প্রকাশ: মঙ্গলবার, ১৫ ডিসেম্বর, ২০২০, ১০:৫৭ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনের দ্বারপ্রান্তে দেশ। ইতিহাসের এমনই এক সন্ধিক্ষণে উপনীত এবারের বিজয় দিবস। দিবসটির প্রাসঙ্গিকতায় যুক্ত হয়েছে নানা মাত্রা, নানা তাৎপর্য। এবারের বিজয় দিবসে আমাদের নতুন বিজয়ের অহংকার স্বপ্নের পদ্মা সেতু। এক থেকে একচল্লিশ নম্বর স্প্যান বিজয়ের গর্বের ইতিহাস। বিজয় দিবসের প্রতিটি দিনই বাঙালির বীরত্বের পরিচয় বহন করে। দৈনিক ভোরের পাতার নিয়মিত আয়োজন ভোরের পাতা সংলাপের ১৮৯তম পর্বে এসব কথা বলেন আলোচকরা।
মঙ্গলবার (১৫ নভেম্বর) আলোচক হিসাবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সাবেক ছাত্রনেতা আফজালুর রহমান বাবু, বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের প্রচার সম্পাদক, বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জয়দেব নন্দী, নেদারল্যান্ডস আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুরাদ খান। দৈনিক ভোরের পাতা সম্পাদক ও প্রকাশক ড. কাজী এরতেজা হাসানের পরিকল্পনা ও নির্দেশনায় অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন সাবেক তথ্য সচিব নাসির উদ্দিন আহমেদ।
জয়দেব নন্দী বলেন, ঠিক যে মুহূর্তে এই বিজয়ের উল্লাসে আমরা মাততে যাচ্ছি, ঠিক সেই মুহূর্তে আমরা একটা বিশেষ সন্ধিক্ষণে আছি। এই বিশেষ সন্ধিক্ষণ বলতে আমি বুঝাতে চাচ্ছি, একদিকে শুভ আরেকদিকে অশুভ। শুভ দিক হচ্ছে স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী পালন করছি, আরেকদিকে আমাদের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী আমাদের একেবারেই দৌরগোঁড়ায়। পাশাপাশি আমরা যেই মুহূর্তে বিজয় দিবস উদযাপন করতে যাচ্ছি ঠিক সে সময় রাজাকার, আল-বদর, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার আমাদের জাতির জনকের কন্যা শেখ হাসিনা তার শাসনামলে করেছেন। আমি নিজেকে এই প্রজন্মের একজন হিসেবে বিশ্বাস করি, কেননা যত অন্ধকারাছন্ন আসুক না কেন, আমার পূর্ব প্রজন্ম যারা নয় মাস তাদের রক্ত ও আত্মত্যাগ দিয়ে এই দেশটাকে স্বাধীন করেছে তাদেরই রক্তের স্রোতধারা আমাদের রক্তের মধ্যে বইছে। বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নিছক ভাস্কর্য নয়, বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য গোটা বাংলাদেশের প্রতিচ্ছবি, বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ৫৬ হাজার বর্গমাইলের প্রতিচ্ছবি, বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য আমাদের লাল-সবুজের প্রতিচ্ছবি। বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যের বিরোধিতা করে তারা আমাদের অস্তিত্বে আঘাত করেছে। গর্তের ভেতর থেকে তারা আস্ফালন করছে। আমরা বসে থাকেতে পারি না। আসুন অমরা এই মৌলবাদী অপশক্তিকে রুখে দাঁড়াই। আমরা সকল প্রতিবন্ধকতা দূর করে দুর্বার গতিতে এগিয়ে যাবো। এই যে সমসাময়িক সময়ে মুক্তিযুদ্ধের বিরোধী শক্তিরা একটি ধ্রুমজাল সৃষ্টি করছে। আমরা পূর্বজ, মধ্যজ ও অগ্রজ একসাথে হয়ে আমাদের এই অন্ধকার মুহূর্তটিকে এক সাথে মোকাবিলা করতে হবে। ধর্মান্ধতা কোনো পবিত্র ধর্মেরই পোষকতা করে না। তা ধর্মের নাম ভাঙিয়ে অন্য ধর্ম ও মতের মানুষের ওপর নিষ্ঠুর নির্যাতন চালনোর হাতিয়ার। সাধারণ ফ্যাসিবাদের চাইতেও ধর্মান্ধ ফ্যাসিবাদ মানবতার আরো বড় শত্রু। প্রতিটা মুহূর্তে আমাদের এই অন্ধকারাছন্ন মুহূর্তটিকে মোকাবেলা করার জন্য মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে সামনে রেখে আগাতে হবে। আজকে এই দিনে আমি আরও বলতে চাই এইযে বছরের শুরুর দিকে মহামান্য হাইকোর্ট একটি আদেশ জারি করেছে যে, জাতীয় দিবসগুলোয় উপযুক্ত ক্ষেত্রে সাংবিধানিক পদাধিকারী ও রাষ্ট্রীয় সব কর্মকর্তা সরকারি অনুষ্ঠানে বক্তব্য শেষে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান যাতে উচ্চারণ করেন, সে জন্য বিবাদীরা যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন। এটা কি আমরা সব জায়গায় করতে পেরেছি। নিজের নৈতিকতা থেকে সবাইকে এই ‘জয় বাংলা’ স্লোগানের পূর্ণ অর্থ নিজের মধ্যে ধারণ করে সব জায়গায় পৌঁছে দিতে হবে।