গতকাল সোমবার বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি কাপের প্রথম এলিমিনেটর ম্যাচে ফরচুন বরিশালকে ৯ রানে হারিয়ে ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে টিকে থাকল বেক্সিমকো ঢাকা। ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে আজ মঙ্গলবার বিকাল সাড়ে চারটায় প্রথম কোয়ালিফায়ার ম্যাচে পরাজিত দলের মুখোমুখি হবে ঢাকা। গতকাল মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ম্যাচটিতে ঢাকার দেওয়া ১৫১ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৯ উইকেটে ১৪১ রান সংগ্রহ করে বরিশাল। দলের পক্ষে হাফ সেঞ্চুরি করেন আফিফ হোসেন। ৩৫ বলে ৫৫ করে আউট হন তিনি।
ঢাকার বোলারদের মধ্যে ২ ওভারে ১৮ রান দিয়ে তিনটি উইকেট নেন মুক্তার আলী। ৩৯ রান দিয়ে ৩ উইকেট নেন শফিকুল ইসলাম। এছাড়া আল-আমিন ২টি ও রবিউল ইসলাম রবি ১টি করে উইকেট ঝুলিতে পোরেন। জবাব দিতে নেমে ভালো শুরু করতে পারেনি বরিশাল। দলীয় ২১ রানে সাইফ ও ২৭ রানে পারভেজ হোসেন ইমন আউট হলে চাপে পড়ে যায় তারা। অধিনায়ক তামিম ইকবাল উইকেটে টিকে থাকলেও চালিয়ে খেলতে পারেননি। ২৮ বলে ২২ রান করে দলীয় ৫৯ রানে আকবর আলীর হাতে ক্যাচ দেন তামিম। এমন চাপের মুখে দলের হাল ধরেন আফিফ হোসেন। কিন্তু অপর প্রান্তে ভালো সঙ্গী পাননি তিনি। ব্যক্তিগত হাফ সেঞ্চুরি পূরণ করার পর বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি আফিফ। শেষ দিকে ৮ বলে ১৫ রান করে আউট হন মহিদুল ইসলাম অঙ্কন। ১০ বলে ১৫ করেন মিরাজ। এর আগে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৮ উইকেটে ১৫০ রান সংগ্রহ করে ঢাকা। দলের পক্ষে ইয়াসির আলী হাফ সেঞ্চুরি করেন। ৪৩ বলে ৫৪ করে আউট হন তিনি। ৩০ বলে ৪৩ করেন অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম। ৯ বলে ২১ করেন আকবর আলী। বরিশালের বোলারদের মধ্যে মেহেদী হাসান মিরাজ ২টি, কামরুল ইসলাম রাব্বী ২টি, সোহরাওয়ার্দী শুভ ১টি ও তাসকিন আহমেদ ১টি করে উইকেট শিকার করেন।
ঢাকা ব্যাটিংয়ে নেমে দলীয় ২২ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে বিপাকে পড়ে। গত ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান নাঈম শেখ ফেরেন ১১ বলে ৫ রান করে। ওয়ানডাউনে নেমে ২ বলে শূন্য করে আউট হন আল-আমিন। ওপেনার সাব্বির আউট হন ১৪ বলে ৮ রান করে। এরপর দলের হাল ধরেন মুশফিক ও ইয়াসির। দুজনে মিলে ৫০ রানের জুটি গড়েন। দলীয় ৭২ রানে বোলার রাব্বীর হাতেই ক্যাচ হন মুশফিক। পরে আকবর আলী নেমে ছোট্ট ঝড় তুলে দলের রান খানিকটা বাড়িয়ে দেন। ২০তম ওভারে তিনটি উইকেট হারায় ঢাকা। রাব্বীর করা ওভারের প্রথম বলে এলবিডব্লিউ হন ইয়াসির। পঞ্চম ও ষষ্ঠ বলে রান আউট হন যথাক্রমে রবি ও নাসুম।
সংক্ষিপ্ত স্কোর :বেক্সিমকো ঢাকা ইনিংস: ১৫০/৮ (২০ ওভার) : (নাঈম শেখ ৫, সাব্বির ৮, আল-আমিন ০, মুশফিক ৪৩, ইয়াসির ৫৪, আকবর ২১, মুক্তার ৬*, রবি ৫, নাসুম ১; তাসকিন ১/২১, মিরাজ ২/২৩, সুমন ০/৩৩, সোহরাওয়ার্দী ১/৩২, কামরুল ২/৪০)। ফরচুন বরিশাল: ১৪১/৯ (২০ ওভার):(তামিম ২২, সাইফ হাসান ১২, পারভেজ ২, আফিফ ৫৫, হৃদয় ১২, সোহরাওয়ার্দী ০, অঙ্কন ১৫, মিরাজ ১৫, সুমন ৫, তাসকিন ০*; নাসুম ০/২৫, রুবেল ০/২২, শফিকুল ৩/৩৯, রবি ১/১৫, আল-আমিন ২/২২, মুক্তার ৩/১৮)। ফল: ৯ রানে জয়ী বেক্সিমকো ঢাকা। প্লেয়ার অব দ্য ম্যাচ: ইয়াসির আলী (বেক্সিমকো ঢাকা)।
এদিকে দিনের দ্বিতীয় ম্যাচে গাজী গ্রুপ চট্টগ্রামের সামনে পাহাড় সম রানেরচ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেয় জেমকন খুলনা। তারা ২০ ওভারে ২১০ রান করে। জবাব দিতে নেমে গাজী গ্রুপ চট্টগ্রাম সব উইকেট হারিয়ে ১৯.৪ ওভারে সংগ্রহ করে ১৬৩ রান। ফলে ৪৭ রানের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে জেমকন খুলনা। খুলনার পক্ষে সর্বোচ্চ রান মোহাম্মদ মিথুনের। তিনি ৩৫ বলে ৫৩ রান করেন। তবে এদিন হাসেনি নিয়মিত ভালো খেলে আসা লিটন দাসের ব্যাট। আবার গত ম্যাচে ভালো করা সৌম্য এদিন কোন রান না করেই প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন। তবে চট্টগ্রামের সব আশা শেষ হয়ে যায়নি। ্তাদের ফাইনালে খেলতে হলে আজ ফরচুন বরিশালকে হারাতে হবে। তবে বুড়ো হাড়ে ভেল্কি দেখিয়েছেন জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা। তিনি একাই নিয়েছেন ৪ ওভার বল করে ৩৫ রানের বিনিময়ে ৫ উইকেট। স্কোর: জেমকন খুলনা ২০ ওভারে ৭ উইকেটে ২১০। গাজীগ্রুপ চট্টগ্রাম: ১৯.৪ ওভারে সবকটি উইকেট খুইয়ে ১৬৩। ফলাফল : ৪৭ রানে জেমকন খুলনার জয়।