থানীয় কিছু রাজাকার। এরই ধারাবাহিকতায় একপর্যায়ে ওসব রাজাকারদের প্ররোচনায় ১৯৭১ সালের (১২ মে) শুক্রবার রিক্সসা যোগে বাসায় যাওয়ার পথিমধ্যে পাকাহিনী তাকে ধরে নিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করে বর্তমান কক্সবাজার শহরের পুরোনো সিভিল রেস্টহাউস পাকিস্তানি ক্যাম্পে। পরে তাঁর স্ত্রী আলমাছ খাতুন স্বামীকে উদ্ধার করতে গেলে তাকেও পাশপিক নির্যাতন করে পাকবাহিনী। আলমাছ খাতুন যেন, মহিলা মুক্তিযোদ্ধা (বীরঙ্গনা) ও শহীদ পরিবার হিসেবে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি পান স্থানীয় প্রশাসনের কাছে অনুরোধ জানান তিনি। 

এব্যাপারে কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মো: কামাল হোসেন বলেন, “বীর মুক্তিযোদ্ধা ও  শহীদ পরিবারের জন্য সরকার সবধরনের সুযোগ-সুবিধা দিচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় তৎকালিন পাকবিহিনীর হাতে প্রথম শহীদ হওয়া ডা. কবির আহম্মদ এর স্ত্রী আলমাছ খাতুনকে পুর্নবাসন করা হবে। পাশাপাশি যাচাই-বাছাইয়ের মাধ্যমে যেন রাষ্ট্রীয় স্বৃকীতি পায় বিষয়টিও দেখা হবে।



« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
https://www.dailyvorerpata.com/ad/BHousing_Investment_Press_6colX6in20200324140555 (1).jpg
https://www.dailyvorerpata.com/ad/last (2).gif
https://www.dailyvorerpata.com/ad/431205536-ezgif.com-optimize.gif
https://www.dailyvorerpata.com/ad/agrani.gif
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ


সম্পাদক ও প্রকাশক: ড. কাজী এরতেজা হাসান
সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
সাউথ ওয়েস্টার্ন মিডিয়া গ্রুপ


©ডেইলি ভোরের পাতা ডটকম


©ডেইলি ভোরের পাতা ডটকম

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : ৯৩ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫।
ফোন:৮৮-০২-৪১০১০০৮৭, ৪১০১০০৮৬, বিজ্ঞাপন বিভাগ: ৪১০১০০৮৪, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৪১০১০০৮৫
অনলাইন ইমেইল: [email protected] বার্তা ইমেইল:[email protected] বিজ্ঞাপন ইমেইল:[email protected]